বিএনপির মানববন্ধনে মানুষের ঢল, যে আহ্বান সেলিমা রহমানের


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 10-12-2023

বিএনপির মানববন্ধনে মানুষের ঢল, যে আহ্বান সেলিমা রহমানের


১০ দফা অবরোধ শেষে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপির কর্মসূচি ছিল মানবন্ধনের। দেশব্যাপী প্রতিটা জেলা শহরের এমন কর্মসূচির ধারা অনুসারে রাজধানীর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাসের সম্মুখে মানুষের ঢল নামে। গত ২৮ অক্টোবরের পর ২৯ অক্টোবর থেকে বিএনপি এমন প্রকাশ্যে প্রথম কোনো কর্মসূচি করলো। ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপির শীর্ষ নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ফ্রন্ট লাইনে থাকা নেতাকর্মীদের যেভাবে ধরপাকড় করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে সেটাকে বিএনপি নজীরবিহীন বলেছে।


এরপরও আজ (রোববারের) মানববন্ধনের কর্মসূচিতে এত বিপুল পরিমান মানুষের উপস্থিতি বিস্ময় জেগেছে। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেছেন নেতাকর্মীদের। সেলিমা রহমান মনে করেন - কোনো দোকান খুলবে না, মানুষ বিদেশ ভ্রমণও বন্ধ করে দেবে, এমনকি বিয়ের আয়োজনও সংক্ষিপ্ত পরিসরে হবে। এভাবে সরকারকে প্রতি পদক্ষেপে ‘না’ বলে ‘প্রতিরোধ গড়ে’ তুলতে পারলে সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার হয়ে যাবে।


প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির মানবন্ধন কর্মসূচিতেমানুষের ঢল/ছবি সংগৃহীত


রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলটির মানববন্ধনে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সময় সেলিমা রহমান বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছে, মিছিলে মিছিলে সারা বাংলাদেশ মুখর। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যিনি বিএনপিকে সংগঠিত করে নতুন করে দাঁড় করিয়েছেন, তার আহ্বান, আপনারা যে যেখান থেকে পারেন সরকারকে ‘না’ বলুন, ‘না’ বলুন, ‘না’ বলুন। সরকারের কোনো কিছুতে অংশগ্রহণ করবেন না। এমনকি দোকান শ্রমিক যারা আছেন সবাই দোকানপাট বন্ধ করে দিন, আপনাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করে দিন, বিয়ে-শাদীর পার্টিগুলো ছোট করে দিন।”
বিএনপির নেতা-কর্মীরা পরিবারের সঙ্গে থাকতে না পেরে ‘বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তাদের কথা চিন্তা করে আপনারা আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আপনারা দেখবেন অতি শিগগির জনগণ এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাবে।”
বিএনপির এমন কর্মসূচির দিনে সকাল ১১ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে এই মানববন্ধন শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে রূপ নেয় জমায়েতে। দুপুর ১২টার আগেই নেতারা বক্তব্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন।


জনগণকে রাজপথে নামার ডাক দিয়ে সেলিমা রহমান বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। তারা (ক্ষমতাসীনরা) লাঠিয়াল বাহিনী, হেলমেট বাহিনী তৈরি করে জনগণের ওপর অত্যাচার করছে। এটা বেশি দিন চলবে না। আমি বলব, মনে সাহস রাখুন। আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব। মিছিলে মিছিলে সারা বাংলাদেশ ভরে দেব। তবু এই সরকারের নির্বাচন আমরা মানব না, মানব না।”
‘বাবাকে না পেলে ছেলেকে নিয়ে যায়’
তিনি বলেন, “বাবাকে না পেলে ছেলেকে নিয়ে যায়, ছেলেকে না পেলে মাকে নিয়ে যায়। গতকাল  (রোববার) মানবন্ধন করেছে ‘মায়ের ডাক’। সেখান একজন নারী বলল, তার বিরুদ্ধে দুটি খুনের মামলা দেওয়া হয়েছে। সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই হল দেশের অবস্থা, এই হল মানবাধিকার পরিস্থিতি।”

প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে মিছিলে মুখরিত বিএনপির নেতাক নেতা-কর্মী/ছবি সংগৃহীত


‘মানবাধিকার লঙ্ঘনে’ বাংলাদেশ এখন বিশ্বে প্রথম দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বগ্রাসী ‘দানব’ বাংলাদেশ পরিচালনা করছে।”

বরিশালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তাদের লাঠিপেটা করেছে প্রশাসন। আমরা প্রশাসনকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলতে চাই, ‘আপনারা বিবেক দিয়ে কাজ করুন। বিচারকরা একজনের নির্দেশে চলছেন। যিনি শাসন করছেন, তিনিই সব নির্দেশ করছেন।”
বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টো জয়নুল আবদিন ফারুক, তাসসিনা রুশদীর লুনা, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, রেহানা আখতার রানু, মীর নেওয়াজ আলী, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদও বক্তব্য রাখেন।



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)