ভিসার জন্য অপেক্ষার সময় সহজে কমবে না


মঈনুদ্দীন নাসের , আপডেট করা হয়েছে : 30-11-2022

ভিসার জন্য অপেক্ষার সময় সহজে কমবে না

সম্প্রতি আমেরিকায় স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভিসার বিলম্ব হওয়া সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ডিপার্টমেন্ট বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করলেও দাবি করছে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা চলে আসছে যে, ভিসার জন্য আমেরিকার কনস্যুলার অফিসে অপেক্ষার সময় অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাতে ওয়ার্কার, পরিবার ও কোম্পানিসমূহের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু স্টেট ডিপার্টমেন্ট অপেক্ষার সময় উন্নতিসূচক কতিপয় তথ্য দিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অ্যাটর্নিরা এসব অগ্রগতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ থেকে কোভিড-১৯ এর পরে ভিসা সংগ্রহ এক কঠিন অবস্থায় পড়েছে। 

ভিসা পরিসংখ্যান

সম্প্রতি ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জুলি স্টাফ্ট পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বলেছে যে, বিশ্বব্যাপী স্টুডেন্ট ভিসার জন্য অপেক্ষার সময় ৭ দিন এবং অস্থায়ী ওয়ার্কার ও ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য (বি১-বি২) দুই মাস (ইমার্জেন্সি সাক্ষাতের জন্য যারা সময় নিয়েছে তারা ব্যতিরেকে) সময় লাগছে। কিন্তু বাংলাদেশে ছাত্র ভিসা কিছুটা তাড়াতাড়ি দেয়া হলেও ইমিগ্রেশন ভিসা বা ট্যুরিস্ট ভিসা ২ মাস থেকে ক্ষেত্রবিশেষে দুই বছর লাগছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ভারতের মুম্বাইয়ে এইচ১বি অথবা এল১ ভিসার জন্য ৩৫১ দিন এবং গত ১৭ নভেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত ভিজিটর ভিসার জন্য ৯৯৯ দিন অপেক্ষা করতে হয়। বাংলাদেশেও এ অপেক্ষা ক্ষেত্রবিশেষে একই সময়। তবে সেখানে এইচ১বি বা এল১ ভিসার কারবার বেশ কম। ভারতের অন্যান্য কনস্যুলেটেও একই অবস্থা, স্টাফ্টের পক্ষ থেকে অপেক্ষার সময় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পেনডেমিক পূর্ব অবস্থায় স্টাফ আনার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, অনেক ছাত্রের জন্য ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎকার প্রদান বাতিল করা। তাছাড়া অস্থায়ী ওয়ার্কার এবং যারা ভিসা নবায়ন করবে বিশেষ করে যেসব আবেদনকারী পূর্বে আমেরিকা সফর করেছেন এবং বিদেশ থেকে আমেরিকায় ইলেকট্রনিক্যালি পাঠানো আবেদন বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে অপেক্ষায় সময় অতিরিক্ত, সেসব পোস্ট থেকে পাঠানো আবেদনের জন্য সাক্ষাৎকার রহিতকরণ। 

স্টাফ্ট বলেন, চীনে আমেরিকার কনস্যুলার জেনারেল রিমোট পদ্ধতিতে শত শত ভারতীয় আবেদন প্রসেস করেছে। অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার বাতিল করা হয়েছে। একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে মেক্সিকো থেকেও। এসব ক্ষেত্রে যারা প্রথমবার আবেদন করেছেন, তাদের প্রতি নজর রাখা হয়েছে বেশি। কিন্তু রিমোট ভিত্তিতে ইন্টারভিউ নেয়ার বিষয়টি স্টাফ্ট নাকচ করেছেন। তাছাড়া যারা সাক্ষাৎকার দিবে তাদেরকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে, যা রিমোটলি সম্ভব নয়। ভিসা নবায়ন বা পুনঃবৈধকরণ নিয়ে (রিভেলিডেশন) বিশ্লেষকরা একমত হয় যে, আমেরিকার মধ্যে অবস্থানরতদের ভিসা পুনঃবৈধতা দেয়ার বিষয়টি ২০০৪ সালে অর্থাৎ ৯/১১ ঘটনার পর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এভাবে নবায়ন হলে তাতে আমেরিকার বাইরে যাওয়ার বিষয়টি আর প্রয়োজন হতো না। আবার তাদের নিয়ে আসতে ভিসা নিতে অপেক্ষা করতে হতো না বিধায়, নিয়োগকর্তারা সমস্যায় পড়তো না। 

জুলি স্টাফ্ট বলেন, সময়ক্ষেপণ কমানোর জন্য বিশেষ কাজ করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে নতুন আপডেট দেয়া এখন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটন থেকে তাড়াতাড়ি ভিসা প্রদানের জন্য নতুন কনস্যুলার সেকশন সৃষ্টি করা প্রয়োজন। তাছাড়া ভিসা ফি প্রদানের বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে, যা সাধারণত এখানে করা হয় না। তিনি দেশের অভ্যন্তরে নবায়ন কর্মসূচি সম্প্রসারণের ব্যবস্থার জন্য কারিগরি পদ্ধতি ব্যবহারের সক্ষমতার ওপর জোর দেন। মিস স্টাফ্ট বলেন, এভাবে নবায়ন ব্যবস্থা বেশ উপকারী হবে বলে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। 

কোম্পানি ও অ্যাটর্নিরা এই ভিসা প্রদানের বিষয়টি অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করেন। কারিগরি কোম্পানির নির্বাহীরা বলেন, কনস্যুলার অ্যাপয়েন্টমেন্টে উন্নতি হচ্ছে। ৮ মাসের সময় কমে কয়েক মাসে নেমে এসেছে। ভারতের ভিসার ক্ষেত্রে অনেক সময় মেক্সিকোর কনস্যুলারকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হচ্ছে না। ইমিগ্রেশন ভিসার ক্ষেত্রে ভিসা প্রদান আরো বিলম্ব হচ্ছে। যেমন পরিবারভিত্তিক ভিসা প্রদানের কোনো সুনির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। এ বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা জানা যায়নি। স্বামী বা স্ত্রীর কিংবা মাতা-পিতার ইমিগ্রেশনের বিষয়টি যদিও অনেকটা কম সময়ে হচ্ছে। ভাই-বোনের ক্ষেত্রে তা ১৪ থেকে ১৫ বছর সময় লাগছে। 


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)