আমি ভালো গল্পের সঙ্গে থাকতে চাই


আলমগীর কবির , আপডেট করা হয়েছে : 20-03-2024

আমি ভালো গল্পের সঙ্গে থাকতে চাই

খায়রুল বাসার। মুকাভিনেতা থেকে ছোটপর্দার প্রিয় মুখে পরিণত হয়েছেন অল্প সময়ে। ২০১৭ সাল থেকে টুকটাক অভিনয় করলেও এখন ছোট পর্দায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। সম্প্রতি ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত নাটক ‘রঙিন আশা’। এ ছাড়া রোজার ঈদে মুক্তির তালিকায় থাকা ‘কাজলরেখা’ সিনেমায়ও দেখা যাবে তাঁকে। এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির

প্রশ্ন: খুব অল্প সময়ে দর্শক হৃদয়ে স্থান পেয়েছেন অভিনয় গুণে। ঈদের এবং নতুন কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাই। 

খায়রুল বাসার: দ্রুত সময়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা কম। আগে একটা কাজের পর কয়েকমাস গ্যাপ থাকতো। কিন্তু এখন ঈদে ১০-১২দিন টানা কাজ করেছি। এক চরিত্র থেকে আরেক চরিত্রে যাওয়া অনেক টাফ। অভিনয়ে এখন আমি হামাগুড়ি দিচ্ছি। প্রাইমারি শিক্ষা পার করতে পেরেছি বলে মনে হয় না। অনেক কিছু শেখার বাকি। তবে প্রচুর কাজের চাপ ছিল। চেষ্টা করলাম। 

প্রশ্ন: দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণে আপনি বৈচিত্রময় চরিত্র উপহার দিতে পারছেন?

খায়রুল বাসার: অনেকেই বলে থাকেন, আমার গল্প-চিত্রনাট্য নির্বাচন ভালো। বেছে কাজ করি, ভিন্নতা থাকে। কিন্তু এই নির্বাচনের কাজটি আমি করি না। দীর্ঘ সময় যাবৎ অপেক্ষা করি ঠিকঠাক কাজ আসুক। অনেক কাজের প্রস্তাব পেলেও আন্তরিকতা দেখিয়ে করি না। অভিনয় করতে এসেছি, করছি দায়িত্বের জায়গা থেকে। আমি সবসময় ভালো গল্পের সঙ্গে থাকতে চাই। যেগুলো চারপাশের বিভিন্ন সংকট বা মনস্তাত্ত্বিক গল্প হতে পারে। এই ধরনের কাজ দীর্ঘ সময় পর পর আসে। সামনে যে কাজগুলো আসবে মনে হচ্ছে আরও ভিন্ন কিছু দিতে পারবো। 

প্রশ্ন: ‘রঙিন আশা’ নাটকটি মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

খায়রুল বাসার: শ্রমজীবী এক দম্পতির গল্প নিয়ে নাটক। লোকটি ভ্যান চালায়, আর তার স্ত্রী কারওয়ান বাজারে মাছ কাটে। নাটকটি বানিয়েছেন রাফাত মজুমদার রিংকু। প্রচারের পর থেকে দর্শকের ভালো সাড়া পাচ্ছি। ভালো গল্প হলে দর্শক যে পছন্দ করছেন, দেখছেন ও অ্যাপ্রিশিয়েট করছেন, এটা খুব স্বস্তি দিচ্ছে। যখন কোনো গল্প দর্শকপ্রিয় হয় তখন মনে হয় কাজটা সার্থক।

প্রশ্ন: নাটকে জুটি বেঁধে কাজ করার কোনো সুবিধা আছে?

খায়রুল বাসার: অভিনয়শিল্পী নির্বাচন করেন নির্মাতা। গল্প অনুযায়ী যাকে মানানসই তাঁকেই কাস্ট করা হয়। তাই কাজটা কার সঙ্গে করছি এটা আমার হাতে নেই। জুটি বেঁধে কাজ করলে সুবিধা যেমন আছে, তেমনি অসুবিধাও আছে। সুবিধা হচ্ছে- একটা বোঝাপড়া সৃষ্টি হয়। শুটিংয়ের সময় এটা খুব কাজে লাগে। আবার, বারবার একই জুটি নাটকের বৈচিত্র্য কমিয়ে দেয়। অথচ, কোনো জুটির একটা কাজ দর্শকপ্রিয় হলে একই ধরনের গল্পে একই জুটি নিয়ে ভাবতে থাকেন সবাই। এটা না হলেই ভালো।

প্রশ্ন: সহশিল্পী সাদিয়া আয়মানের সঙ্গে আপনার প্রেমের গুঞ্জন প্রায়ই শোনা যায়। আসলে ঘটনা কি?

