কুশিয়ারা নিয়ে সমঝোতা স্বাক্ষর জনগণে বিরুপ প্রতিক্রিয়া - আইএফসি


নিজস্ব প্রতিবেদক , আপডেট করা হয়েছে : 02-10-2022

কুশিয়ারা নিয়ে সমঝোতা স্বাক্ষর জনগণে বিরুপ প্রতিক্রিয়া -  আইএফসি

বাংলাদেশের নদী কুশিয়ারার ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর মানুষের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কারণ এ বিষয়টি হঠাৎ সামনে নিয়ে আসা হয়। অথচ বহু প্রতিক্ষিত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) রোববার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন। 

 বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আইএফসি নিউ ইয়র্ক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু, মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডঃ এস আই খান, সাধারণ সম্পাদক  সৈয়দ ইরফানুল বারি ও আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।



বিবৃতিতে তারা বলেন, বলেছে বাংলাদেশকে পানিশুন্য করার একটা প্রচেষ্টা অত্যন্ত পরিষ্কার। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত ৫৪টি নদীর মধ্যে ৫২টিরই শুষ্ককালীন প্রবাহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র ব্রহ্মপূত্র ও মেঘনা নদীতে শুষ্ক মৌসুমে যতকিঞ্চিত পানি প্রবাহিত হচ্ছে, উজানে যদিও অনেক ব্যারেজ ও ড্যাম রয়েছে। আসাম থেকে বয়ে আসা বরাক নদী উজানে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কুশিয়ারা এবং সুরমা নামে বাংলাদেশে এসেছে। এই প্রবাহগুলো মেঘনার উৎস নদী। বরাকের উপর ফুলেরতলায় ব্যারেজ নির্মান করে ইতোমধ্যে ১০,০০০ কিউসেকের বেশী পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সুরমা, কুশিয়ারার পানিও উজান থেকে সরিয়ে নিলে মেঘনা নদী এবং সিলেটের হাওড়্গুলো শুকিয়ে যাবে।



ফারাক্কা ব্যারেজ চালু করার পর থেকে এপর্যন্ত গঙ্গা নদীর বার্ষিক প্রবাহ ৫০০ বিলিয়ন কিউমেক থেকে একদশমাংশে অর্থাৎ ৫০ বিলিয়ন কিউমেকে নেমে এসেছে। তার বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল হয়েছে পরিবেশগত বিপর্যয়ের শিকার। মিঠাপানির প্রবাহ বঞ্চিত হওয়ায় ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্বের হেরিটেজ সুন্দরবন পানিতে অতিরিক্ত লবনাক্ততার কারণে ধংসের সম্মুখিন। বাংলাদেশে গঙ্গার প্রবাহ না থাকায় পানির লবনাক্ততা সাগর থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত পৌছে গেছে।


পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মোঃ শাহরিয়ার আলমের ভাষায় তিস্তা চুক্তি এখনো আশ্বাসের পর্যায়ে রয়ে গেছে। পশ্চিম বংগের গজলডোবা ব্যারেজ থেকে তিস্তার পুরো প্রবাহ দুই দশক যাবত সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। প্রবাহ না থাকায় রংপুরসহ বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল মরুভূমিতে পরিনত হতে চলেছে। অতীতে কুমিল্লার দুঃখ হিসেবে পরিচিত গোমতি নদীতে এখন বর্ষা মওসুমেও পানি থাকেনা।


হাজার বছর ধরে নদীসৃষ্ট পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশকে যৌথনদীগুলোর প্রবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন করায় এদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। নদীমাতৃক এইদেশের পরিবেশ, অর্থনীতি, ইকোলজি, জীবচক্র, জীববৈচিত্র, মানুষের জীবন ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এই মানবসৃষ্ট এই পরবেশগত বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য গঙ্গা ও তিস্তাসহ সকল নদীর প্রবাহ নিশ্চিত করার কাজ শুরু করা একান্ত জরুরী বলে আইএফসি মনে করে।  



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)