জ্বালানি সংকট উত্তরণ হবে কি


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 20-12-2023

জ্বালানি সংকট উত্তরণ হবে কি

কী বিচিত্র আমাদের বাংলাদেশ! মাটির নিচে উঁচুমানের কয়লা সম্পদ। পরিবেশ রক্ষার দোহাই দিয়ে পরিবহন সংকট এবং অধিক মূল্য দিয়ে কয়লা আমদানি করে আর্থিক সংকটে বিদ্যুৎ খাত। স্থলভাগ এবং সাগরে বিপুল গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা। অথচ উত্তোলন কার্যক্রম উপেক্ষা করে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকছে দেশ। সেখানেও অর্থ সংকট। একসময় বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে ভারত গ্যাস আমদানি করতে চেয়েছিল। এখন নিজেদের গ্যাস মাটির নিচে রেখে নিজেরা সংকট সৃষ্টি করে ভারত থেকে গ্যাস আমদানির পরিকল্পনা চূড়ান্ত প্রায়। পেশাদারদের উপেক্ষা করে আমলাদের দিয়ে গ্যাস সেক্টরকে পঙ্গু বানানো হয়েছে। 

ভুল সিদ্ধান্তে বাপেক্সকে প্রকৃতভাবে কারিগরিভাবে সক্ষম করা হয়নি। গ্যাসের সংস্থান না করেই বিপুল বিনিয়োগ চাপিয়ে আর্থিকভাবে পঙ্গু করা হচ্ছে জিটিসিএলকে। পেট্রোবাংলার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের গ্যাস সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে কোনো ধারণাই নেই। গ্যাস দুর্ভিক্ষের সময় ভোলার আবিষ্কৃত গ্যাস অলস পড়ে রয়েছে। প্রায় একদশক আগে ঈশ্বরদী থেকে ভেড়ামারা-যশোর হয়ে খুলনা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন পাইপ নির্মিত হলেও গ্যাস দেওয়া হয়নি। কিন্তু গ্যাস সংকট আরো ঘনীভূত হওয়া সত্ত্বেও বগুড়া থেকে দিনাজপুর হয়ে রংপুর পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ২০০-৩০০ বিলিয়ন ঘনফুট ক্ষুদ্র গ্যাসফিল্ড আবিষ্কার করেই বিশাল অর্জন বলা হচ্ছে। গ্যাস কূপ খননকালে তেলের উপস্থিতি দেখেই বলা হচ্ছে, বিশাল তেলের ভান্ডার আবিষ্কার হয়েছে। একটি কূপের গ্যাস বা তেল সঞ্চয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হলে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিছুই করা হয়নি। আমি বাপেক্সের কৃতিত্বকে খাটো করছি না। কিন্তু জনগণকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়া ভুল। 

আমি পেট্রোবাংলার বর্তমান ব্যবস্থাপনা নিয়ে শঙ্কিত। পরিকল্পনা, পরিচালনায় ঘাটতি থাকায় পেট্রোবাংলা গতিশীল নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ। গ্যাস সেক্টরে মধ্যম সারির অনেক মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তা আছে। কিন্তু পেট্রোবাংলা তাদের কাজের পরিবেশ দিতে ব্যর্থ। আশা করি প্রধানমন্ত্রী উপলব্ধি করছেন পেট্রোবাংলাকে অভিজ্ঞ পেশাদারদের দিয়ে শক্তিশালী না করা হলে কখনো জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা ছাড়া বাংলাদেশ কিছুতেই উন্নত দেশে পরিণত হবে না। বুদ্ধিমান সবাই বুঝতে পারছে প্রভাবশালী প্রতিবেশীকে এবং সুযোগসন্ধানী কিছু আমলা ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার কারণেই নিজেদের কয়লা, গ্যাসসম্পদ মাটির নিচে ফেলে রাখা হচ্ছে। আগামী প্রজন্ম সময়মতো সবকিছুর হিসাব নেবে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)