ফেব্রুয়ারী ২৯ : বিশেষ দিনে ঢাকায় দুঃখজনক অগ্নিকান্ড


সালেক সুফী , আপডেট করা হয়েছে : 01-03-2024

ফেব্রুয়ারী ২৯ : বিশেষ দিনে ঢাকায় দুঃখজনক অগ্নিকান্ড

ঢাকা শহরে অলি গলিতে গড়ে ওঠা অগণিত হোটেল রেস্টুরেন্টে বিদ্যমান নিরাপত্তা দারুণ ভাবে উপেক্ষিত। অনেক ক্ষেত্রেই আবাসিক এলাকায় যত্র তত্র গড়ে উঠেছে খাবার দোকানগুলো। এই ক্ষেত্রে নিয়ম নীতির কোনো বলাই নেই। একটি আবাসিক ভবনে কিভাবে খাবার হোটেল হতে পারে? খাবার হোটেল মানেই আগুনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। ফ্লাট বাড়ীতে পাচ সাতজনের ফ্যামেলীর জন্য খাবার তৈরী। কিন্তু একটি হোটেলে কিন্তু শত শত মানুষ খেতে আসে সারাদিন রাত অব্দি। ফলে ফ্লাট বাড়ীর স্ট্রাকচার মোটেও হোটেল উপযোগী হতে পারে না। তাছাড়া পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক তো থাকা লাগবে। কিন্তু সেটা আছে কী?

সরে জমিনে দেখা গেছে, ঢাকায় বসবাসযোগ্য ফ্লাটবাড়ীতে বা অন্যকোনো বানিজ্যিক কর্মে ব্যবহার করার জন্য নির্মিত ভবনে এমন হোটেল রুপান্তরিত করা হয়েছে। শুধুই যে বেইলী রোডে, তা নয়। উত্তরা,গুলশান,মিরপুর সহ ঢাকার বহুস্থানে এমন হোটেল ব্যাঙ এর ছাতার মত অস্থিত্ব চোখ খুলে তাকালেই অস্থিত্ব মিলবে এবং এটা প্রশাসনের নাকের ডগায়। এ ক্ষেত্রে কী নিয়ম নীতি সাধারন মানুষ জানেন না। তারা সেটা জানার প্রয়োজনও মনে করেন না। তাহলে প্রশাসনের উপর নির্ভরতা কেন করবে মানুষ?

ঢাকার দেখাদেখি দেশের বিভিন্ন শহরেও এখন এমন রেস্টুরেন্টের অস্থিত্ব মিলবে।

এসব হোটেলে খাবারের মান নিয়ে কিছুই বলার নেই। দেখা গেছে, যে সব ভবনে এগুলো নির্মিত সেইগুলিতে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ,বা দুর্ঘটনা হলে উদ্ধার করার ব্যবস্থা আছে কিনা তা সত্যিকার অর্থেই কেউ দেখার কেউ নেই।


এবারের দুর্ঘটনা এই ধরণের প্রথম বা শেষ না। আগুন লাগার কারণ নিয়ে এখনো কিছুই বলার নেই। তবে আলামত থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে বক্তব্যও মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। ইতিপূর্বে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কেমিকাল জনিত কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে এই ধরণের ঘটনায় প্রাণহানি এখন যেন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। প্রতিটি ঘটনার পর কয়েকদিন মিডিয়া সক্রিয় থাকে ,তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কিছু দিন পর সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। কেউ কিছু শিক্ষা নেয় না। প্রশাসনও অজ্ঞাত কারনে নীরব হয়ে যায়।    


বাংলাদেশে সকল ক্ষেত্রে বিশেষত জ্বালানী বিদ্যুৎ ব্যাবহার ক্ষেত্রে অকুপেশন হেলথ সেফটি ব্যাবস্থাপনা উপেক্ষিত। দেশে অনেক সংস্থা থাকলেও এদের কাজ অনেকটাই গতানুগতিক, জনসচেতনতার অভাব।  দায়িত্ববোধের অভাব। নিশ্চয় কারো না কারো ভুলে এই দুর্ঘটনা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাবে কারো কিছুই হবে না। শুধু হাহাকার থাকবে স্বজনহারাদের।  আবারো কোনো অন্য কোন স্থানে একই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটবে। কদিন চলবে। এমনই তো!    


এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে আবাসিক এলাকায় এবং বাণিজ্য বিতানে হোটেল রেস্টুরেন্টে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনের জরুরী হওয়া বাঞ্চনীয়। একই সঙ্গে আবাসিক এলাকায় এই ধরণের হোটেল রেস্টুরেন্ট অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সতর্ক থাকা কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। এই সব ক্ষেত্রে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের দায়িত্ব রয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস অথবা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অনেক সতর্র্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন আছে।   
লিপিয়ার আসে চার বছর পর পর। এবারের লিপিয়ারে বিশেষ দিনটি অনেকের জীবনে দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে।  ঢাকার অভিজাত বেলী রোডে রেস্টুরেন্টে অগ্নিকান্ডে নিহত আহত সবার স্বজনদের জন্য গভীর সমবেদনা।  


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)