আওয়ামী সিন্ডিকেট কবলিত দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে দিশেহারা মানুষ- রিজভী


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 21-01-2024

আওয়ামী সিন্ডিকেট কবলিত দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে দিশেহারা মানুষ- রিজভী

নির্বাচনের পর বাজারের নিত্যপণ্যের দাম মূল্য বৃদ্ধি পেছনে ক্ষমতাসীনদের ‘কারসাজি’ দেখছেন রুহুল কবির রিজভী। রোববার দুপুরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ বাজারদরের ভয়াবহ অবস্থা। আওয়ামী সিন্ডিকেট কবলিত দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। মানুষ চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে, সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, ধার—দেনায়ও সংসার চালাতে পারছে না। সম্ভবত প্রতারনার ডামি ভোট বর্জনের কারণে জনগণকে শায়েস্তা করতে নির্বাচনের পরই দেশের মানুষকে ঘুষখোর, মুনাফাখোর, দুর্নীতিবাজ, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাতে নতুন করে সমর্পন করেছেন শেখ হাসিনা।”

‘‘ ডামি সরকারের শপথের পরদিনই কাঁচা মরিচ থেকে শুরু করে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম হঠাৎ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করা অভিসন্ধিপ্রসূত। ক্ষমতাসীনরা শুধু গণতন্ত্রকামী রাজণৈতিক দল নয়, তার প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ হচ্ছে জনগনের বিরুদ্ধে। এর কারণে ৭ জানুয়ারির পর থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে মানুষে যেটিতে খেয়ে পড়ে বাঁচবে সেই জায়গাগুলোকে টার্গেট করে তারা সেটার দাম বৃদ্ধি করছে।”

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্যে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বৃদ্ধির অভিযোগও করেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘‘ ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। প্রতি কেজি চালের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। দশ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর কথা বলে একসময় ভোট চাইলেও বর্তমানে মোটা চালের দামও ৫৫/৬৫ টাকার নীচে নয়। অন্যান্য চাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।সিন্ডিকেটের লোকেরা ভোট ডাকাতির নির্বাচনে সহযোগিতা করে এখন ফায়দা নিতেই চালের দাম বৃদ্ধি করেছে। যাকে খাদ্যমন্ত্রী করা হয়েছে তিনি চাল মিলের মালিক। খাদ্যমন্ত্রী চাল সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পন করেছেন।”

‘‘ বাজারে দায়সারা তদারকির নামে চুনোপুঁটি ধরতে ব্যস্ত প্রশাসন। রাঘব বোয়ালরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বাস্তবতা হলো…কোন চেষ্টায় কাজ হবে না। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙবে না।ডামি সংসদের প্রায় সবাই ব্যবসায়ী। মজুতদার, মিল মালিক, লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী, লাইসেন্সবিহীন ব্যবসায়ী সব সরকারের লোক।সরকারের টপ টু বটম সিন্ডিকেট করে দেশ লুটেপুটে খাচ্ছে।”

নির্বাচনের আগে গরুর মাংসের দাম কমানো বিষয়টি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘‘ গরুর মাংস কেজি ৬০০/৬৫০ টাকা করা হয়েছিল ভোটারদের তুষ্ট করতে। কিন্তু এখন সেই গরুর মাংশ ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনের পর দিনই এক লাফে ৭০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাহলে একদিনেই হাটে-খামারে গরুর দাম বেড়ে গেল ?”

‘‘ সিন্ডিকেট করে যে সব কিছুর দাম বাড়ানো হয় গরুর মাংস তার বড় উদাহরণ। কত রকমারি প্রতারনা জানে এই ডামি সরকার। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকেই অত্যাচারী আর অনাচারী হয়ে ওঠা একটা রাজনৈতিক দল।”

‘পূঁজিবাজারের নতুন কারসাজি’


রিজভী বলেন, ‘‘শুরু হয়েছে নতুন করে কারসাজি। আবারও শেয়ার বাজারে ধ্বস নেমেছে। দীর্ঘদিন মার্কেটকে ধরে রাখা ফ্লোর প্রাইস হুট করে তুলে দেয়া হয়েছে কাউকে কাউকে বিশেষ সুবিধায় শেয়ার ক্রয়ের জন্য। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই, কিন্তু লুটপাটের টাকা আছে শেখ হাসিনার উপদেষ্টাসহ আওয়ামী নেতাদের কাছে।”

‘‘ পূঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা-বিএসইসির এই ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার হঠকারী সিদ্ধান্তে আবারও অসংখ্য বিনিয়োগকারীকে পথে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতারণা-ডামি নির্বাচনের পরেই তারা ফ্লোরপ্রাইজ তুলে নিয়েছে। বিএসইসির এই সিদ্ধান্তে আমরা তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই এবং অবিলম্বে আগে যে ফ্লোর প্রাইস ছিলো তা পুনর্বহালের জোর আহবান জানাচ্ছি।”

 

১৯৯৬ সাল ও ২০১০ সালেও আওয়ামী লীগ সরকার কারসাজি করে লক্ষ-কোটি টাকা লোপাট করার তথ্যও তুলে ধরেন রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, মীর নেওয়াজ আলী, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আমিনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)