২৩ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০১:১৩:১৬ অপরাহ্ন


মেলবোর্নে স্বাধীনতা দিবস ও বৈশাখ উদযাপন
মেলবোর্ন থেকে প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৪-২০২২
মেলবোর্নে স্বাধীনতা দিবস   ও বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া শিল্পীবৃন্দ ও অন্যান্যরা


ভিক্টোরিয়াতে বাংলাদেশী কমিউনিটি এডভান্সডমেন্ট মেলবোর্নের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস ও বৈশাখ উদযাপন । গত ২৬মার্চ ’২২ বাংলাদেশী কমিউনিটি এডভান্সডমেন্ট মেলবোর্নের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস ও বৈশাখ উদযাপন করা হয়। প্রায় দুই হাজারেরও অধিক বাংলাদেশীদের সমাগম ঘটে এই আয়োজনে। সকাল ১১টা থেকে রাত ১০তা পর্যন্ত ছিল এই আয়োজন। আয়োজনে ভিক্টোরিয়াতে বসবাসকারী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বরা ও সংগঠনের বাইরেও অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য রাজ্য থেকেও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বরা ও সংগঠন অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও এই আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা, যিনি তাঁর সুরের মূর্ছনায় দর্শকদের মন মাতিয়েছেন।

জাতীয় পুরুস্কারপ্রাপ্ত বাচিকশিল্পী রওনাক রাব্বানী সুবর্ণা ও মেলবোর্নের অন্যতম জনপ্রিয় বাচিকশিল্পী ইয়াসির আরাফাতের উপস্থাপনায় শুরু হয় এই দিনব্যাপী জমজমাট আয়োজন। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী মৃণাল কান্তি দাস, কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী বশির আহমেদের সুযোগ্য সন্তান সংগীতশিল্পী রাজা বশির, সিডনি ভিত্তিক বাংলাদেশী ব্যান্ড ধুমকেতু, মেলবোর্নর ব্যান্ড ওভারড্রাইভ, মেলবোর্নের গুণী নৃত্যশিল্পী সৈয়দা সায়েরা ও তার নৃত্যভুবন, মেলবোর্নের তরুণ শিল্পী চমক হাসনাইন ও তার ব্যান্ড টিলিংক  মেলবোর্নের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পারভিন সুলতানা, মেলবোর্নের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হিমানি মজুমদার, নওরীন চৌধুরী, এবং রায়হানা শারমিন মিশুর লাইভ মিউজিক, সেইসাথে ছিল জাতীয় পুরুস্কারপ্রাপ্ত বাচিকশিল্পী রওনাক রাব্বানী সুবর্ণা ও মেলবোর্নের অন্যতম জনপ্রিয় বাচিকশিল্পী এস এম ইয়াসির আরাফাতের একটি কবিতা আবৃত্তি। এছাড়াও শিশু-কিশোরদের বাংলাদেশী সাংস্কৃতিক সংগঠন একতারা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।  অসংখ্য বিক্রেতা পোশাক, গহনা এবং অন্যান্য বিভিন্ন পণ্যের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী (বৈশাখী) খাবার এবং মিষ্টি বিক্রি করে।

ভিক্টোরিয়াতে বসবাসকারী বিশিষ্টজনরাও এই অনুষ্ঠানে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন এবং বিসিএএম এর আগামীর  জন্য তাদের মূল্যবান উপদেশ ও দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন। মেলবোর্নের বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের  জনাব আবু আফজাল চৌধুরী একজন শ্রদ্ধেয় বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা তার অভিজ্ঞতা এবং স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন। এমঅনডি  ভিক্টোরিয়ার সিইও (বিশেষ অতিথি) তার দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেছেন এবং এমঅনডি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন। উইন্ডহ্যাম সিটির মাননীয় কাউন্সিলর জশ গিলিগান, প্রাক্তন কাউন্সিলর ইন্তাজ খান, পয়েন্ট কুক এলাকার জন্য ভিক্টোরিয়ার লেবর দলের প্রার্থী  ম্যাথিউ এবং টার্নেইট এলাকার ভিক্টোরিয়ার লেবর দলের প্রার্থী ডিলন তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্য পেশ করেন। এছাড়াও  জনাব জালাল আহমেদ কুমু, ফেডারেশন উনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর  ড. আজিজ রহমান, ড. কবির পাটোয়ারী, ব্যারিস্টার নুরুল ইসলাম  খান এবং জনাব রকিব দেওয়ান বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন যারা তাদের শুভেচ্ছা ও দিকনির্দেশনা দেন বিসিএএম এর আগামীর  জন্য। 

