পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট : ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 27-03-2022

পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট : ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা

 পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে আনা এক অনাস্থা প্রস্তাবের কারণে দেশটিতে এক রাজনৈতিক সংকট দানা বাঁধছে। এমাসের শুরুর দিকে বিরোধীদলগুলোর একটি জোট এই অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এই জোট বলছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি থেকে একদল এমপি বেরিয়ে যাবার পর তিনি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন।

আগামী ২৫ মার্চ শুক্রবার পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবটির ওপর ভোট হতে পারে।

মনে করা হচ্ছে ২০১৮ সালে মতাসীন হবার পর থেকে এটিই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্য সবচেয়ে কঠিন রাজনৈতিক পরীা হয়ে উঠতে পারে।

ইমরান খান তার দলত্যাগী এমপিদের পার্টিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ফিরে এলে তাদের মা করে দেয়া হবে- যেভাবে একজন পিতা তার সন্তানদের মা করেন।

বিরোধীদল অভিযোগ করছ যে ইমরান খান অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে হলে ইমরান খানকে অন্তত ১৭২ জন এমপির সমর্থন পেতে হবে। এর মধ্যে তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের আসন সংখ্যা ১৫৫, তার সাথে আরো আছে তার কোয়ালিশন অংশীদারদের সমর্থন। অন্যদিকে নেওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগসহ পাকিস্তানের বিরোধীদলগুলোর মোট আসন সংখ্যা হচ্ছে ১৬৩।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের নিম্নকরে স্পিকারকে অনাস্থা প্রস্তাব পাবার ১৪ দিনের মধ্যে অধিবেশন আহ্বান করতে হয়। এই ১৪ দিনের সময়সীমা শেষ হয়েছে ২১ মার্চ সোমবার। তবে স্পিকারের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় ওআইসির এক সম্মেলনের কারণে এ তারিখ কয়েকদিন পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে।

পাকিস্তানের বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ইমরান খানের সাথে পাকিস্তানের শক্তিধর সামরিক বাহিনীর সুসম্পর্কে চিড় ধরেছে- যাদের সমর্থন দেশটির যে কোন রাজনৈতিক দলেরই মতা যাবার জন্য দরকার। ইমরান খান এবং সামরিক বাহিনী উভয়েই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চার বছর আগে ইমরান খানের দল মতাসীন হয়। ইমরান খান একজন সাবেক ক্রিকেটার এবং ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানের ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোন প্রধানমন্ত্রীই তার মেয়াদ পুরো করতে পারেননি।


মার্কিন কর্মকর্তা বললেন

গণতান্ত্রিক পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রসঙ্গে গত ২১ মার্চ সোমবার এমন মন্তব্য করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন এক মুখপাত্রের কাছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে তিনি পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে বলে জানান। বলেন, আমরা নিবিড়ভাবে পাকিস্তানের অবস্থা পর্যবেণ করে চলেছি। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে সম্মান করে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে দীর্ঘ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মূল্যবান। শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তান সবসময়ই মার্কিন স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ডনের খবরে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য অনেক সমালোচকই যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ি করছেন। তাদের দাবি, ইমরান খানের সরকারকে উৎখাতে বিভিন্নভাবে সমর্থন যোগাচ্ছে ওয়াশিংটন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ও কূটনৈতিক পর্যায় থেকে যুক্তরাষ্ট্র এমন দাবি অস্বীকার করেছে এবং এ ধরনের অভিযোগকে ভুল বলে উড়িয়ে দিয়েছে। উল্টো পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ কারণেই এই রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি।

গত ১৮ মার্চ শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সতর্কভাবে এগিয়ে যেতে চায়। তবে এক সময়কার এই ঘনিষ্ট মিত্রের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি তিনি। তিনি বলেন, আমাদের পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক রয়েছে। আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে এই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাব।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)