জ্বালানিতে রাশিয়ার পাল্টাব্যবস্থা সংকট পর্বতশৃঙ্গে নিয়ে যাবে


বিশেষ প্রতিবেদক , আপডেট করা হয়েছে : 11-05-2022

জ্বালানিতে রাশিয়ার পাল্টাব্যবস্থা  সংকট পর্বতশৃঙ্গে নিয়ে যাবে

 রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সূচনা থেকেই জ্বালানি সংকট ঘনীভূত হচ্ছিলো। প্রতিক্রিয়ায় প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুদ্র স্বার্থে রাশিয়ার ওপর অবরোধ দিলো। পশ্চিম ইউরোপের মিত্র দেশগুলো সেই পথে হাঁটতে যেয়ে টের পেলো ৪৫ শতাংশ রাশিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভর ন্যাটো দেশগুলোর বিকল্প নেই বললেই চলে। 

যুক্তরাষ্ট্র কখনো চায়নি, তার পশ্চিম ইউরোপিয় মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার গ্যাস এবং তরল জ্বালানির ওপর একান্তভাবে নির্ভর থাকুক। পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছিলো। তবে এখনো যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি (প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা, ২৪/৭ নিশ্চিত সরবরাহ, মূল্য) জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিস্থাপক নয় সেটি ইউরোপ টের পেলো গত শীতের জ্বালানি সংকট থেকে।

এদিকে সমর সরঞ্জাম সিন্ডিকেট, জ্বালানি সিন্ডিকেট জো বাইডেনকে  ইউক্রেনকে পরাশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে উৎসাহিত করেছে বলাই যায়। খাদ্যে, জ্বালানিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ, পারমাণবিক শক্তিধর রাশিয়া কিন্তু ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান,মিসর বা আফগানিস্তান নয়, যে শক্তি দিয়ে জয় করা যাবে। আর বৈষয়িক রাজনীতির কারণে চীন,ভারতসহ বেশ কিছু দেশ যুক্ত রাষ্ট্রের চাপে রাশিয়াবিরোধী অবস্থান নিবেনা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ইউক্রেনের ইহুদি শাসকের প্রতি সহানুভূতিশীল মনে হচ্ছে না।  যতদিন যাবে, জ্বালানি সংকটে পড়বে বিশ্ব। 

পাইপলাইন গ্যাস সরবরাহের বিকল্প কখনো এলএনজি হতে পারেনা। কিছুদিন দেখার পর, রাশিয়া ঘোষণা দিলো শত্রু ভাবাপন্ন দেশগুলোকে রাশিয়ান জ্বালানি পাওয়া অব্যাহত রাখতে ডলারের পরিবর্তে রুবেল মূল্য পরিষদ করতে হবে। নাহয় সরবরাহ বন্ধ করে দিবে। কিছু দেশ সারা দেয়, আবার অনেকেই ভাবনায় পড়ে। কেউ কেউ অস্বীকার করে বসে।

পোল্যান্ড আর বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করলো রাশিয়ান জাতীয় প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম, যুদ্ধ চলছে। ৯ মে রাশিয়ান সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করবে বলে একটা ধারণা আগেই দেয়। কী করবে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি পরেও। হয়তো আরো কিছু দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হবে। এমনিতেই বিশ্ব বাজারে জ্বালানির অগ্নিমূল্য। ইউরোপে কোথায় নেই অন্যান্য যারা আমদানিনির্ভর তাদের পড়তে হবে মহাবিপদে।

বাংলাদেশ ভারত চীন এবং অন্য কিছু দেশের মতো রাশিয়া থেকে স্বল্পমূল্যে জ্বালানি আমদানির জন্য যোগাযোগ করতে পারে। দেশের অর্থনীতি কিন্তু দীর্ঘসময় উচ্চমূল্যে জ্বালানি আমদানির সহায়ক হবেনা। এমন সময় আসতে পারে অর্থ থাকলেও জ্বালানি পাবেনা বাংলাদেশ। জ্বালানি আমদানিতে সতর্কতার পাশাপাশি সকল পর্যায়ে সরকারের বিলাসিতা বর্জন,অপ্রোজনীয় ব্যয় কমাতে হবে।

সরকারি কর্মকর্তা যারা বড় বড় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন, তাদের যথেচ্ছা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জ্বালানি চুরি ডাকাতি বন্ধ করতে হবে। মন্ত্রী সাংসদদের ‘আপনি আচরি ধর্ম’ উপমা স্থাপন করতে হবে। না হয় ২০২২ শেষ নাগাদ আর্থিক দুর্গতি হতে পারে। বাংলাদেশকে অবশ্যই গতানুগতিক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে ব্যতিক্রমী কিছু করতে হবে। মনে রাখতে হবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)