রবীন্দ্রনাথের নাতনি পরিচয়ে ঈদ জামাতে মসজিদের মিম্বরে কে এই মহিলা?


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 27-04-2023

রবীন্দ্রনাথের নাতনি পরিচয়ে ঈদ জামাতে মসজিদের মিম্বরে কে এই মহিলা?

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা প্রথম ঘটলো। তা-ও আবার মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র ঈদের দিন। ঘটনাটি ঘটে গত ২১ এপ্রিল ভার্জিনিয়ার ফোয়ারফেক্সের এডামস মসজিদে। ২১ এপ্রিল ঈদের জামাতের আগে এডামস সেন্টার মসজিদে মূলধারার রাজনীতিবিদরা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এই সময় একজন মহিলা মসজিদের ভিতরে ঢুকে যেখানে মূলধারার রাজনীতিবিদরা বক্তব্য দিচ্ছিলেন ঠিক তার পাশে ইমামের মিম্বরে উঠে পড়েন এবং মাইক নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি এই সময় বলতে থাকেন আমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি। তাকে মাইক দিতে হবে এবং তিনি বক্তব্য রাখবেন। এই পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানের পরিচালক এবং মসজিদ ভর্তি মুসল্লিরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। মহিলা যখন চিৎকার করছিলেন ঠিক সেই সময় পরিস্থিতি শান্ত রাখতে মুসল্লিরা জোরে জোরে পড়তে থাকেন আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কল করা হলে প্রথমে একজন পুলিশ মসজিদের ভিতরে ঢোকেন এবং তাকে বের হয়ে যেতে বলেন। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি পুলিশের কথা শুনছিলেন না। পরবর্তী সময়ে আরো পুলিশ এসে মহিলাকে অনেকটা জোর করে বাইরে নিয়ে যায়। বাইরে নিয়ে মহিলার সঙ্গে পুলিশ কথা বলার চেষ্টা করে। কেন মসজিদেও ভেতরে প্রবেশ করে তা জানতে চায়। কিন্তু সে পুলিশের কথায় কর্ণপাত করছিল না। উল্টো অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এই সময় যে পুলিশ প্রথমে চেষ্টা করেছিলেন তাকে বের করার সময় তিনি ঐ পুলিশ অফিসারকে মিথ্যাবাদী বলেন। পুলিশ অফিসার অনেকক্ষণ কথা বলে তাকে ছেড়ে দেয়। মহিলা মিম্বরে উঠে চিৎকার করা ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মহিলাকে হিন্দু দাবি করে অনেকেই কটাক্ষ্য করেন। ভিডিওতে দেখা যায় মহিলা নিজেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি হিসেবে পরিচয় দেন।

এ ব্যাপারে মসজিদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে বলেন, ঐ মহিলা মানসিকভাবে অসুস্থ। প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিম। শিক্ষিত পরিবারের সদস্য। সরকারি চাকরি করেন। স্বামী ও সন্তান রয়েছে। কিছুদিন ধরেই তিনি অসংলগ্ন আচরণ করছেন। পুলিশ সেদিন ধরে নিয়ে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে তাকে ছেড়ে দেয়। মসজিদের কর্মকর্তা বলেন, পুরো ঘটনায় এডামস সেন্টারের পক্ষ থেকে একটি স্টেটমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এটাই আমাদের অফিসিয়াল বক্তব্য। এতে বলা হয়, ২১ এপ্রিল মসজিদের ঘটনায় স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির মানসিকভাবে অসুস্থ একজন জড়িত। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তাদের পরিবার। মসজিদ কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়, অনুমান নির্ভর হয়ে কিছু করা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে মানসিক সমস্যা অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়। এর জন্য প্রয়োজন অধিক যত্ন ও সতর্কতামূলক অ্যাটেনশন। এডামস সেন্টার কমিউনিটির কল্যাণ, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। কমিউনিটি বিনির্মাণে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। মসজিদের সদস্যদের একে অন্যের প্রতি সম্মানজনক পরিবেশ তৈরি ও নিরাপদব্যবস্থা গড়ে তোলায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)