দেশকে ঋণের রাজ্যে পরিণত করেছে দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকার- মোস্তফা মোহসীন মন্টু


নিজস্ব প্রতিবেদক , আপডেট করা হয়েছে : 07-06-2023

দেশকে  ঋণের রাজ্যে পরিণত করেছে দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকার- মোস্তফা মোহসীন মন্টু

দেশের চলমান সংকট উত্তরণে ও জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন শীর্ষক যৌথ কর্মসূচি আজ ৭ জুন বুধবার, বেলা ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি।


সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গণফোরাম সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন- একটি প্রতীকের প্রতি এদেশের জনগণের অনিহা সৃষ্টি হয়েছে। ব্যক্তি ভালো হলেও জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেয়না। কারণ ২০১৪ সালের ভোটার বিহীন নির্বাচন ও ২০১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করার কারণে এদেশের জনগণের আস্থা হারিয়েছে বর্তমান কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকার। দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতি ও লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। মন্ত্রী, সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়হীনতায় কয়লার সংকট হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি ঋণের রাজ্যে পরিণত করেছে এই লুটেরা দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকার। বিদেশী রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোর নিকট এদেশের জনগণকে হাজার হাজার কোটি ঋণের টাকায় দায়বদ্ধ করে ফেলেছে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে নির্দলীয় সরকারের অধীন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। গত ২টি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, আমার ভোট আমিও দিতে পারিনি। আমরা জনগণের সরকার চাই, জনগণের সরকার আসলে দুর্নীতি বন্ধ হবে, ঋণ খেলাপি বন্ধ হবে, অর্থ পাচার বন্ধ হবে ও কয়লার টাকা বাকী থাকা বন্ধ হবে এবং দেশের মানুষ বাঁচবে, মুক্তি পাবে।


বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল সরদার চাখারী বলেন- স্থানিয় নির্বাচন যেমন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বা বিরোধী মতের প্রার্থী বিজয়ী হলেই যে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে সেই চিন্তার কোন অবকাশ নেই। আমরা দেখেছি ২০১৪ নির্বাচনের আগে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে বিরোধী প্রার্থীগণ কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে বিনা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে আওয়ামী লীগ। তাই দলীয় সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।


সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। এতে তিনি বলেন,জনগণের মালিকানা ও ভোট-অধিকার নিশ্চিত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। তিনি আরো বলেন,

বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন, কর্তৃত্ববাদী ও দূর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত অবৈধ সরকার মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধ গুলোকে ভূলুণ্ঠিত করে আমাদের রাষ্ট্রকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। রাষ্ট্র কাঠামোর প্রতিটি স্তরে আজ চরম গণতন্ত্রহীনতা, দূর্নীতি ও দুঃশাসন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। প্রশাসনে চলছে দলবাজীর নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা। পুলিশ সহ সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দলীয় ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং সুপ্রীম কোর্ট বার সহ সকল পেশাজীবী সংগঠন সমূহের নির্বাচনে প্রশাসন ও পুলিশের ছত্রছায়ায় অন্যায়, অবৈধ ও অগনতান্ত্রিক হস্তক্ষেপে রাষ্ট্রের সামগ্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে পড়েছে। এই চরম বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তে রঞ্জিত এ মাটির সন্তান হিসাবে আমাদের পবিত্র কর্তব্য। আমাদের সংবিধানের মূল ভিত্তি "জনগনের মালিকানা" প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই মূহুর্তে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন বিকল্প নেই। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন মাঠ পর্যায়ে আরোও জোরদার ও তীব্রতর করে জনবিরোধী এই ভোট বিহীন অবৈধ সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। চরম অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের মুখে পতিত আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সামগ্রিক ভাবে মেরামত করতে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল সমূহ এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন গুলোর সমন্বয়ে একটি দেশপ্রেমিক জাতীয় সরকার গঠনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে কার্যকরভাবে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি সমূহ বাস্তবায়নে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সাম্রদায়িক সম্প্রীতি সমুন্নত রাখতে হবে। কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে আশু করণীয়:তে তিনি বলেন,  দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। গায়েবি মামলা বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্র-ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করতে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে। একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান এবং নির্বাহী প্রধান হতে পারবে না। একই ব্যক্তি পর পর ২ (দুই) বারের বেশি রাষ্ট্রপতি / প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।




প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)