আরো একটি ধবল ধোলাই শংকা


সালেক সুফী , আপডেট করা হয়েছে : 26-06-2022

আরো একটি ধবল ধোলাই শংকা

দ্বিতীয় দিনেই পাল্টে গেছে প্রেক্ষাপট। কঠিন উইকেটের মেজাজ মর্জি বুঝে লাগসই ব্যাটিং করে দিনশেষে চালকের ভূমিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ রিপোর্ট লেখাকালীন সময়ে প্রথম ইনিংস ৪০৮ রানে শেষ করেছে। এতে ১৭৪ রানে লীড নিয়েছে স্বাগতিকরা। যা ইতিমধ্যেই টেস্ট জয়ের বড় পুঁজি হয়ে গেছে তাদের। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে আর কতটুকু করবে। লীড নেয়াটুকু কাভার করতেই মনে হচ্ছে বাজে একটা পরিস্থিতি তৈরী হয়ে যাবে। ফলে পরাজয়ের শঙ্কাটা এ মুহুর্তে এড়ানো সম্ভবপর নয়, যদি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের ঘনঘটা না নেমে আসে।  

আসলে উইকেটে অসম বাউন্স আছে। উঁচু মানের ব্যাটিং করে তিনটি বড় পার্টনারশীপ এবং কাইল মায়ার্সের অপরাজিত ১৪৬ রানের সুবাদে এই অবস্থানে ওরা।  

আসলে সবে শুরু ম্যাচের তৃতীয় দিন। এতেই ম্যাচ পরিস্থিতি এবং উইকেটের অবস্থা থেকে বলে দেয়া যায় টেস্ট থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। হতাশ করতে চাই না বাংলাদেশ দলের সমার্থকদের। কিন্তু এখন থেকে বেরিয়ে  সিরিজ ধবল ধোলাই বাঁচাতে বাংলাদেশকে উত্তাল সাগর পারি দিতে হবে। বিশেষ করে প্রথম ইনিংস ব্যাটিং দেখে ভরসা হয়না যে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা অসম বাউন্সের উইকেটে চার নিয়মিত পেসারের মোকাবিলায় হলে পানি পাবে।  

কাইল মায়ার্সের বাংলাদেশের বোলিং পছন্দের। টেস্ট জীবনের প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়েছিলো চট্টগ্রামে। কাল কিন্তু এক পর্যায়ে খালেদ, মিরাজ ভালো বোলিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের  ১৩২/৪ অবস্থানে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলো। পারলো বাংলাদেশ মায়ার্স, ব্লাকউডের পরিস্থিতি উপযোগী উঁচু মানের ব্যাটিং সামাল দিতে। ৫ম উইকেটে ওদের যোগাযোগে যুক্ত হলো ১১৬ মহা-মূল্যবান রান। মেরাজ বালকউডকে ফেরালেও মায়ার্সের অপরাজিত ১২৬ রান ম্যাচ থেকে বলা যায় ছিটকে দিয়েছে। এখন কাল সকালে ঝটফট উইকেট তুলে নিতে বার্থ হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০ বা তার বেশি এগিয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে শুধু টেস্ট বা সিরিজ পরাজয় নয় এই উইকেটে ইনিংস পরাজয় শংকা সৃষ্টি হবে। 

তিন পেসার ক্রমাগত ভাবে ভালো বোলিং করেনি। উইকেটে ওদের জন্য যথেষ্ট পারচেজ ছিল। মিরাজ ভালো বোলিং করলেও শাকিব মোক্ষম সময় নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলো। আক্রমণে এসেছে অনেক পরে। ভালো ব্যাটিং করে দলকে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। প্রথম উইকেটে ১০০, ৫ম উইকেটে ১১৬ এবং অবিচ্ছিন্ন ৬ষ্ট  উইকেটে ৯২ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় ইনিংস গড়ার  রাশেদ জুগিয়েছে। ব্রাফেট (৫১) ক্যাম্বেল (৪৫) , ব্লাকউড (৪০) জশুয়া অপরাজিত (২৬) সবাই পরিস্থিতি এবং উইকেট অনুযায়ী ব্যাটিং করে বাংলাদেশের সামনে উপমা রেখেছে টেস্ট ক্রিকেটে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয়? 

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব কেন দীর্ঘ সময় নিজেকে বোলিং থেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন? যদিও ১৮ ওভার বল করেছেন। কিন্তু যখন করলে  দলের জন্য উপকার হতো তখন করেননি। খালেদ,মিরাজ যখন ওদের চাপে ফেলেছিলো তখন একপ্রান্ত থেকে সাকিবের বোলিং কাজে দিতো। মায়ের্স কিন্তু পরিকল্পিত উপায়ে পেস বোলারদের আক্রমণ করে লেংথচ্যুত করেছে। অভিজ্ঞ সাকিব কিন্তু উল্টো মায়ার্সের উপর চাপ দিতে পারতো উইকেটে থিতু হবার আগে। 

টেস্ট ক্রিকেটে নিশ্চিত করে বলা বোকামি হলেও এই ক্ষেত্রে বলা যায়, এখন থেকে একটি দলই  জিতবে ম্যাচ, আর সেটি হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই জয়টা ইনিংস ব্যাবধানে হবে কিনা এটি এখন দেখতে হবে।  আরো একটি ধবল ধোলাইর মুখে বাংলাদেশ। হয়তো এটি অবশ্য গা-সওয়া হয়ে গাছে বিসিবির। ওদের তো কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না।



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)