ওমানে শ্রমবাজারে নিষেধাজ্ঞায় রেমিট্যান্সে দুশ্চিন্তা


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 08-11-2023

ওমানে শ্রমবাজারে নিষেধাজ্ঞায় রেমিট্যান্সে দুশ্চিন্তা

দেশের রিজার্ভ নিয়ে নাভিশ্বাস রীতিমতো। বিদেশ থেকেও তুলনামূলক কম আসছে রেমিট্যান্স। সবকিছু বিবেচনা সরকার উদ্যোগ নিয়েছে রেমিট্যান্সে প্রায় দ্বিগুণ প্রণোদনা বৃদ্ধির। কার্যকর হয়ে তার সুফলও পাওয়া শুরু করেছে। কিন্তু এমনি মুহূর্তে শ্রম বাজার থেকে এসেছে এক দুঃসংবাদ। ওমান বাংলাদেশিদের সব ধরনের ভিসা স্থগিত করেছে। এতে করে শ্রমবাজার থেকে আসা রেমিট্যান্সের ওপর বড় ধরনের একটা ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলো। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে ওমান বাংলাদেশের বড় একটা শ্রম বাজার। দূতাবাস সূত্রে খবর মিলেছে বাংলাদেশের প্রায় ৭ লাখ লোক ওমানে রয়েছেন বিভিন্ন কাজে। তাহলে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন ওমান সরকারের?  এ নিয়ে নান বিশ্লেষণ হলেও ওমান জানিয়েছে, কোনো রাজনৈতিক কারণে এ ভিসা স্থগিতকরণের সিদ্ধান্ত তারা নেয়নি। বরং তাদের দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকদের সেখানকার শ্রমবাজারের সঙ্গে সংগতি রাখতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। সে দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িক এমন ভিসা কার্যক্রম স্থগিতকরণের সিদ্ধান্ত। 

ওমানের রয়্যাল পুলিশ এক ঘোষণায় জানিয়েছে বাংলাদেশের কোনো ‘টুরিস্ট’ কিংবা ‘ভিজিট ভিসা’ নিয়ে ওমান গেলে সেটি ‘ওয়ার্ক ভিসায়’ পরিবর্তন করা যাবে না। গত ৩১ অক্টোবর থেকে সব দেশের জন্য এটি কার্যকর করা হয়েছে। ওমানের জনসংখ্যা ৫০ লাখের মতো। বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, ওমানে ২০ লাখের মতো প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা ৭ লাখের ওপরে। 

ঢাকায় ওমান দূতাবাসের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে যে বিষয়টি জানিয়েছে তা হলো, ‘এটি ওমানি শ্রম বাজারের চাহিদা ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার একটি প্রায়াস’ যার উদ্দেশ্য বর্তমান শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা উভয়ের অধিকার নিশ্চিত করা।

ওমানে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, সেখানে যত বাংলাদেশি আছেন, সে তুলনায় কর্মসংস্থান নেই। ফলে অনেকেই যারা আগে থেকে চাকরি নিশ্চিত করে যাচ্ছেন না। তাদের অনেককে বেকার থাকতে হচ্ছে অথবা স্বল্প মজুরিতে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, যেটা তাদের শ্রম অধিকার খর্ব করে।

বিবিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজারে ওমান এগিয়ে গেছে অনেক। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসেবে ২০২২ সালে সৌদি আরবের পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ওমান। সে বছর ওমানে গিয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি।

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি আরো জানায়, বাংলাদেশিদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে দেখা গেছে এমন নিষেধাজ্ঞা, সৌদি আরবেও ছয়-সাত বছর ছিল এমন নিষেধাজ্ঞা, এটাও সেরকমই একটা নিষেধাজ্ঞা। এছাড়াও মালয়েশিয়াতেও চার বছরের মতো বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া বন্ধ ছিল, যেটা ২০২২ সালের আগস্ট মাস থেকে আবার শুরু হলেও পুরাদমে এখনো চালু হয়নি। বাহরাইনেও বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ ছিল প্রায় সাড়ে চার বছর। পরবর্তী সময়ে এটি আবারও চালু হয়েছে।’ 

তবে এটা ঠিক, এ নিষেধাজ্ঞা হয়তো উঠে যাবে। তবে সময় লাগবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা কতদিন সেটাই এখন মুখ্য। তাছাড়া বাংলাদেশের যেখানেবৈদেশিক রিজার্ভ সংকট, সে মুহূর্তে এমন খবরটা এখন মহাদুঃসংবাদই বটে। যে খবরে রীতিমতো দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অর্থনৈতিক বিষয়য়ক থিংক ট্যাংকদের।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)