জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট বাংলাদেশ স্ট্রিট


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 22-02-2023

জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট বাংলাদেশ স্ট্রিট

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোর মধ্যে জ্যাকসন হাইটস অন্যতম। জ্যাকসন হাইটসই বাংলাদেশি অধ্যুষিত একমাত্র এলাকা যেখানে খুঁজে পাওয়া যায় বাংলাদেশকে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট। এই স্ট্রিটেই বাংলাদেশিদের সুপার মার্কেট, রেস্টুরেন্ট এবং অফিস আদালত। এ ছাড়াও বাংলাদেশিদের অনুষ্ঠানাদিও এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এখানে রয়েছে বাংলাদেশিদের ব্যবসায়ীক সংগঠনসহ নানাবিধ সংগঠন। দীর্ঘদিন থেকে জেবিবিএসহ জ্যাকসন হাইটসের বিভিন্ন দাবি ছিল এই এলাকায় স্থায়ী শহিদ মিনারের। তাদের সেই স্বপ্ন আজো পূরণ হয়নি। যদিও এই দাবিতে এখন কেউ আর সোচ্চার নয়। তারপর চেষ্টা করা হয়েছিল এই এলাকার নামকরণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুব রহমানের নামে করার। কিন্তু রাজনৈতিক বিভক্তির কারণে সেই দাবিও আলোর মুখ দেখিনি। বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকায় ইতিমধ্যে একটি স্ট্রিটকে বাংলাদেশ অ্যাভিনিউ করা হয়েছে। ব্রঙ্কসের স্টালিং অ্যাভিনিউকে বাংলাবাজার অ্যাভিনিউ করা হয়েছে। ওজনপার্কের ফরভাল স্ট্রিটকে মিজানুর রহমান ওয়ে করা হয়েছে। যদিও এই এলাকায় দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছিলেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান। শিকাগোতে মুজিব ওয়ে এবং জিয়া ওয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও আমেরিকার বাংলাদেশি অধ্যুষিত স্টেটগুলোর মধ্যে কোনো কোনো স্ট্রিট বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করে করা হয়েছে। সেখানে জ্যাকসন হাইটস ছিল অনেকটা অবহেলিত। জ্যাকসন হাইটসে আগে নামকরণের কথা থাকলেও তা হয়ে ওঠেনি।

মূলত জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটকে বাংলাদেশ স্ট্রিট করার প্রস্তাব আসে গত সিটি কাউন্সিল নির্বাচনের সময়। সেই সময় জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফাহাদ সোলায়মান দাবিটি তুলেছিলেন জ্যাকসন হাইটসের কাউন্সিলম্যান প্রার্থী শেখর কৃষ্ণানের কাছে। শেখর কৃষ্ণান সেই সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি নির্বাচিত হলে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটকে বাংলাদেশ স্ট্রিট নামকরণের চেষ্টা করবেন। নির্বাচনের শেখর কৃষ্ণান কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হন। অন্যদিকে ফাহাদ সোলায়মানও শেখর কৃষ্ণানের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন এবং শেখর কৃষ্ণানকে সিটি কাউন্সিলে বিল উত্থাপনে অনুরাধ করেন। কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান অবশেষে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সিটি কাউন্সিলে বিলটি উপস্থান করেন। বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে ৪৭-০ ভোটে পাশ হয়। এখন অপেক্ষার পালা। নিউইয়র্ক সিটির ডিপার্টমেন্ট অব পার্ক এবং নিউইয়র্কের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সফোর্টেশনের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশ স্ট্রিটের সাইন বোর্ডটি লাগানো হবে। বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামকরণ করা হবে ৩৭ অ্যাভিনিউ থেকে ব্রডওয়ে পর্যন্ত।

জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট বাংলাদেশ স্ট্রিটের বিল পাস হওয়ায় কমিউনিটিতে আনন্দের বন্যা বইছে। জ্যাকসন হাইটসের ব্যববসায়ী, এলাকাবাসীসহ সবাই ধন্যবাদ জানিয়েছেন কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান এবং জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক এবং নিউইয়র্কের মেয়র এরিখ অ্যাডামসের এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান। মূলত এটি ছিল ফাহাদ সোলায়মানের স্বপ্ন এবং স্বপ্নের বাস্তবায়ন করলেন কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান।

এদিকে ফাহাদ সোলায়মান ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফাহাদ সোলায়মান ধন্যবাদ জানিয়েছেন কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণানকে। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জানান, জেবিবিএ’র সব কর্মকর্তা, জ্যাকসন হাইটসের ব্যবসায়ীসহ সব বাংলাদেশিকে। তিনি বলেন, গত নির্বাচনের সময় আমি এই স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলাম শেখর কৃষ্ণানকে। তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। তিনি আরো বলেন, বিলটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেখর কৃষ্ণান আমাকে টেক্সট করে জানিয়েছেন এবং আমার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ফাহাদ সোলায়মান আরো জানান, জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট বাংলাদেশ লেখা থাকবে এটা ভাবতেই আনন্দ লাগছে এবং গর্বে বুকটা ভরে যাচ্ছে। আমেরিবার মতো জায়গায় বাংলাদেশের নাম, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন, আর আমরা নতুন প্রজন্ম সেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কবে এটি লাগানো হবে তা নিয়ে শেখর কৃষ্ণানের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকের পরই আমরা তারিখ ঘোষণা করবো। তিনি সেই দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সব বাংলাদেশিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)