চাঁদ দেখাসাপেক্ষ আগামী ১ বা ২ মে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে ধর্মীয় উত্সব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই বছর প্রবাসের মুসলিম সম্প্রদায় একদিনে রোজা শুরু করেছেন। সেই জন্যই আশা প্রকাশ করেছেন, এবার এক সাথে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ইতিমধ্যেই প্রবাসের বিভিন্ন মসজিদের পক্ষ থেকে ঈদ জামাতের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। রমজানের শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রুকলিন এবং ব্রঙ্কসের বাংলাদেশি মালিকানাধীন দোকানগুলোতে ঈদ বাজার শুরু হয়েছে।
বিপণী বিতানগুলোতে চলছে ঈদের পোশাক বিক্রি। অন্যদিকে বাংলাদেশি মালিকানাধীন গ্রোসারিগুলোতে চলছে বিশেষ সেল। বাংলাদেশি মালিকানাধীন বিপণিবিতানের মালিকরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ থেকে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। তারা বলেন, অধিকাংশ দোকানেই বিশেষ সেল দেয়া হয়েছে। তবে দোকান মালিকনা জানান, অন্যান্য বছরের মত এবার বিপণিবিতানগুলোতে বেচাবিক্রি কম। কারণ হিসাবে তারা বলেন, অনেকেই এখন অনলাইনে মালামাল অর্ডার দিয়ে থাকেন। আগে এক সময় নিউইয়র্কে অনলাইন ব্যবসা চালু হলেও এখন ভারত, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশ থেকে মালামাল অর্ডার দিয়ে থাকেন।
একদিকে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ঈদ বাজার শুরুর পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি শুরু হয়েছে। এই সব এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবণতি হয়েছে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস এবং ওজনপার্কে। এই সব এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশি স্টোরগুলোতে ডাকাতি হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ প্রবাসীরাও হামলার শিকার হচ্ছেন। গত কয়েক মাসে জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশি এবং ভিনদেশিদের স্টোরে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের ৭৪ স্ট্রিটের বাংলাদেশি মালিকানাধীন ইস্ট ওয়েস্ট ট্রাভেল এবং একটি কাপড়ের দোকানে ডাকাতির হয়েছে। জানা গেছে, দুইজন কৃষ্ণাঙ্গ দোকানে ঢুকেই অস্ত্র দেখিয়ে মাহবুব চৌধুরীকে আটক করে এবং ক্যাশ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ডলার নিয়ে চলে যায়। কৃষ্ণাঙ্গ ডাকাত চলে যাবার পর পুলিশ কল করা হয়। পুলিশ এসে ভিডিও ফুটেজ দেখে। এর আগেও বাংলাদেশি মালিকানাধীন ভিরাসত রেস্টুরেন্টে একই কায়দায় ডাকাতি করা হয়। ঘটনা পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। অনেকেই পুলিশের এই কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছেন। গত কয়েক মাসে জ্যাকসন হাইটসে আরো কয়েকটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি হয়েছে। সেই সব ঘটনার সকল ডমুমেন্ট দেয়া হলেও পুলিশ আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ রিফর্ম এবং বেল রিফর্মের কারণে পুলিশও দৃর্বৃত্তদের গ্রেফতার করছে না। গত সপ্তাহেও ব্রঙ্কসে একটি টি মোবাইলের দোকানে দিনে দুপুরে ডাকাতি করা হয়েছে। এই ঘটনায় সাংবাদিক হাবিব রহমানে পিঠে বন্দুক ধরা হয় এবং তাকে লুটিয়ে পড়তে বলা হয়। এই সময় তিনি হাঁটুতে ব্যাথা পেয়েছে। কিছু দিন আগেও ব্রুকলিনে সাবওয়েতে বাংলাদেশির ওপর হামলা করা হয়েছে। নিউইয়র্কের আরো কয়েকটি এলাকায় বাংলাদেশিদের ওপর হামলা করা হয়েছে। কিন্তু এই সব ঘটনার কোন প্রতিকার নেই। নিউইয়র্কে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করেন এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানানো উচিত। কিন্তু বিড়ালের গলা বাধবে কে?