এমন টেষ্টম্যাচ খেলার ব্যাখ্যা কী


সালেক সুফী , আপডেট করা হয়েছে : 27-06-2022

এমন টেষ্টম্যাচ খেলার ব্যাখ্যা কী

বার বার একই ভাবে ব্যাটিং। যা আসলে টেষ্ট ক্রিকেটের ধারার সাথে একেবারেই যায়ই না। এটাকে কী মেরুদন্ড বিহীন ব্যাটিং বলা যায় না, নাকি টেষ্ট খেলার মত যোগ্যতাই নেই, বা টেষ্ট খেলার যোগ্যতা সম্পন্ন ক্রিকেটার তৈরী হচ্ছেনা বাংলাদেশে সে কথাটাই যুক্তযুক্ত হবে বুঝতে পারছিনা।

কারন বাংলাদেশ প্রমান করছে টেষ্ট অভিষেকের সেই ২০০০ সনে যেমন ছিল, ২০২২ এসেও টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং করার ধরন ঠিক একই। এতদিন গেল। কিছুই কী শেখা হয়নি। টেষ্ট খেলার কালচারটাই কী তৈরী হয়নি? বিসিবি কী সে পরিবেশ তৈরী করতে শতভাগ ব্যার্থ? 

সেন্ট ভিনটেন্সে ড্যারেন সামী স্টেডিয়ামে আবারো ( সিরিজের দ্বিতীয় টেষ্টের দ্বিতীয় ইনিংস) টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আনাড়ি ব্যাটিং বৃষ্টি সংক্ষিপ্ত তৃতীয় দিন শেষে টেস্ট পরাজয়ের শঙ্কা সিরিজ ধবল ধোলাইয়ের দাঁড় প্রান্তে নিয়ে গেছে। ৪০৮ রান করে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭৪ রানের বিশাল লিড পাবার পর সবার আশা ছিল বাংলাদেশ অন্তত লড়াই করবে। অভিজ্ঞ তামিম, সাকিবের ব্যাটিং নেতৃত্বে।

কিন্তু অন্যদের কথা বাদ রাখুন, কি দায়িতহীন ভাবে নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা। যাদেরকে বলা হয় দেশের টেষ্ট ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যান। এ ম্যাচে  সর্বশেষ সুযোগ পেয়ে ভালো খেলছিল নাজমুল শান্ত। তবে ৪৬ রান করেই ভেবেছে হয়তো আরো কিছু টেস্ট খেলার গেট পাস পেয়ে গেছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট ছুড়ে দিয়েছে। হাসান জয়ের কিছু দুর্বলতা মেন্টরিং প্রয়োজন। কে কিভাবে কখন করবে? এনামুল দুই ইনিংসে দুর্ভাগ্য জনক ভাবে আউট হয়েছে। ১৩২/৬ উইকেটে শেষ করেছে বাংলাদেশ।  ইনিংস পরাজয়ের গ্লানি এড়াতেই আরো ৪২ রান প্রয়োজন। সোহান, মিরাজ উইকেটের মূল্য দিয়ে অন্তত সেটি করলেও অন্তত মাস্ক পরে মুখ ঢাকা যাবে। 

তৃতীয় দিনের খেয়ালের বিশেষ ফিচার বলতে কেমার রোচের ২৫০ টেস্ট উইকেটের মাইল ফলক পেরিয়ে যাওয়া। টেস্ট জীবনের প্রথম উইকেট ছিল সাকিবের আর ২৫০ তম উইকেট।  টেস্ট জীবনের সেরা অর্জন হয়েছে খালেদ আহমেদের।  ৫/১০৬ অর্জন করে খালেদ ধীরে ধীরে প্রতিবার প্রমান দিচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস কাইল মায়ার্সের ১৪৬ রান কঠিন উইকেটে বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে।

বাংলাদেশ এখন যে কোনো দেশের বিরুদ্ধে দেশে বা সফরে টেস্ট খেলতে হলে দেশের ক্রিকেটের খোল নলচে পাল্টে শুরু থেকে শুরু করতে হবে। শুধু উইকেট নয় সম্পূর্ণ ক্রিকেট সংস্কৃতি পাল্টাতে হবে। খেলোয়াড় , কোচিং স্টাফ , উইকেট , বিসিবি কম্পোসিশন , ট্রিন মূল ক্রিকেট  সব কিছু নিয়ে স্বল্প দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোদ্ধা যাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রমাণিত এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। 

দেশে এখন সৈয়দ আশরাফুল হক আছেন, রকিবুল হাসান , শফিকুল হক হীরা , তানভীর মাজহার তান্না , খালেদ আমার রুমি, গাজী আশরাফ লিপু , জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা আছেন। দুনিয়া ঘুরে ক্রিকেট উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে আমিনুল ইসলাম বুলবুল।  অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে কোচ হিসাবে কাজ করছে একসময়ের জাতীয় দলের খেলোয়াড় মাহবুবুর রহমান সেলিম। জানি, যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট উন্নয়নে জড়িত আছেন গোলাম নওশের প্রিন্স। এদের কিভাবে বাংলাদেশ কাজে লাগবে ভাবার সময় এসেছে। বর্তমান অবস্থান থেকে টেস্ট ক্রিকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা বর্তমান অন্তসারশূন্য বিসিবির নেই বলাই বাহুল্য। 

২০০০ সন থেকে এ পর্যন্ত ১৩৪ টেস্ট খেলে যে পারফরমেন্স দেখিয়েছে এটা লজ্জার। এর মধ্যে চলমান টেষ্ট পরাস্ত হলে ১০০ টি হার। মনে পড়ছে সেই কিংবদন্তি  স্যার গর্ডন গ্রিনিজের ১৯৯৯ বলা সেই বাক্য। যার প্রমানও মিলছে- ‘টেস্ট ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ।’ 



প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)