আরিফুল হক জেমসের জানাজায় হাজার হাজার মানুষ


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 17-05-2023

আরিফুল হক জেমসের জানাজায় হাজার হাজার মানুষ

আরিফুল হক জেমস। একজন বাংলাদেশি। যার বয়স ছিল মাত্র ৩১ বছর। মর্মান্তিকভাবে গত  ৮ মে দুর্বৃত্তদের আঘাতে তিনি নিহত হন। সাবেক বিটিএসপি সভাপতি তোজাম্মেল হক তোজার বড় ছেলে জেমসকে ফিলাডেলফিয়া পুলিশ নর্থফিলি থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় গত ৫ মে সকালে টেম্পল হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে যায় এবং জেমসের পরিবারকে ফোন করে জানানো হয়েছিল পরের দিন ৬ মে সকাল ১১টায়। হাসপাতালে আরিফুল হক জেমসের শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ৮ মে আরিফুল হক জেমসের পরিবারকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান যে, প্রচুর রক্তক্ষরণ ছাড়াও মাথায় এবং বুকে গুরুতর আঘাতের কারণে জেমসকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আরিফুল হক জেমসকে তখন তারা মৃত ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ফিলাডেলফিয়া শহরের আপার ডার্বির বাসিন্দা জেমসের বাবার বাড়ি ভাতকুড়ি গ্রামে, তিলকপুর, থানা আক্কেলপুর, জেলা জয়পুরহাট। জানা গেছে, পরিবারে জেমসের ছোট ভাই হাই স্কুলে এবং তার একমাত্র বোনের বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। জেমস তার বাবার সঙ্গে পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার বাবার গ্যারেজে কাজ করে আসছিলেন।

গত ১২ মে শুক্রবার বাদ জুমার পর আপার ডারবির আল মদিনা মসজিদে জেমসের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় হাজারেরও অধিক বাংলাদেশিসহ অন্য দেশের মানুষও জানাজা নামাজে অংশগ্রহণ করেন। জেমসের জানাজার কথা শুনে বৃহত্তর ফিলাডেলফিয়ার সব সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সংগঠনসহ সর্বমোট ২৭টি সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ, ফিলাডেলফিয়ায় বসবাসরত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, মূলধারার রাজনৈতিক নেত্ববৃন্দ বিশেষ করে আপারডাবি টাউনশিপ ডিস্ট্রিক-৬-এর কাউন্সিলম্যান, মিল বোর্ন বরোর মেয়র এবং পাঁচ জন কাউন্সিলম্যান, ফিলাডেলফিয়া ও আপারডাবি থেকে নির্বাচিত ৩২ জন কমিউনিটি কমিটি মেম্বারসহ সাধারণ মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপারডাবির মদিনা মসজিদে ছুটে আসেন এবং জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজার পর জেমসকে দাফন করা হয় আপারডাবি মসজিদের ঠিক পাশেই ফ্রেন্ডস কবরস্থানে।

জানাজায় যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন উপস্থিত সবাই এই জঘণ্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসহ ন্যায় বিচারের দাবি জানান। সেই সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফিলাডেলফিয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য। গত কয়েক বছরে আইন শৃঙ্খলা অবনতি ঘটে প্রায় ৮৫ শতাংশেরও বেশি। তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির দাবি জানান।

জানাজা এবং দাফনের পর পরই জেমসের পিতা তোজ্জাম্মেল হক তোজা জানান যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ডিটেকটিভ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছেন এটি ছিল হত্যাকান্ড। কয়েক জন দুর্বৃত্তের প্রচণ্ড আঘাতের কারণে আরিফুল হক জেমসের মৃত্যু হয়। পুলিশ তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া তিনি উপস্থিত সকলের নিকট আকুল আবেদন জানান যে, আপনারা আর চুপ না থেকে জেমস হত্যাকাণ্ডসহ সব আমেরিকানদের হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য জোরদার আওয়াজ তুলুন। যেন আমার মতো আর কারো সন্তানকে এভাবে হারাতে না হয়। এই বলেই তিনি কেঁদে ফেলেন। সর্বশেষ তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান, এই দুঃসময়ে যারা সহর্মমিতা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে যারা জানাজা এবং প্রতিবাদের অংশগ্রহণ করেছেন তাদেরও।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)