অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের আহ্বান জাতিসংঘের


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 05-04-2023

অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের আহ্বান জাতিসংঘের

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক। গত ৩১ মার্চ এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন। 

ভলকার টার্ক বলেছেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন যে বাংলাদেশজুড়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন এবং অনলাইনে সমালোচকদের কণ্ঠ রোধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি পুনরায় কর্তৃপক্ষের প্রতি অবিলম্বে এর প্রয়োগ স্থগিত এবং এই আইনকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এর ধারাগুলোতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

এই সংশোধনী আনতে সহযোগিতার লক্ষ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর থেকে বাংলাদেশকে ইতিমধ্যে বিস্তারিত পরামর্শ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভালকার টার্ক। তার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে এই আইনে ২ হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ ২৯ মার্চ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সংবাদপত্র প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের শিকার হয়েছেন। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। সঙ্গে তার ল্যাপটপ, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করে নেওয়া হয়েছে। তার জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় আরেকটি মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং একজন আলোকচিত্রী সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে। এই মামলা করা হয়েছে বাংলাদেশে জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট সংকট নিয়ে একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।

গত ফেব্রুয়ারিতে পরিতোষ সরকার নামের এক তরুণকে এই আইনের আওতায় পাঁচ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, একটি ফেসবুক পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন তিনি।

ভলকার টার্ক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে তার দপ্তর থেকে ধারাবাহিকভাবে উদ্বেগ জানানো হচ্ছে। এসব ধারা অস্পষ্ট এবং বিকৃত পরিসরে সেগুলোর প্রয়োগ করা যায়। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার এই আইনের যথেচ্ছ ও মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগ বন্ধে সুরক্ষাকবচ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু যখন গ্রেফতার করা অব্যাহত রয়েছে, তখন তাদের এই প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়। খোদ এই আইনেরই যথাযথ সংস্কার দরকার।

বর্তমানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসব মামলা রয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করতে একটি স্বাধীন বিচারিক প্যানেল গঠনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। তার ভাষ্যমতে, এই পর্যালোচনা করা হবে যেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মুক্তি পান।

বাংলাদেশে নিবন্ধন হারানো মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের আদিলুর রহমান খান ও নাসিরুদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে চলমান বিচারপ্রক্রিয়া নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন ভলকার টার্ক। তাদের বিররুদ্ধে ২০১৩ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন করার অভিযোগে এই মামলা হয়েছিল।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)