খায়রুল বাসার: এটা আমিও শুনেছি। বাইরে থেকে অনেকেই অনেক কথা বলেন। এটা আমি এনজয় করি। থ্রিলিং মনে হয়। একসঙ্গে বেশি কাজ হলেই কি প্রেম হয়? এমন গুঞ্জন নতুন নয়। আমরা একসঙ্গে বেশি কাজ করি। এর কারণ আমাদের সময় মিলে যাচ্ছে, আবার আমরা সময় মিলিয়ে নিচ্ছি। আবার প্রযোজকেরা দেখছেন আমাদের একসঙ্গে অভিনীত কাজগুলো দর্শক পছন্দ করছেন। তখন অন্যরাও আমাদের একসঙ্গে কাস্টিং করছেন। গল্প পছন্দ হচ্ছে। দু’জনই ওকে বলছি। যার ফলে বেশি কাজ হচ্ছে, এই যা।’

প্রশ্ন: ‘কাজলরেখা’ মুক্তি পাচ্ছে। এখানে আপনিও অভিনয় করেছেন।

খায়রুল বাসার: মৈমনসিংহ গীতিকা থেকে নির্মিত হয়েছে কাজলরেখা। এটাকে মিউজিক্যাল ফিল্মও বলা যায়। আমি যেহেতু মিউজিকের ছাত্র তাই গানে গানে গল্প বলার প্রতি আলাদা ভালো লাগা আগে থেকেই আছে। ক্যাম্পাসজীবন থেকেই মৈমনসিংহ গীতিকার সঙ্গে আমার পরিচয়। যখন সেলিম ভাইয়ের কাছ থেকে কাজটা সম্পর্কে শুনলাম, তখন থেকেই সিনেমাটি নিয়ে আমি এক্সসাইটেড। এই ধরনের কাজ সচরাচর হয় না। সামনে হবে কি না তাও জানা নেই। তাই কাজলরেখায় অভিনয়ের সুযোগটি মিস করতে চাইনি। 

প্রশ্ন: শুটিংয়ের সময় বিষয়টি কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল? 

খায়রুল বাসার: শুটিংয়ের সময়টা খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল না। কারণ শুটিং শুরুর আগে আমরা অনেক দিন রিহার্সাল করেছি। এ ছাড়া সিনেমাটি নিয়ে প্রায় এক যুগ গবেষণা হয়েছে। লোকেশন, সেট ডিজাইন, কস্টিউম কেমন হবে তা রিসার্চ করে ঠিক করা হয়েছে। শুটিং লোকেশনে এমন একটা আবহ সৃষ্টি হয়েছিল যে চরিত্র ধারণ করা সবার জন্যই সহজ হয়ে গিয়েছিল। 

প্রশ্ন: সামনে আর কী কী সিনেমা আসছে?

খায়রুল বাসার: কাজলরেখা ছাড়া মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ‘বনলতা সেন’ ও অনম বিশ্বাসের ‘ফুটবল ৭১’ সিনেমার কাজ শেষ করেছি। সিনেমা দুটি নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। আশা করছি, শিগগির সিনেমা দুটি দেখতে পারবে দর্শক। 

প্রশ্ন: ওটিটির বেশ কিছু কাজ করে নজর কেড়েছিলেন। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় আপনাকে এই মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ কী? 

খায়রুল বাসার: ওটিটির কাজে অনেক সময় দিতে হয়। গত বছর প্রায় পুরোটা সময় বনলতা সেন সিনেমার শুটিং করেছি। সে সিনেমায় লুকের একটা বিষয় ছিল। ঋতুবৈচিত্র্য, শুটিং লোকেশন-সব মিলিয়ে এক বছরের বেশি সময় লেগেছে কাজটি শেষ করতে। তাই ওটিটির কোনো কাজ করা হয়নি। যতটুকু সময় পাওয়া গেছে, নাটকের কাজ করেছি। সামনে ঈদ। তাই নাটক নিয়ে ব্যস্ততা আছে। কোরবানির ঈদের পর থেকে ওটিটির কাজ শুরু করব।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)