আল-কায়েদা নেতা হারালেও সংখ্যায় বাড়ছে


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 10-08-2022

আল-কায়েদা নেতা হারালেও সংখ্যায় বাড়ছে

সন্ত্রাসের দিক থেকে আইসিস (ইসলামিক স্টেট) থেকেও ভয়ঙ্কর আল-কায়েদা। আল-কায়েদার সন্ত্রাসের ধারে কিনারায় কেউ নেই। যেমন ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালের বিশ্ব কাঁপানো পরিকল্পনা আলকায়দার সংগঠিত। এই পরিকল্পনার একজন আইমন আর জাওয়াহিরি। সম্প্রতি ড্রোন থেকে বিশেষ কায়দায় মিসাইল আক্রমণে ফালাফালা হয়ে যায় জাওয়াহিরির শরীর। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় তার দেহ। কোনো শব্দ নেই, অন্য কারো ক্ষতি হয়নি শুধু জাওয়াহিরি নেই। আল-কায়েদার ৮ জন শীর্ষ স্থানীয় নেতা গত তিন বছরে নিহত হয়েছে। জাওয়াহিরির স্থলাভিষিক্ত কে হবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

কিন্তু আল-কায়দা এখন অনেক দেশে বিস্তৃত। সেপ্টেম্বর ১১, ২০০১ সালে যে পরিমাণ সদস্য ছিল আল-কায়েদার এখন তার সংখ্যা অনেক বেশি। তার শাখা বিস্তৃত হয়েছে। বিশেষ করে সোমালিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকায় সাহেল অঞ্চলে তারা বিভিন্ন দুর্বল রাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের দেশের স্থান দখল করে নিয়ে নতুন অস্ত্রের ওপর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। একযুগ ধরে তাদের নিশ্চিহ্ন ও দুর্বল করার প্রক্রিয়া কোনো প্রকার সুফল বয়ে আনেনি। তারা হয় তা আমেরিকার ৯/১১তে যে ধ্বংস সাধন হয়েছে সে রকম কোনো পরিস্থিতির হয়তো জন্ম দেবে না।

কিন্তু তারা অনেক বেশি মারাত্মক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ। কায়দার সংশ্লিষ্টরা ২০২০ সালে কেনিয়ায় ৩ জন আমেরিকানকে হত্যা করেছে। ফ্লোরিডায় প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক সৌদি অফিসার তিনজন নাবিককে হত্যা করেছে ২০১৯ সালে। এই সৌদি অফিসার নিজে থেকেই এ কাজ করেছে। সে ইয়েমেনে আল-কায়েদার সাথে যুক্ত ছিল, যখন সে তার আক্রমণ পরিকল্পনা চালায়। কিন্তু আফগানিস্তানে জাওয়াহিরির বিচরণ দেখে মনে হয় আল-কায়েদা সেখানেই থাকতে ভালোবাসে। আফগানিস্তানই যেন তাদের জায়গা। আর এখন সেখানে তালেবান রাজত্ব করছে। 

আল-কায়েদা বিশ্বের একমাত্র টেরোরিস্ট বা সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক নয়, যা পরিবর্তিত হচ্ছে। সিরিয়ায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভোরের পূর্বে এক অপারেশন চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আইসিস নেতা আবু ইবরাহিম আল-হাশিমি আল-কুয়াইশীকে হত্যা করেছে। আইসিস যোদ্ধারা ক্রমান্বয়ে গেরিলা আক্রমণ চালানোর ব্যবস্থা করেছে। যারা খেলাফত কায়েম করতে চায় সেই ধর্মীয় গ্রুপকে সিরিয়ার কুর্দীরা ২০১৯ সালে কাবু করে। আইসিস থেকে চোখ আবার আল-কায়েদার দিকে ফিয়ে আসে জাওয়াহিরির মৃত্যুর পর। এতোদিন আল-কায়েদা গোপনে চলে গিয়েছিল। এখন প্রকাশ্যে এসেছে। ইসলামিক স্টেট নামে আল-কায়েদার প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে তাদের প্রভাব কমে যায়।

বিশেষ করে ২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর। এক গোপন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে পূর্ব আফ্রিকায় ১৯৯৮ সালে দুটি আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে বোমা হামলাকারী সিনিয়র কায়েদা নেতা সায়িফ আল-আদেল জাওয়াহিরির স্থলাভিষক্ত হতে পারে। সে এখন ইরানে বসবাস করে বলে বিশ্বাস করা হয়। গত জুলাই মাসে  জাতিসংঘ রিপোর্টে বলা হয় আল-কায়দা বিশ্ব জেহাদের শীর্ষে অবস্থান করছে। আল-কায়দার প্রচার এখন ইসলামিক স্টেটের প্রচারের চাইতে উন্নত।

তারা বিশ্বে হুমকির পরিবেশ অনেক বেশি সৃষ্টি করতে পারে। সরাসরি হুমকি দিতে তাদের কোনো জুড়ি নেই। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি বিচরণ থাকা সত্ত্বেও সেখানে আল-কায়েদার বিস্তার ঘটেছে। তালেবান সরকারে তাদের প্রভাব রয়েছে। জাতিসংঘ রিপোর্টে বলা হয়, তারা আফগানিস্তানে বিশেষ বিচরণের সুযোগ পায়। তাছাড়া সোমালিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা যেমন গিনি, বেনিন ও আইভরি কোস্ট এলাকায় এদের প্রভাব রয়েছে। সিরিয়ায়  আল-কায়েদায় বিস্তৃতি ঘটেছে। ইয়েমেনে তো রয়েছেই। অনেকে বিশ্বাস করে বাংলাদেশেও আল-কায়েদা ও আইসিসের সেল রয়েছে। 



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)