প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছি- তামিম
বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 07-07-2023
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সারা দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বৃহস্পতিবার কান্নাজড়িত কন্ঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষনা দিলেও সেখানে তার অভিব্যক্তি জন্ম দেয় হাজারো প্রশ্নের। আফগানিস্তানের সঙ্গে চলমান তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
এতে বাংলাদেশের অধিনায়ক হঠাৎ করেই এক ম্যাচ শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দেবেন। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ডেকে পাঠান আজ শুক্রবার। বিকেলের ওই বৈঠকে তামিম সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। এতে গত দুইদিনের রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির অবসান ঘটলো। তবে তামিমকে এ সিরিজে আর পাওয়া যাবে না। বিশ্বকাপের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে একটি টুর্নামেন্টের মধ্যে দিয়ে তিনি আবার ফিরবেন। আপাতত মাস দেরেকের মত ছুটিতে থাকছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারী বাসবভন গণভবনে বৈঠককালে তামিমের সাথে তার স্ত্রী,বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের পরের দিন, বৃহস্পতিবার তাড়াহুড়া করে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে নিজের অবসরের কথা জানান তামিম। ১৩ মিনিটের সাংবাদিক সম্মেলনে তামিম বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এই মুহূর্তেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি।’
তামিমের এমন সিদ্বান্তে অনেকটা হতাশা নেমে আসে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। নিজের সিদ্বান্ত থেকে তামিমকে সরে আসার জন্য অনুরোধ করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছিলো না।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে আজ সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন ভিন্ন এক তামিম। তিনি জানান, ‘আজ বিকেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে তার বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার পর তিনি আমাকে ক্রিকেটে ফেরার নির্দেশ দেন তিনি। আমি আমার অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করছি।’
তামিম আরও বলেন, ‘আমি যে কাউকেই না বলতে পারি, কিন্তু দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে না বলা অসম্ভব। পাপন ভাই যখন এখানে ছিলেন তখন মাশরাফি ভাই আমাকে ফোন করেছিলেন। তারাই এখানে বড় ফ্যাক্টর ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেড় মাসের বিরতি দিয়েছেন। আমি আমার চিকিৎসা সম্পন্ন করবো এবং আবারও ক্রিকেটে ফিরে আসবো।’
এ সময় বিসিবি’র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তার সংবাদ সম্মেলন দেখে আমার মনে হয়েছে, আবেগপ্রবণ হয়ে সিদ্বান্ত নিয়েছিলেন তামিম। আমি জানতাম, আমরা যদি একত্রে বসতে পারি, আমি সমাধান খুঁজে পাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে তার সাথে বসেছিলাম এবং সে শুধু জানিয়েছে অবসরের চিঠি প্রত্যাহার করছেন। অবসর নেননি তিনি। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে ছয় সপ্তাহের বিরতি নিয়েছেন। খুব শীঘ্রই ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি।’
তামিমের সিদ্বান্ত পরিবর্তনে স্বস্তি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে, পাপন বলেন, ‘অবশ্যই আমরা স্বস্তি পেয়েছি। আমাদের অধিনায়ককে ছাড়া আমরা কিভাবে খেলবো?’
উল্লেখ্য, প্রথম ম্যাচ খেললেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের বাকী দু’ম্যাচে খেলবেন না তামিম। প্রথম ম্যাচে ডিএল এ ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ৮ ও ১১ জুলাই বাকি দুই ম্যাচের জন্য অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে লিটন দাসকে। এবং তামিমের স্থানে দলে নেয়া হয়েছে রনি তালুকদারকে।