পশ্চিমা জোট আরো কঠোর মনোভাবে


মাসউদুর রহমান , আপডেট করা হয়েছে : 02-08-2023

পশ্চিমা জোট আরো কঠোর মনোভাবে

প্রাচীন প্রবাদ ‘আকলমান্দ কী লিয়ে, ইশারা কাফি’। বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ বাক্য তৎপর্যপূর্ণ। কে আকলমান্দ, আর কার ইশারা কে বুঝবে- সেটাই এখন ঠাহর করা যাচ্ছে না। কারণ বাংলাদেশের নির্বাচনের ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাজোট যেভাবে একের পর পরামর্শ, বার্তা, উপদেশ দিয়ে চলেছে সেগুলোকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেশের জন্য ‘ভয়ানক’ মনে করছেন। বিশ্বের সুপার পাওয়ার ওই পশ্চিমা জোট ইশারা ইঙ্গিতেই তো বলবে। বাংলাদেশের রাজপথের নেতাদের মত হুমকি ধমকি দেবেন না। এমনটা কূটনীতিক ভাষাও না। বাংলাদেশ ওদের তুলনায় ঢের পেছনের সারির। কিন্তু ভূ-রাজনীতিতে এ দেশের প্রচণ্ড ডিমান্ড। অন্তত ওই দৃষ্টিকোন থেকে, বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের শুভাকাঙ্খি হয়ে বার্তাগুলো আসছে- এটা অস্বীকারের জো নেই। নতুবা বাংলাদেশের মত একটা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে এত হৈ চৈ হওয়ার কথা না। এতে কে লাভবান হবে, সে প্রশ্ন পরে। বিশ্বের বৃহৎ পরাশক্তিধরদের রক্তচক্ষু দেখানোর সাহস এখনও বাংলাদেশের মত দেশের হয়নি। ওই জোটের বিপরীতে আরেক প্রভাবশালী পরাশক্তি রাশিয়ার যখন ত্রাহি ভাব। সেখানে বেচারা বাংলাদেশ! তাছাড়া বাংলাদেশের আয়ের বড় উৎসটা যখন ওইসব দেশগুলো। যেখান থেকে ডলার আসলে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এ বার্তাগুলোকে খুব একটা গুরুত দেয় না। বিশেষ করে ক’জন মন্ত্রীর কথাবার্তা ও পাল্টা যেসব বক্তব্যের ফুলঝুড়ি, তাতে ওসব বার্তা অবহেলাস্বরূপ মনে হচ্ছে। একই সঙ্গে বিদেশী জোট যেসব কর্ম সাধনে নিষেধ ও উপদেশ দিয়েছেন, তাতে ভাবখানা থ্রোয়াই কেয়ার। যার এক উদহরণ হিরো আলম ইস্যুতে ১২ পশ্চিমাজোটের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তলব  (মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়েছে আমন্ত্রণ)। এর আগে জাতিসংঘের আবাসিক কর্মকর্তাকেও একই ইস্যুতে ডাকা হয়। ভিয়েনা চুক্তির আলোকে বাংলাদেশ এ তলব অনায়াসেই করতে পারে। শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের প্রায় সকল দেশ তারাও এটা করতে পারে। কিন্ত কার কার আওকাত কতটুকু বা শোভনীয়, সেটাও আমলে রাখা উচিৎ। বিশেষ করে আর্থিকদিকগুলো চিন্তা করলে। এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিভিন্ন সময় এসব দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যমূলক বক্তব্যে সরকারের মনভাব শক্ত অবস্থানের প্রমাণ দেয়।  একই সঙ্গে তাদের নির্দেশনা আমলে না নিয়ে পুলিশের যে কর্মকান্ড দেখা গেছে, তাতে পশ্চিমাদের এতদিনের নির্দেশনা, পরামর্শ, অবজ্ঞাতুল্য মনে হয়। 

এরপরও পশ্চিমাজোট তাদের বার্তা, পরামর্শ, উপদেশ সবকিছু অব্যাহত রেখেই চলেছে। প্রশ্ন জেগেছে, আসলে কে কার ভাষা বুঝতে পারছেন না। পশ্চিমা জোটসহ বিদেশীরা কি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সরকারের ভাষা বুঝছেন?  নাকি পশ্চিমাসহ বিদেশীদের ভাষা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বুঝতে পারছেন না। এটা এখন সরল প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। এ ভাষা বুঝা না বুঝায়- কী দুই পক্ষের কারোর কোনো ক্ষতির আশংকা রয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরটা কেউই সহজে দিতে পারছেন না। সমস্যার মূলে এটাই। 

দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাজোটের দৌঁড়ঝাপ চলছে। তাদের মূল ভাষা- বাংলাদেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র অনুপস্থিত। এ জন্য তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সনের সাধারণ নির্বাচন রেফারেন্স হিসেবে তুলে ধরছেন। বাইডেন প্রশাসন এ অজুহাতে তার গণতান্ত্রিক সম্মেলনের দু’বারই বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। একটি অংশগ্রগহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বার্তা তাদের। মার্কিন প্রতিনিধিগণ বলেছেনও যে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, তারা যেন তাদের প্রতিনিধি বেছে নেয়ার সুযোগ পান, কোনো রকম ভয়ভীতি ছাড়া। ওইটুকুই। একই ইস্যুতে গত মাসের মাঝামাঝি সফর করে গেছেন মার্কিন দুই শীর্ষ নেতৃত্ব আজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু। তার আগেও ভিক্টোরিয়া ন্যু ল্যান্ডসহ অনেকেই এসে গেছেন। কথা বলেছেন বিভিন্ন স্তরে। উইরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দলও বেশ ক’দিন ঘোরাঘুরি করে অনেক বৈঠক করেছেন। একই ইস্যুতে কথা বলেছেন।

আর কাকতালীয়ভাবেই পশ্চিমাদের এ বার্তা মিলে গেলে বিএনপিসহ বিরোধীদলসমূহের দাবির সঙ্গে। এ জন্যই তারা পেছনের দুইবারের মত নির্বাচন চান না। চান একটি নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়কের অধীনে নির্বাচন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সব মানতে রাজি, কিন্তু তত্ত্বাবধায়কে নাছোড়। সংবিধানমত চলবেন তারা। ফিরবেন না তত্ত্বাবধায়কে। এখানেই অভ্যন্তরীণ বড় বিরোধ। বিরোধীরা দাবি আদায়ে ক্রমশ কঠোর। তাদের সমার্থনেও প্রচুর সাধারণ মানুষ নেমে আসে মাঠে, রাজপথে। সাথে পশ্চিমাজোটের একধরনের সমার্থন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরেই যাবেন না বলে দৃঢ়তা। 

এমতাবস্থায় অহিংস আন্দোলন থেকে এবার মাঠে নেমেছে আন্দোলনে বিএনপিসহ অন্যান্য দল। বাংলাদেশের আইনশৃংখলাবাহিনীর বাধা সেখানে। এ নিয়ে এক দফা সংঘর্ষ ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। ওই দাবি আদায়ের অহিংস আন্দোলনেও কয়েকজনের প্রাণ গেছে বলে বিএনপির দাবি। 

বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি প্রসঙ্গ 

ওই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার ঢাকায় বিএনপি ও সমমনা দলের রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ছিল। সেটা পালন করতে যেয়ে পুলিশি বাধার সম্মুখীন। কর্মসূচির প্রতিটা পয়েন্টে অনেকটা রণক্ষেত্র হওয়ার উপক্রম। পুলিশ বিএনপির দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে আটক করেও শেষমুহূর্তে ছেড়ে দিয়েছে। ওই দুইয়ের মধ্যে আমানউল্লাহ আমানকে গাবতলী পয়েন্ট থেকে তার কর্মসূচির মাঝ থেকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে ছেড়ে দেয়। অপর এক পয়েন্ট থেকে আরেক কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্রকে বেড়ধক পিটিয়ে পুলিশ হাসপাতাল হয়ে ডিবিতে নিয়ে ঘন্টা চারেক পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া কয়েশ নেতাকর্মী আটক করা হয়েছে। বেড়ধক পেঠানো হয়েছে। যা দেশ বিদেশের সংবাদে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।

স্থানীয় এক মিডিয়ার তথ্য অনুসারে ওইদিন অবস্থান কর্মসূচি বাধাদান বা প্রতিরোধ করতে যেয়ে পুলিশ ৭৮৮ রাউন্ড সিসা ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। এছাড়াও ১৪৫ রাউন্ড টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যাবহার করা হয়েছে। পুলিশ স্পস্ট করে বলেছে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতিহীন এক কর্মসূচি প্রতিরোধ করতে ওইসব কিছু ব্যবহার করেছেন তারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে ওই ঘটনায় ৭০০ জনের মত মানুষ গ্রেফতার হয়েছেন। এ নিয়ে অনেক ব্যাখ্যা পাল্টা ব্যাখ্যা রয়েছে। প্রসঙ্গটা সেদিকের নয়। বলা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক খবর মাধ্যমের কথা। 

এই ঘটনার কড়া প্রতিবাদ এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকে। 

১৪ কংগ্রেসম্যানের সেই চিঠি

শনিবারের কর্মসূচি ঘটনার কিছু আগে বাংলাদেশের ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কংগ্রেসম্যান তাদের দেশের জাতিসংঘে নিয়োজিত দূতের কাছে চিঠি দেয়। সে চিঠিতে ভয়ানক কিছু কথাবার্ত উল্লেখ করেছেন তারা। এটাও বুঝতে হবে এটাও একটা ইশারা তুল্য। কারণ কংগ্রেসম্যানরা বাংলাদেশের লবিংয়ের লোভে পরে ওই বিবৃতি দিয়েছেন, এটা ভুল ধারণা করাই শ্রেয়। মার্কিন নীতি এমনই। তাদের রাষ্ট্রের ইচ্ছার প্রতিফলনগুলো এভাবেই কোনো না কোনো মাধ্যমে প্রকাশ পায়। বাস্তবে এসব কথার গুরুত্বটা তারা দিয়ে থাকেন। আমলে নেন রাষ্ট্রীয়ভাবে।    

