চট্টগ্রামের জনসভায় নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


নিজস্ব প্রতিবেদক , আপডেট করা হয়েছে : 04-12-2022

চট্টগ্রামের জনসভায় নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের রোষানল থেকে দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ বিকেলে বন্দরনগরীর ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডে বিশাল সমাবেশ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে এ কথা বলেন তিনি বলেন, আমরা আপনাদের দোয়া সহযোগিতাও ভোট চাই কারণ যাতে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা আবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তিনি বলেন, আমি আপনার কাছে একটি প্রতিশ্রুতি চাই যে, আপনি অতীতের মতো আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দেবেন এবং আমাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন। হাত তুলে বলুন। আপনি নৌকায় ভোট দেবেন। জনগণ দুই হাতে দুই হাত তুলে সম্মতি জানায়। 

হাসিনা বলেন, বাবা-মা ভাই সব হারিয়ে ফিরে এসেছি বাংলার মানুষের কাছে এই জন্য যে দেশের মানুষ দুবেলা পেট ভরে ভাত খাবে। তাদের বাসস্থান হবে। চিকিৎসা হবে। শিক্ষা হবে। উন্নত জীবন পাবে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ীদের বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে আমরা যেন সেই ভাবে বাংলাদেশকে গড়তে পারি।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করে, ১৫ আগস্ট এ যারা শহীদ হন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া চেয়ে জনসভার প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর সেই সাথে আপনাদের সহযোগিতা চাই এই বাংলার মাটিতে আবার যেন যুদ্ধাপরাধী দল ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। 

চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর জেলা ইউনিট আয়োজিত সমাবেশে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ২৯ টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং সেগুলিকে তার উপহার হিসেবে বর্ণনা করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে খালেদা জিয়া কারাগারে কারণ- বিদেশ থেকে এতিমের জন্য যে টাকা এসেছে তা এতিমের হাতে না দিয়ে নিজের পকেটস্থ করেছে। জিয়া অরফানেজ এর টাকা চুরি করেছে বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা মামলায় তার দশ বছরের সাজা হয়েছে। আর তার ছেলে যে মারা গেছে সিঙ্গাপুর থেকে তার পাচার করা কিছু টাকা সরকার ফেরত আনতে পেরেছে। অপর সন্তান তারেক রহমানকে কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, লন্ডনে সে বসে আছে। এই তারেককে ২০০৭ সালে সে সময়কার তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে আর কোন দিন রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়েগিয়েছিল বলে উল্লেখ করে বলেন, সে এখন লন্ডনে রাজারহালে থেকে দেশের অভ্যন্তরে তাঁর (শেখ হাসিনা) সরকারের করে দেওয়ার ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে যেকোন ধরণের কোন খারাপ নাশকতামূলক কাজ পরিচালনা করে।  

তিনি বলেন, জিয়া যখন মারা যায় আমরা শুনেছিলাম পরিবারের জন্য তিনি কিছুই রেখে যাননি। একটা ভাঙ্গা সুটকেস ছাড়া কিছু ছিল না। আমি প্রশ্ন করতে চাই, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে কিভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে ছিল। তারা কি জাদুর কাঠি পেয়েছিল। 

 শেখ হাসিনা বলেন, ওরা জানে নির্বাচন হলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না তাই তারা নির্বাচন চায় না। তারা চায় সরকার উৎখাত করে এমন কেউ আসুক যারা একেবারে নগরদোলায় করে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। এটাই তারা আশা করে। তারা জনগনের তোয়াক্কা করেনা। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপি'র খুব প্রিয় একটা তারিখ, বোধহয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদলেহনের দল ছিল বলেই। ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আর সরকারকে উৎখাত করবে। অথচ পরাজয় নিশ্চিত জেনে এই ১০ ডিসেম্বর থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য মানুষ তুলে নিয়ে যাওয়া শুরু করেছিল। 

তিনি বলেন, আমি তাদের বলে দিতে চাই- খালেদা জিয়া ‘৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল, আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলে তাকে মানুষ মেনে নেয়নি। সারা বাংলাদেশে মানুষ ফুসে উঠেছিল। জনতার মঞ্চ করেছিলাম আমরা। খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। 

পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। সে কথা মনে রাখা উচিত। জনগণের ভোট যদি কেউ চুরি করে, বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। ওরা তো ভুলে গেছে। 

 বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। বিএনপির দুই গুণ আছে ভোট চুরি, আর মানুষ খুন। ওটাই তারা পারে। 

২০১৩ ১৪ ১৫ সালের কথা আন্দোলন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা মানুষকে দগ্ধ করা খালেদা জিয়া, তারেক জিয়াকে জনগনকে জবাব দিতে হবে। 

 তিনি বলেন, আমরা কষ্ট করে রিজার্ভ বাড়ালাম। দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আসি তখন রিজার্ভ মাত্র পাঁচ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে আমরা রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা বাংলাদেশে বিনামূল্যে টিকা দিয়েছি। রিজার্ভের টাকা মানুষকে দিয়েছি, ওষুধ কিনেছি, ভ্যাকসিন কিনেছি। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করিয়েছি। জনগণের কথাই আমরা ভাবি, তাদের কল্যাণেই কাজ করি। এখনও ৩৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আমাদের আছে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রামের উন্নয়নে কর্ণফূলী নদীর তলদেশে টানেল, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণসহ আগামীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে ফোর লেন থেকে সিক্স লেন করে দেয়ার পাশাপাশি সেখানে মেট্রো রেল করার জন্য সমীক্ষা হচ্ছে, ভায়াবল হলে তা করে দেয়া হবে বলেও উল্লেখ করে দেশের সমুদ্র বিজয়ের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

 সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, আব্দুর রহমান, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তথ্যসূত্র: বাসস। 




প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)