অধিকারের প্রতিনিধিদের হয়রানি বন্ধে জাতিসংঘের আহবান


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 12-07-2023

অধিকারের প্রতিনিধিদের হয়রানি বন্ধে জাতিসংঘের আহবান

মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সব ধরনের হয়রানিমূলক কর্মকান্ড বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। আগামী ১৭ জুলাই আদালতে অধিকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এক মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই জাতিসংঘের ওই বিশেষজ্ঞরা একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। এতে স্বাক্ষরকারীরা হচ্ছেন জাতিসংঘের তিন বিশেষ কর্মকর্তা পোর্টিয়ার ম্যারি ললর, আইরিন খান এবং ক্লেমেন্ট নাইলেতসোসি। 

বিবৃতিতে বলা  হয়, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করেছে অধিকার এবং এর প্রতিনিধিরা। কিন্তু এভাবে ফৌজদারি মামলার অপব্যবহার করে মানবাধিকার রক্ষাকারী ও সংগঠনগুলিকে নিশ্চুপ করে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এসব পদক্ষেপের কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে এবং এর ফলে অন্য সংগঠনগুলোও মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করা থেকে বিরত থাকতে পারে। এছাড়া জাতিসংঘ ও এর সংস্থাগুলির সঙ্গে সহযোগিতা থেকেও পিছিয়ে যেতে পারে অন্যরা।  

২০২২ সালে অধিকারের নিবন্ধন পুনর্নবীকরণ না করার সিদ্ধান্ত নেয় এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো (এনজিওএবি)। তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অধিকার ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ প্রচার করে, বিশ্বের কাছে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। আর এ কারণেই তাদের নিবন্ধন পুনর্নবীকরণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে এনজিওএবি।

তবে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা তাদের বিবৃতিতে বলেন, অধিকারের বিরুদ্ধে চলা মামলাটি বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মী  ও সংস্থাগুলোর ওপর চলমান হয়রানিকেই প্রতিফলিত করে। পাশাপাশি আইসিসিপিআর-এর আর্টিকেল ২২-এর অধীনে সংগঠনের স্বাধীনতা নিশ্চিতের যে কথা বলা আছে তারও স্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানান জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১০ বছর আগে অধিকার বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কিন্তু এখনও সংগঠনটির সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ‘ভুয়া, বিকৃত এবং মানহানিকর’ তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগে বিচার ব্যবস্থার হাতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বছরের ৫ই এপ্রিল একজন সাইবার ট্রাইব্যুনাল বিচারক অভিযুক্তদের পরীক্ষা করার পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়া বন্ধ করে দেন। তিনটি শুনানির পর প্রসিকিউটর আরও তদন্তের জন্য একটি আবেদন জমা দেন। এ নিয়ে আপত্তি জানান মানবাধিকার রক্ষাকারীরা। 

১৫ই মে বিচারক মানবাধিকার রক্ষাকারীদের আপত্তি বাতিল করে প্রসিকিউশনের অনুরোধ মঞ্জুর করেন। বিচারক আদালতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরও অনুমতি দেননি। কেনো এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো সেই ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। এই আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি, অধিকার প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সাংগঠনিক এবং ব্যক্তিগত উভয় পর্যায়ে মানহানির শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। বিবৃতিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে এটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় ন্যায্য বিচার নিশ্চিতের অধিকার লঙ্ঘনের একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)