এমঅনডি ভিক্টোরিয়ার সিইও বিসিএএম-কে এমঅনডি'র পাশে থাকার জন্য  প্রচেষ্টার জন্য একটি শংসাপত্র প্রদান করেন। বাংলাদেশী কমুনিটির তরুণ খায়রুল ইসলাম শচী যিনি এমঅনডিতে আক্রান্ত তিনি তার কাহিনী ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে সবার মাঝে তুলে ধরেন এমঅনডি'র সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। এসময় মঞ্চের এনং উপস্থিত সকলের মাঝে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উপস্থিত দর্শকদের বলতে শুনা যায়,"শচী আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে বর্তমান মুহুর্তে বাঁচতে হয় এবং আমাদের যা আছে তা উপলব্ধি করতে হয়"।

যদিও এই আয়োজন একটি ফ্রি ইভেন্ট ছিল, তারপরেও আমরা সবাইকে মোটর নিউরন ডিজিজেস (এম এনডি) রিসার্চ ইনস্টিটিউট ভিক্টোরিয়াতে দান করতে এবং অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রস, বর্তমানে ঘটে যাওয়া কুইন্সল্যান্ড ও নিউ সাউথ ওয়েলস'এর  বন্যা আপিলের মাধ্যমে কুইন্সল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলস-তে বন্যা দুর্গতদের সহায়তা করার জন্য উৎসাহিত করেছি ইভেন্ট চলাকালীন, আমরা অনলাইন এবং নগদ অনুদানের মাধ্যমে এমএনডি ভিক্টোরিয়ার -এর জন্য $৫০০০-এর বেশি অর্থ সংগ্রহ করতে সাহায্য করেছি। এই তহবিল সরাসরি এমএনডি ভিক্টোরিয়াকে  দেওয়া হয়। আমরা যতটা সম্ভব এই ধরণের তহবিল  সংগ্রহের জন্য প্রচার চালিয়ে যাব, যা অস্ট্রেলিয়াতে বা আমাদের    জন্মভূমিতে আমরা দান করবো।

বাংলাদেশী কমিউনিটি এডভান্সমেন্ট মেলবোর্ন (বিসিএএম) একটি স্বেচ্ছাসেবক এবং সমাজকর্মী দ্বারা পরিচালিত একটি অলাভজনক দাতব্য সংস্থা। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য মানবতার উন্নতি এবং নিজ সম্প্রদায়ের অগ্রগতির জন্য কাজ করা। আপনারা অনেকেই  জানেন যে আমাদের এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কমিউনিটি সংস্থা রয়েছে, তাদের বেশিরভাগই অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি রাজ্যের জন্য অন্যান্য বিষয়গুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। কিন্তু শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা ও চাহিদা পূরণে খুব  স্বল্পসংখ্যক সংগঠনই সহায়তা প্রদান করে। আমরা একটি অলাভজনক দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি যেটি অনুদান সংগ্রহ করতে এবং বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত লোকদের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য নিবেদিত, সেইসাথে ভিক্টোরিয়াতে একটি দৃষ্টান্তমূলক সম্প্রদায় হিসাবে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বাংলাদেশী সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সঙ্গীত, শিল্প এবং খেলাধুলার প্রচারের ও প্রসারের জন্য কাজ করে যাবে। 

শেয়ার করুন