ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে রুশ সেনারা


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 13-04-2022

ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে রুশ সেনারা

ইউক্রেনের মারিউপলে রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ। যার জেরে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য তদন্ত শুরু করেছে। তবে রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মারিউপলের নিয়ন্ত্রণ রুশ সেনাদের হাতে চলে যেতে পারে বলেও ইউক্রেনীয় সামরিক কর্মকর্তারা স্বীকার করছেন। এদিকে ইউক্রেনের একটি মানবাধিকার সংস্হা জাতিসংঘে অভিযোগ করেছে, রুশ সেনারা ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। এরই মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনে পুরোদমে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে হামলা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় ছিল না।

রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার!

ইউক্রেনের এমপি ইভান্না ক্লিমপুশ দাবি করেছেন, মারিউপলে এক অজানা রাসায়নিকের সন্ধান মিলেছে। বাতাসের সঙ্গে ঐ রাসায়নিক মেশার ফলে মানুষের শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে। রীতিমতো শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। চলাফেরা করতেও সমস্যা হচ্ছে। রাশিয়া ঐ রাসায়নিক ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। ইউক্রেনের এই দাবির পরে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, তাদের কাছে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে আগেই তারা রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে সতর্ক করেছিল। মারিউপলে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে আমেরিকা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও জানিয়েছেন, অন্যদের সঙ্গে তারাও এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তার বক্তব্য, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকলে তার সমস্ত দায় পুতিন এবং তার প্রশাসনকে নিতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও ১১ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় দাবি করেছেন, রাশিয়া সম্ভবত রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তবে নিশ্চিত করে তিনি কিছু বলেননি।

‘ধর্ষণকে অস্ত্র করছে রুশ সেনারা’

লা স্ত্রাদা-ইউক্রেন নামে একটি মানবাধিকার সংস্হার প্রেসিডেন্ট কাটরিনা চেরেপাখা বলেন, সংস্থার জরুরি হটলাইনে প্রায় প্রতিদিন রুশ সেনার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আসছে। সংস্থাটির দাবি, কয়েক দিন আগেই ৯টি ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ এসেছে তাদের কাছে। যে ঘটনায় মহিলা এবং নাবালিকা মিলিয়ে ১০ জন নির্যাতিতা হয়েছেন। এ নিয়ে জাতিসংঘে অভিযোগও করেছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের কাছে একটি নয়, একাধিক এই ধরনের অভিযোগ জমা পড়েছে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে। তবে একই অভিযোগ উঠেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধেও। জাতিসংঘে শিশু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করে ইউনিসেফ। তারা জানিয়েছে, দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শিশু ঘরছাড়া। ইউক্রেনে সব মিলিয়ে ৭৫ লাখ শিশু আছে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ শতাংশ শিশু দেশের বাইরে বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে বাস করছে। যুদ্ধের ফলে তারা ঘরছাড়া। স্কুল, পড়াশোনা সব বন্ধ তাদের।

পূর্ব ইউক্রেনে হামলার প্রস্তুতি রাশিয়ার

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায় জোরদার লড়াইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে হিসেবে রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুপক্ষই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। ইউক্রেনে হামলা শুরুর ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় পর এই অভিযানের সামরিক লক্ষ্যে রাশিয়া পরিবর্তন আনছে। ডোনিয়েৎস্ক প্রদেশের গভর্নর পাভলো কিরিলেংকো জানিয়েছেন, শক্তিবৃদ্ধির অংশ হিসেবে তার এলাকায় রাশিয়া সৈন্যদের নতুন ব্যাটালিয়ন পাঠাচ্ছে। তিনি বিবিসিকে বলেন, দুপক্ষের মধ্যে বিভাজনকারী রেখার দুইপাশে এখন সারা দিন ধরে লড়াই চলছে। তবে সেখানে উপস্থিত বিবিসির এক সংবাদদাতা বলছেন, ইউক্রেন বাহিনী যে মাত্রায় শক্তিবৃদ্ধি করছে, রাশিয়ার তুলনায় তা কিছুই না। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীও পূর্বাঞ্চলে রুশ অভিযানের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, রুশ বাহিনী লুহানস্ক, দোনিয়েৎস্কসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে বলে তারা মনে করছে।

হামলা ছাড়া বিকল্প ছিল না : পুতিন

ইউক্রেনের ওপর হামলার উদ্দেশ্যকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন মহান বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই সামরিক অভিযানের মূল লক্ষ্য ডনবাস অঞ্চলের বাসিন্দাদের সাহাঘ্য করা। আর এই লক্ষ্য যে অর্জিত হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই বলে পুতিন উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে হামলা ছাড়া রাশিয়ার বিকল্প কোনো উপায় ছিল না। রাশিয়ার আমুর অঞ্চলে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন এই দাবি করেন। এই প্রথম প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোর বাইরে কোনো শহরে সফরে গেলেন।

জাপানের পদক্ষেপ

সাম্প্রতিক পরিস্হিতির দিকে লক্ষ্য রেখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কড়া অবস্থান নিয়েছে জাপান। ভøাদিমির পুতিনসহ তার গোটা পরিবারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জাপান জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ার থেকে কয়লা নেওয়া অনেক কমিয়ে দেবে জাপান। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জাপান।




প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)