পরিবর্তিত পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে ফাইনালে


সালেক সুফী,অস্ট্রেলিয়া থেকে , আপডেট করা হয়েছে : 09-11-2022

পরিবর্তিত পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডকে  উড়িয়ে ফাইনালে

নিউজিল্যান্ড : ১৫২/৪ (মিচেল ৫৩ অপ., কেন ৪৬,কনওয়ে ২১, আফ্রিদী ২/২৪)। 

পাকিস্তান : ১৫৩/৩ (১৯.১ ওভার) মোহাম্মাদ রেজওয়ান ৫৭, বাবর আজম ৫৩, মোহাম্মাদ হারিস ৩০,বোল্ট ২/৩৩)।

ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী। 


পরিবর্তিত,জয়ের নেশায় উজ্জীবিত পাকিস্তান দাঁড়াতেই দিলোনা নিউজিল্যান্ডকে। এসসিজিতে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে শারীরিক ভাষা সম্পুর্ণ পাল্টে যাওয়া পাকিস্তান ৭ উইকেটে সহজ জয় অর্জন করে পৌঁছে গেলো এমসিজিতে অনুষ্ঠিতব্য টি২০ ফাইনালে। ঠিক যেমনটি করেছিল ৩০ বছর আগে ইমরান খানের কর্নার্ড টাইগার্সরা। সেবার অর্থাৎ ১৯৯২ সালে অকল্যান্ড থেকে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে জয়ী হয়ে। পাকিস্তানের উঁচুমানের বোলিং আর তুখোড় ফিল্ডিংয়ের মোকাবেলায় শুরু থেকে কথাসা হয়ে নিউজিল্যান্ড ১৫২/৪ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। সঠিক সময়ে পাকিস্তানের বিশ্ব সেরা ওপেনার যুগল বাবর আজম (৫৩) আর  রিজওয়ান (৫৭) এমন মহিমায়  জ্বলে উঠায় পাকিস্তান ১৫৩/৩ রান করে ৭ উইকেটে জয়ী হয়।

খেলার কোনো পর্যায়েই মনে হয়, পাকিস্তানের জয় ছাড়া আর কিছু হতে পারে। বিশাল জয় আর পরিবর্তিত পাকিস্তানের সংহারী রূপ দ্বিতীয় সেমিফাইনালের বিজয়ী দলের প্রতি সতর্কবার্তা। আহত বাঘের মতো হিংস্রতা নিয়ে ওরা অপেক্ষা করবে এমসিজিতে শিরোপা যুদ্ধে।   

উত্তেজনাপূর্ণ এ ম্যাচে টস জয়ী হয়ে নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং বেঁচে নিয়েছিল। শুস্ক ও অপেক্ষাকৃত ধীর গতির উইকেটে সেটি ছিল সেরা সিদ্ধান্ত। ফর্মে ফেরা দুরন্ত শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভার ইঙ্গিত দিলো কি হতে চলেছে। প্রথম বলে ফিন অ্যালেন বাউন্ডারি হাঁকালেও প্রচন্ড গতির দ্বিতীয় বলটি উইকেটের সামনে প্যাডে লেগে লেগবিফোরের আপীল। সৌভাগ্য আলেনের  ব্যাড ব্যাট হওয়ায় ডিআরএস নিয়ে রক্ষা।  কিন্তু পরের বলটি আবারো সরাসরি প্যাডে লাগলে এবার আউেট। বিদায় নেন টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে থাকা অ্যালেন।


গতির সাথে সুইং মিশিয়ে পাকিস্তানের চার পেসার শাহীন, রউফ, নাসিম,ওয়াসিম অস্বস্থিতে রাখলো কিউইদের। সেই সঙ্গে এদিন তুখোড় ফিল্ডিং যোগ হওয়ায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস গতি হারায়। কনওয়ে চেষ্টা করেছিল বেড়াজাল ভেঙে এগিয়ে যেতে। কিন্তু শাদাব খানের সরাসরি থ্রো থেকে রান আউট হওয়ায় গতি হারায় ইনিংস। মারকুটে ফিলিপ্স নেওয়াজের ধীর গতির বলে বিভ্রান্ত হয়ে ফিরে গেলে কিইউ স্কোর দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৩। সেখান থেকে সংযমী ব্যাটিং করে উইলিয়ামস আর ৬৮ রানের জুটি গড়েছিল।


কিন্তু কখনোই ওরা পাকিস্তানের আটসাঁট বোলিংয়ের মোকাবিলায় বাঁধন হারা হতে পারেনি। কিছুটা রিভার্স সুইঙের ইঙ্গিত পেয়ে ফিরে এসে উইকেটে শেকড় গেড়ে থাকা ফিলিপসকে সরিয়ে দেয় শাহীন। এরপর ড্রিল মিচেলের অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংস কিউইদের ইনিংস ১৫২/৪ পর্যন্ত টেনে নেয়। এদিন পাকিস্তানের কিপার মোহাম্মাদ রিজওয়ান ফিল্ডিংয়ে অন্তত ১৫ -২০ রক্ষা করেছে বললে বাড়িয়ে বলা হবে না।

১৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা নিউজিল্যাণ্ডের কিপার কনওয়ে শুরুতেই বাবর আজমের ক্যাচ ফেলে দেয়ার সুযোগে বর্তমান সময়ে বিশ্বসেরা ওপেনার জুটি, বাবর আর রিজওয়ান দুর্দান্ত ব্যাটিং করে প্রথম উইকেট জুটিতে ১০৫ রান জুড়ে দেয়। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে এসে পাকিস্তান বাটিঙের মূল ভরসা, ফর্ম ফিরে পাওয়া দলের আত্মবিশ্সাস তুঙ্গে নিয়ে যায়। বাবর ( ৫৩) , রিজওয়ান (৫৭) আউট হবার পর পাকিস্তান বাটিঙের নতুন সেনশেসন হারিস ২৬ বলে ৩০ রান করে জয় নিশ্চিত করে।


এই প্রথম, গোটা টুর্নামেন্টে ভালো খেলা নিউজল্যান্ডকে খুবই অসহায় মনে হয়েছে, জয়ের নেশায় মত্ত পাকিস্তানের মোকাবেলায়। পাকিস্তান দলের শরীরী ভাষা দেখে শুরুতেই সবাই অনুমান করেছে ১৯৯২ সালের এমসিজির সেই ঐতিহাসিক অর্জনের পুনরাবৃত্তি করতে কতটা মরণপণ ওরা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অ্যাডিলেডে ওভালে খেলবে ভারত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। প্রতিপক্ষ যেই (ইংল্যান্ড ভারত ) হোক, সঠিক সময়ে জ্বলে ওঠা উজ্জবিত ওপাকিস্তানকে মোকাবিলা খুব সহজ হবে না।  



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)