অবৈধদের আশ্রয় অধিকার পুনর্বহালে সিটি হলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 27-12-2023

অবৈধদের আশ্রয় অধিকার পুনর্বহালে সিটি হলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ

নিউইয়র্ক সিটি হলের বাইরে গত ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার অভিবাসী অধিকার কর্মী, ইলেকটেড অফিসিয়াল, কমিউনিটি লিডার, শ্রমিক লিডার এবং শিক্ষকদের একটি গ্রুপ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। তাদের এই প্রতিবাদ সমাবেশের কারণ হলো নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস কর্তৃক বাতিলকৃত ‘আশ্রয়ের অধিকার’ আইনটি পুনর্বহাল করা। আশ্রয়ের অধিকার আইনে নিউইয়র্ক সিটিতে নতুন আসা অবৈধ অভিবাসীদের সেন্টার দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু মেয়র সেই আইনের পরিবর্তে বর্তমানে ৬০ দিন আশ্রয় দেওয়ার কথা বলেন। আইনটি পুনর্বহাল করার পাশাপাশি তারা অবৈধ অভিবাসীদের সঙ্গে মেয়রের বিমাতাসূলভ আচরণে বন্ধের দাবি জানিয়েছে। 

নিউইয়র্ক সিটিতে সব নাগরিকের আশ্রয় পাওয়ার একটি মৌলিক অধিকার রয়েছে। আশ্রয়ের জন্য যে কেউ আবেদন করলে শহরটিকে জরুরি আবাসন প্রদান করতে হবে। সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস কর্তৃক গত অক্টোবরে জারি করা একটি আদেশের অধীনে গৃহহীন অভিবাসী এবং তাদের সন্তানদের শহরের আবাসনে ৬০ দিনের জন্য অনুমোদন করেছেন। তিনি বলেছেন, ৬০ দিনের বেশি সিটি কর্তৃপক্ষ আবাসন দিতে পারবে না। ইতিমধ্যেই নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ অনেক আশ্রয় প্রার্থী পরিবারগুলোকে নোটিশও দিয়েছে। সিটি কর্তৃপক্ষ যারা নোটিশ পেয়েছেন তাদের জানুয়ারির শুরুতে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজনকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের পরিচালক লিজা শোয়ার্টজওয়ার্ল্ড বলেছেন, ৬০ দিনের সময়সীমা শুধু সেই পরিবারগুলোকে উপড়ে ফেলার জন্য করা হয়েছে। এসব পরিবার নিজ দেশেও নানাভাবে নিগৃহীত এবং নতুন আইনে এখানে এসেও বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এই পরিবারগুলোকে আবারও নিগৃহীত করার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমাদের আরো মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করতে হবে।

ইউনাইটেড ফেডারেশন অব টিচার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট কারেন আলফোর্ড বলেছেন, এখানে এসে আমাদের ভালো থাকার কথা। তাদের নিরাপত্তা থাকার কথা, তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুযোগ থাকার কথা। যাদের সন্তানরা ইতিমধ্যে স্কুলে ভর্তি হয়েছে, স্থান পরিবর্তন করলে তাদের কী অবস্থা হবে? একটি শহর হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে। এই নীতি অভিবাসী তিনি বলেন, একটি স্কুলে টানা থাকা একটি শিশুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবাগত অভিবাসী ছাত্রছাত্রীরা খুব খুশি স্কুলে যেতে পেরে। কিন্তু নতুন আইনের কারণে আমরা জানি না আগামী দিনে তাদের সঙ্গে কী হতে চলেছে? কোনোভাবেই তারা আর নিরাপদ থাকতে পারছে না, না বসবাসের ক্ষেত্রে, না তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে। নতুন নিয়মে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমান উইলিয়ামস বলেছেন, এই পরিবারগুলো নিউইয়র্ক থেকে তাদের আমেরিকান স্বপ্নের যাত্রা শুরু করছে। আমরা নিউইয়র্কবাসী তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই আমরা যা করছি তা মানবিকভাবে করার চেষ্টা করছি। তাই আমি আশা করছি, বিষয়টি নিয়ে মেয়র আমাদের সঙ্গে বসবেন এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবেন। আশা করছি, এটি দ্রুতই হবে।

মেয়র অ্যাডামসের অফিসে ই-মেইল করে মন্তব্য চাওয়া হলেও তার মুখপাত্ররা কোনো মন্তব্য করতে বা ই-মেইলের প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে মেয়র অ্যাডাম হতাশ নিউইয়র্কবাসীকে নিউইয়র্কের সিটি হলের পরিবর্তে ওয়াশিংটনে রাস্তায় প্রতিবাদ করা উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, অভিবাসীদের ঢেউ সামলানোর জন্য আরো ফেডারেল সাহায্যের প্রয়োজন। আমরা বাইডেন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে আবেদন করেছি। রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রশাসনের কাছ থেকে খুব কম ফান্ড, সমন্বয়, সমর্থন পেয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডিসিতে যেতে হবে এবং সমাবেশ করতে হবে।

সিনেটের মেজরিটি লিডার চাক শুমার ও ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ মাইনরিটি লিডার হেকিম জাফারি দুই জনই নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও নিউইয়র্ক সিটিতে নবাগত ইমিগ্র্যান্টদের সাহায্য করতে বা ফেডারেল ফান্ড দিতে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। নিউইয়র্ক সিটির তথ্য মতে, এই বছর পাঁচ বরোতে ১ লাখেরও বেশি অভিবাসী এসেছে এবং গত বসন্ত থেকে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার অভিবাসী এসেছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)