বিবৃতিতে ১৪ কংগ্রেসম্যান জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দুত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ডকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের সন্ত্রাস, নির্যাতন, এমনকি বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ জানাতে তাঁরা এ চিঠি লিখেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসসহ অনেক মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভয়ভীতি, হামলা, মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড, নির্যাতন, গুম, এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। এর সঙ্গে তাদের কিছু শুপারিশমালাও দেয়া হয় ওই চিঠিতে। সেখানে তারা উল্লেখ করে-

এক. জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ অবিলম্বে স্থগিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের সহিংস কর্মকাণ্ডের যে অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করা।

দুই. মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত র‍্যাবের কোনো সদস্যকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন করার বিষয়টি সাময়িকভাবে বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ।

তিন. বিশ্বের নিরপেক্ষ সরকারগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে জাতিসংঘ বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন তত্ত্বাবধান ও পরিচালনায় অংশ নেবে। এতে ভোটারদের ভয়ভীতি, হয়রানি বা তাঁদের ওপর হামলা রোধে শান্তিরক্ষী বাহিনী রাখার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’

চিঠির শেষাংশে বলা হয়, তাঁরা বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছেন, যাঁরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের সহিংসতার অবসান চান। 

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেড ডিপার্টমেন্ট 

এরপর গত শনিবার (২৯ জুলাই) বিএনপি সহ বিরোধী দলের অবস্থান কর্মসূচির ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেড ডিপার্টমেন্ট উদ্বেগ জানায়। সেখানে ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি মিলার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “বাংলাদেশে শনিবারের বিক্ষোভে যেভাবে ভীতি প্রদর্শন এবং রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বলবো তারা যেনো পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষভাবে এসব ঘটনার তদন্ত করে এবং এসবের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসে। বাংলাদেশের জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারে, তাদের দাবির পক্ষে কথা বলতে পারে সেই নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।”

মুখপাত্র মিলার বলেন, “আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে আহবান জানাবো তারা যেনো মৌলিক স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনকে সম্মান করে এবং সহিংসতা, হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকে। পরিশেষে বলবো, সেটা হলো- নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হবার বিষয়টাতে সকলের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। ভোটার, রাজনৈতিক দল, তরুণ সমাজ এবং পুলিশের ভূমিকা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন  হতে পারেনা।” 

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল 

একইভাবে ওই ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে শঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয় বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আগামী মাসগুলোতে আরও সহিংতা ও অস্থিরতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘনের হুমকিও বাড়ছে। সে কারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাটা জরুরি। কর্তৃপক্ষের উচিত হবে উত্তেজনা কমানো। যারা মানবাধিকার রক্ষা করে সভা-সমাবেশ ঘিরে পুলিশি সেবা দিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে শুধু সেসব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ব্যবহার করতে হবে। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অতি প্রয়োজন হলেই কেবল ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে। কোনোভাবেই সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে আগ্নেয়াস্ত্র ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা যাবে না। অ্যামনেস্টি বলেছে, নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের পরে মানবাধিকার পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। বিক্ষোভকারীদের দমন না করে কর্তৃপক্ষের উচিত কথা বলার স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার বাস্তবায়নে সহায়তা করা। 

পরিশেষে

বাংলাদেশ ইস্যুতে ইদানিং পশ্চিমাজোট ক্রমশই একটু বেশিই খোঁজ খবর রাখছেন এটাই প্রমাণিত। মার্কিনীদের একই ইস্যুতে ভিসানীতি প্রণয়নটাও তো এক ধরনের ভদ্র থ্রেড। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো শান্তিপূর্ণ হওয়া যেমন বাঞ্জনীয় তেমনি বিদেশীদের ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি বুঝানোও জরুরি। এখানে হুমকির জবাবে হুমকি দেয়ার মত অবস্থান এখনও বাংলাদেশর হয়ে ওঠেনি। তাছাড়া যুগ যুগ ধরেই বাংলাদেশ ইস্যুতে বিদেশীদের নাক গলানোর অভ্যাস হওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারাই করে দিয়েছেন। এটাতে সাধারণ মানুষ অর্ন্তভুক্ত নন। ফলে দেশের ও সাধারণ মানুষের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হোক এমনটা মহান মুক্তিযুদ্ধে জানমাল উজাড় করে দিয়ে দেশ স্বাধীন করা এ নীরিহ জনগণ কখনই চাইবে না। ফলে এটা যত তাড়াতাড়ি সংশ্লিষ্ট উভয়পক্ষ ‘পশ্চিমাদের ইশারা’ বুঝবেন ততই মঙ্গল এটা আর বলারও অপেক্ষা রাখে না।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)