ফুডকোটের মালিকদের মহানুভবতা


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 14-02-2024

ফুডকোটের মালিকদের মহানুভবতা

বাংলাদেশি জ্যাকসন হাইটসে কয়েকজন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফুডকোট। বলা চলে একের ভেতর অনেক। সুপার মার্কেট থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট-সবই ছিল। কিন্তু মালিকানা নিয়ে সমস্যার কারণে তারা সেই ব্যবসা রাখতে পারেননি, বিক্রি করে দেন। পরে সেই দোকানের নাম দেওয়া হয় ইত্যাদি। দোকান বিক্রির সময় পুরো অর্থ পাননি ইত্যাদির মালিকের কাছ থেকে। কিস্তিতে দেওয়ার কথা ছিল। ফুডকোটের মালিকরা যখন দোকানটি বিক্রি কর দেন পুরো অর্থ না দেওয়ার কারণে অনেক পাওনাদারকে অর্থ দিতে পারেননি। সম্প্রতি ইত্যাদির মালিক তাদের ৩০ হাজার ডলার দেন। ফুডকোটের মালিকদের দুই জন-বাংলাদেশি ফারুক হোসেন মজুমদার এবং সিরাজুল ইসলাম খান, এই অর্থ পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন যারা তাদের কাছে অর্থ পাবেন তাদের পাওনা অর্থ দিয়ে দেবেন। এর মধ্যে রয়েছে দোকানের কর্মচারী এবং হোলসেলাররা। ফারুক হোসেন মজুমদার জানান, আমরা এই অর্থ দুই সপ্তাহ আগে পেয়েছিলাম। অর্থ পাওয়ার পর আমি এবং আমার পার্টনার সিরাজুল ইসলাম খান সিদ্ধান্ত নিই পাওনাদারের অর্থ আমরা ফেরত দেবো। সিরাজুল ইসলাম খানও আমার সঙ্গে রাজি হন। তারা বলেন, এই পৃথিবী ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হবে। মানুষের ঋণ নিয়ে মরতে চাই না। তবে এটাও ঠিক যে, আমরা হয়তো সবার পুরো অর্থ দিতে পারবো না। যতটুকু আমরা পেয়েছি, সেটি পাওনাদারদের ভাগ করে দিয়ে দেবো এবং তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবো।

যেই সিদ্ধান্ত সেই অনুযায়ী কাজ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের কাবাব কিংয়ের সব পাওনাদারদের ডাকা হয়। তাদের মধ্যে অনেকেই আসেন। পাওনাদারদের মধ্যে প্রায় সবাই বলেছেন, এমন ঘটনা প্রবাসে আমরা দেখিনি। এটা তাদের মহানুভবতা। তারা ব্যবসায় লস দিয়েছে, এই অর্থ তারা না দিলেও পারতো। তারা অর্থ পাওয়ার বিষয়টি আমাদের না-ও জানাতে পারতো এবং নিজেরা ভাগ করে নিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু তারা সেটা না করে আমাদের অর্থ ফেরত দিচ্ছে। তারা বলেন, আমরা মনে করি প্রবাসে এটি একটি বড় ঘটনা এবং উদাহরণ। অতীতে আমরা কাউকে এই ধরনের কাজ করতে দেখিনি। তারা বলেন, আমরা তো এই অর্থ পাবো সেটা আশাই করিনি। দুই মালিক আমাদের যা দিয়েছেন, তাতেই আমরা সন্তুষ্ট। তাদের যে সুন্দর এবং মানবিক চিন্তা সেজন্য তাদের ধন্যবাদ। তারা বলেন, এই প্রবাসে এই দুই মালিক এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই ধরনের ঘটনা আমাদের কমিউনিটিতে বিরল। যেখানে এক প্রবাসী আরেক প্রবাসীর অমঙ্গল কামনা করে, একটু ভালো থাকলে হিংসা করে, এক প্রবাসী আরেক প্রবাসীর অর্থ আত্মসাৎ করে, সেখানে তারা আজকে কয়েক বছর পরে ডেকেছেন অর্থ দেওয়ার জন্য। ভালো মানুষ না হলে এই ধরনের ভালো কাজ কেউ করে না। যারা অর্থ পেয়েছেন, তারা খুশি হয়েছেন দুই মালিক-ফারুক হোসেন মজুমদার ও সিরাজুল ইসলাম খানের সততা দেখে। অর্থ বিতরণের সময় দুই মালিক ছাড়াও কাবার কিংয়ের মালিক শওকত উপস্থিত ছিলেন।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)