তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ মরুভূমি হবে : রাশেদ খান মেনন


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 15-03-2023

তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ মরুভূমি হবে : রাশেদ খান মেনন

তিস্তার পাশে দু’টি খাল কেটে আরও পানি প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশের ‘তিস্তা সেচ প্রকল্প’ পানি সংকটে অকার্যকর হয়ে পড়বে না কেবল, তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। অন্যদিকে বর্ষায় প্লাবন ও ভাঙন মানুষের দুর্গতিকে আরও চরমে পৌঁছে দেবে। এসব আশঙ্কার কথা বলেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পার্টির পলিটব্যুরোর সভায় তিনি এধরনের আশঙ্কা করেন। পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা প্রস্তাবিত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, কামরুল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হক্কানী, আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান প্রমুখ।

তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার উজানে তিস্তার পাশে আরো দুটি খাল কেটে তিস্তার অবশিষ্ট পানি প্রত্যাহারের যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চলেছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে। মেনন এপ্রসঙ্গে বলেন, এতে করে বাংলাদেশ, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষ চরমভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, তিস্তা অঞ্চলের মানুষের এই উদ্বেগ সম্পর্কে বলা হয় ইতিপূর্বে পশ্চিমবাংলার গজলডোবায় শুকনো মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করায় তিস্তা অঞ্চলের মানুষ চরম বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। শুকনো মৌসুমে পানি না পাওয়া ও বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দিয়ে তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অঞ্চলে প্লাবন ও ভাঙ্গন সৃষ্টি নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক নদী তিস্তার পানি বন্টনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ভারত একটি সমঝোতায় উপনীত হলেও পশ্চিম বাংলার মমতা ব্যানার্জী সরকারের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে তা আর স্বাক্ষর হতে পারেনি। তার পর থেকে অদ্যাবধি বার বছর হয়ে গেলেও ভারত সরকার ঐ চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে বারবার আশ্বাস দিয়ে আসলেও তা এখনও স্বাক্ষরিত হয়নি। এই অবস্থায় তিস্তার পাশে দু’টি খাল কেটে আরও পানি প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশের ‘তিস্তা সেচ প্রকল্প’ পানি সংকটে অকার্যকর হয়ে পড়বে না কেবল, তিস্তা অববাহিকায় বাংলাদেশ অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। অন্যদিকে বর্ষায় প্লাবন ও ভাঙন মানুষের দুর্গতিকে আরও চরমে পৌঁছে দেবে। 

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর প্রস্তাবে বলা হয়, পশ্চিমবাংলা সরকারের তিস্তায় আরও দু’টি খাল খননের বিষয় বাংলাদেশ সরকারের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অপরদিকে ভারতও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। এই অবস্থায় পার্টি উভয়ের তরফ থেকে বিষয়টি খোলসা করা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে তা অবিলম্বে বন্ধ করা এবং তিস্তা চুক্তি সংক্রান্ত ইতিপূর্বেকার সমঝোতাকে অবিলম্বে চুক্তিতে রূপদান ও তার বাস্তবায়নের দাবি জানান হয়। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে চীনের সহায়তায় প্রণীত ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন কোন পর্যায়ে আছে তা জানতে চাওয়া হয়। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে এ সম্পর্কে বলা হয় যে ভূ-রাজনৈতিক কারণ এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাঁধা হয়ে থাকলে বাংলাদেশ নিজের উদ্যোগে পদ্মাসেতুর মত এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতে পারে এবং সেই আর্থিক ও কারিগরি সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে সেই লক্ষ্যে ‘তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠন’, খরা কালে তিস্তার পানি প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের জন্য তিস্তা চুক্তি সম্পাদন এবং বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে মরুকরণ, প্লাবন ও নদী ভাঙ্গণের হাত থেকে রক্ষা করতে বাংলাদেশের নিজ স্বার্থের প্রতি মনোযোগী হয়ে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান হয়।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)