আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী শিয়া-হাজারাদের উত্থান হচ্ছে


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 24-08-2022

আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী শিয়া-হাজারাদের উত্থান হচ্ছে

আফগানিস্তানে রক্তের হোলিখেলার পুনরায় অশনিসঙ্কেত দেখা যাচ্ছে। শিয়া মতাবলম্বীরা সুন্নি তালেবানদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে সংগঠিত হচ্ছে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার লক্ষ্যে। মাওলাত-ই-মাহদী মুজাহিদ তালেবানদের সাথে ছিলেন। কিন্তু তালেবান সরকারে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় মাহদী ও তার অনুসারী শিয়ারা যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়, অবশেষে সম্প্রতি তালেবানদের হাতে মাহদী নিহত হয় বলে জানা যায়।’

৭০ বছরের এক বৃদ্ধ সায়িদ কাশেম ঘোষণা করেছেন, ‘যদি তালেবানরা শিয়াদের নিয়ে সরকার গঠন না করে। যদি তারা শিয়া মুসলিম ও নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না করে, তখন কখনই আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না। যতোদিন শরীরে রক্ত আছে, ততোদিন যুদ্ধ চালিয়ে যাবো।

বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, গত জুন মাসে শর-ই-পুল প্রদেশে শিয়াদের সাথে তালেবানদের শেষ সংঘর্ষ হয়। সেখানে শিয়ারা তালেবানদের অস্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করে। গত ৪০ বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এখনো আফগানিস্তানকে তাড়া করছে। শর-ই-পুল এশিয়ায় তালেবানদের আইন মানছে না। তবে তালেবানরা এসব কাহিনি বলতে চায় না। কারণ তারা দেখায় যে, তারা জনপ্রিয় সরকার। কিন্তু এসব কাহিনি ছড়ালে তাদের জনপ্রিয়তা প্রশ্নবোধক হতে পারে।শিয়া মিলিশিয়ারা এখনো কোনো বিদেশের সাহায্য পাচ্ছে না। তাদের অর্থ জোগান তেমন নেই। কোনো প্রধান বিদেশি শক্তির কাছ থেকে তারা কোনো সাহায্য পাচ্ছে না। 

তালেবানরা যদি জানে, তাহলে তারা যে কোনো ধরনের নির্দয় অত্যাচারে জর্জরিত করেন, তাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে থাকেন। তালেবান সৈন্যরা কঠোর হস্তে যেসব যোদ্ধাদের ধরে আনা হয়, তাদের কতল করে। যে সকল আশপাশের বসতি স্থাপনকারী রয়েছেন, তাদের অত্যাচার করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এসব তদন্তের কাজ করেছে। গত জুন মাসের এক সকালে মাহদী তার কয়েকজন উপদেষ্টা নিয়ে বাল্ক অব সেন্টারে বসেন এবং নগরীর উৎকণ্ঠিত পরিবেশ লক্ষ করেন। ইতিপূর্বে মাহদী উত্তর আফগানিস্তানের একটি অংশ দখলে নেন।

এরপর তালেবান ফোর্সরা চারিদিকে নিজেদের অবস্থান বাড়াতে থাকে। ডিস্ট্রিক্টে ৪০ হাজার বাসিন্দা হচ্ছে হাজারা সম্প্রদায়ের। তারা অধিকাংশ শিয়া মুসলিম। তাদের তালেবানরা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে বিশ্বাসী মনে করে এবং তাদের শাসনের শুরুতে হাজার হাজার হাজারাকে ধ্বংস করে। একসময় তালেবানরা মাহদীকে তাদের প্রচারণায় ব্যবহার করেছে। তারা তখন দেখিয়েছে সর্বস্তরের লোক নিয়ে তারা চলছে। কিন্তু আসলে তাকে দেখিয়ে জনমনে ভুল ইমপ্রেশন সৃষ্টি করা হয় যে, তারা সবাইকে নিয়ে চলছে। তালেবানরা ক্ষমতা নেয়ার পর মাহদী তাদের সাথে সম্পর্কোচ্ছেদ করেন।

অধিকাংশ লোক বলে মাহদী তালেবানদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয় বালক আইনের প্রসিদ্ধ কোনো আইনের রাজস্ব নিয়ে মতবিরোধের কারণে। মাহদী বলেন, যেভাবে হাজারাদের সাথে ব্যবহার করা হয়েছে তার প্রতিবাদে তিনি তালেবানদের ছেড়েছেন। তিনি বলেন, তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর হাজারা সম্প্রদায় সবচেয়ে নিগৃহীত হয়েছে। তারা সারাজীবন এভাবে কাটাতে পারে না। তিনি বলেন, একদিন মানুষ ইসলামিক আমিরাতের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। 

জনগণ সেখানে বলেন, তালেবানদের অবশ্যই শিয়া ও হাজেরা সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দিতে হবে। নচেৎ তারা তালেবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। মাহদীর লোকজন সর্বদাই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে। তারা অস্ত্র নিয়েই চলাফেরা করেন। বিদ্রোহীদের অনেকেই ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সী। তারা তাদের জীবন কাটিয়েছে প্রথমত. রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। পরে তালেবানদের বিরুদ্ধে।

মাহদী নিজে প্রথম শত্রু থেকে মিত্র হন। তারপর মিত্র থেকে শত্রু বনে গেছে। তারা চিৎকার করে বলে তাদের কোনো অধিকার নেই এই আফগানিস্তানে। প্রশ্ন তোলে, ‘আমাদের কি অধিকার আছে? আমরা কি আফগান নই? কত দিন আমরা এভাবে থাকবো?’ তারা বলে যদি বাল্ক আবে যুদ্ধ হয় সে যুদ্ধ সারা আফগানিস্তানে ছড়িয়ে পড়বে। জুন মাসে বাল্ক আাবের যুদ্ধে বিদ্রোহীরা তুমুল যুদ্ধ করে অবশেষে সারেন্ডার করে। এরপর অনেক গ্রামবাসী গ্রামে না ফিরে পর্বতমালায় আশ্রয় নেয়।

গত সপ্তাহে এক খবরে জানা যায়, মাহদী ইরানে পালিয়ে যাওয়ার সময় তালেবানদের হাতে ধরা পড়ে, তাকে হত্যা করা হয়।



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)