২০২৩-এ জ্বালানি নিরাপত্তার উপায়


জাডিক , আপডেট করা হয়েছে : 11-01-2023

২০২৩-এ জ্বালানি নিরাপত্তার উপায়

২০২৩ সনে শুরু থেকেই বিশ্ব জ্বালানি বাজারের মহাসংকট দুর্ভিক্ষের পথে হাঁটছে। এমনিতেই কয়লা, তেল, গ্যাস, এলএনজি বাজার এখনো অস্থির। তারপরও উত্তর গোলার্ধের শীত মৌসুমে ইউ দেশগুলো রাশিয়ার তেলের সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেয়া আর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়া-সংশ্লিষ্ট দেশসমূহে তেল বিক্রি স্থগিত করে দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় বিশাল জ্বালানি সংকট চোখ রাঙাচ্ছে। হয়তো বিত্তশালী পশ্চিম ইউরোপ বা চীন, জাপান, ভারত, কোরিয়া সামলে নেবে। বিকল্প জ্বালানি কয়লা ইতিমধ্যেই আগের রূপে ফিরছে।  

কিন্তু বাংলাদেশের না আছে বিশ্ববাজার থেকে অগ্নিমূল্যে জ্বালানি ক্রয়ের ক্ষমতা, না আছে দ্রুত নিজেদের গ্যাস তোলা বা কম সময়ে কয়লা উত্তোলনের মতো আর্থিক বা কারিগরি দক্ষতা। পায়রা, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা স্বস্তি দিলেও ঘনীভূত গ্যাস সংকট সামাল দেয়া যাবে কীভাবে? ডলার সংকট আর তহবিল শূন্য থাকায় স্পট মার্কেট থেকে জ্বালানি কিনতে পারবে কি পেট্রোবাংলা? সীমিত সামর্থ্যরে আমলা-নির্ভর পেট্রোবাংলার কি দক্ষতা আছে গ্যাস চুরি, অদক্ষ ব্যবহার সীমিত করে গ্যাস সাশ্রয় করার?

এমনিতেই গ্যাস সংকটের কারণে অনেক আগে খুলনা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করেও কাউকেই গ্যাস দেয়া হয়নি। প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহের অভাবে আশুগঞ্জ গ্যাস কমপ্র্রেশার স্টেশন চলছে স্বল্প ক্ষমতায়, এলেঙ্গা কমপ্রেশার স্টেশন কখনোই চালু হয়নি, এতদসত্ত্বেও কোন ভরসায় গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন বগুড়া থেকে দিনাজপুর-রংপুর পর্যন্ত বিস্তৃত করা হলো?

মেঘনাঘাটে তিন তিনটি গ্যাস ব্যবহারকারী বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোথা থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হবে? শিল্পকারখানাসমূহে সংকটে থাকা প্রয়োজনীয় গ্যাস ঘাটতি মিটবে কীভাবে? নির্বাচনের বছর সরকার কি জ্বালানি নিরাপত্তা মহান সৃষ্টিকর্তার হাতে সঁপে দিবে? 

দেশে অনেক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ আছেন। অনেকেই প্রতিনিয়ত প্রিন্ট আর ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কথা বলছেন। কেউ কি গবেষণা করে বলতে পারেন কত গ্যাস অপচয় হয়, চুরি হয় প্রতিনিয়ত দেশে? এনার্জি পাওয়ার পত্রিকার সম্পাদক নিয়মিত অনুষ্ঠান করেন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। আমি সব শুনি, নিজেও মাঝে মাঝে কথা বলি। কিন্তু জ্বালানি সংকটের স্থায়ী নিরসনে কারো গভীর আগ্রহ দেখি না, রাজনৈতিক দলগুলোকে সোচ্চার দেখছি না, অনেক লিখেছি, অনেক বলেছি কেউ শুনছে না। বাংলাদেশ কিন্তু মার্চ ২০২৩ থেকেই মহাবিপদে পড়তে যাচ্ছে। এরই মাঝে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ মূল্য নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। কয়লা বিদ্যুৎ কিছুটা স্বস্তি দিলেও যথেষ্ট হবে না, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ দক্ষতা নিয়েও সন্দেহ আছে।  মনে হয় না সঠিক তদারকি হয়েছে। কিন্তু এ সেক্টরে গবেষণা বড্ড প্রয়োজন। এ সেক্টরের দুর্নীতি ও অদক্ষতা নিয়েও প্রয়োজন গবেষণার। দেশের স্বার্থে কেউ না কেউ তো সেটা অবশ্য করবেনই।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)