২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:০৬:৪২ অপরাহ্ন


বাংলা সিডিপ্যাপ বাংলাদেশ মেলায় প্রাণের উচ্ছ্বাস
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২২
বাংলা সিডিপ্যাপ বাংলাদেশ মেলায় প্রাণের উচ্ছ্বাস


‘সাত সমুদ্র তের নদী বাঙালিয়ানা নিরবদী’ এই ¯স্লোগানকে ধারণ করেই বাংলা সিডিপ্যাপ এন্ড অ্যালেগা বাংলাদেশ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের ওয়েস্টবারী এভিনিউতে। বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন আয়োজিত এই পথমেলায় ছিলো মানুষের স্বত:স্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ। মেলা মানেই বাঙালির প্রাণের স্পন্দন। মেলা মানেই বাঙালি আনন্দ উৎসব। মেলা মানেই বাঙালি বাড়তি উচ্ছ¡াস। সেই আনন্দ, উচ্ছ¡াস এবং প্রাণের স্পন্দন পাওয়া গেল ব্রঙ্কসে অনুষ্ঠিত বাংলা সিডিপ্যাপের বাংলাদেশ মেলায়। কী ছিলো না বাকার মেলায়। সবই ছিলো। ছিলো আলোচনা, ছিলো দেশপ্রেম, হৃদয়ে বাংলাদেশ, পোশাকে বাংলাদেশ, ছিলো আড্ডা, ছিলো কেনাকাটা, ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ছিলো নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা। আনন্দ- উচ্ছ¡াসের মাঝেও বাংলাদেশে বন্যার্তাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়। যদিও বাংলা সিডিপ্যাপ এবং বাকা আগে থেকেই বন্যার্তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো।

সংগঠনের সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকনের সভাপতিত্বে এবং আশরাফুল ইসলাম বুলবুলের পরিচালায় অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক ছিলেন বাংলা সিডিপ্যাপ এন্ড অ্যালেগ্রার প্রেসিডেন্ট আবু জাফর মাহমুদ। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আব্দুল হাসিম হাসনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন এটর্নী ব্রæশ ফিশার, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী, খলিল বিরিয়ানী হাউজের প্রেসিডেন্ট খলিলুর রহমান, বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ এন মজুমদার, স্ট্রালিং ডায়গোনিস্টের ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী, এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান লিংকন, সিপিএ আহাদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে মূলধারার রাজনীতিবিদরাও উপস্থিত ছিলেন।

মেলায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মোমেনুল ইসলাম মোমেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ খান, কম্যুনিটি এক্টিভিস্ট মামুন আহমেদ, রিয়াদ উদ্দিন কামরান, মূলধারার রাজনীতিবিদ সাইফুর খান হারুন, মির্জা মামুনুর রশিদ, কম্যুনিটি এক্টিভিস্ট বশির উদ্দিন, হাজী মনির উদ্দিন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনজুর হোসেন চৌধুরী জগলুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক আহমেদ, রাজনীতিবিদ জামাল হোসেন, সোলায়মান আলী, ব্রঙ্কস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট সামাদ মিয়া জাকের, নিউজার্সি কুলাউড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোদাব্বির চৌধুরী সোলেমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু জাফর মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে আমি হোম কেয়ার ব্যবসা শুরু করেছিলাম আজ থেকে ১৫ বছর। আমিই বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রথম। আমার উদ্দেশ্যে ছিলো আমাদের মানুষগুলো যাতে সুযোগ সুবিধা পেতে পারে তার ব্যবস্থা করা। আপনাদের দোয়ায় আজকে আমি হিমালায় ছুয়েছি। বাঙালিদের স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ আমিই করে দিয়েছি। আর এই শিক্ষা আমি পেয়েছি আমার পরিবার থেকে, আমার সমাজ থেকে, আমার বন্ধুদের থেকে। আমি এখন পরিষ্কারভাবে বলতে চাই হোক কেয়ার সেক্টরে বাংলাদেশীরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমার লক্ষ্য ছিলো হোমকেয়ারের সাথে ভালবাসা যুক্ত করা। সেটা আমি করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে একতাই আমাদের মূল শক্তি। বাংলাদেশের বন্যার কথা আপনারা সবাই জানেন। আমি আগে থেকেই জানতাম বন্যা হবে। যে কারণে আমি আগে থেকে প্রস্তুত ছিলাম। সিলেট, রংপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় অর্থ পাঠাই, ত্রাণ পাঠাই। সব মিলিয়ে আমি ২২ শত পরিবারকে সহযোগিতা করেছি। আপন জনের পাশে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, দেশপ্রেমের কারণেই আমি বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছি। যার মধ্যে দেশ প্রেম নেই সে মানুষ নয়, পশু। জন্তু- জানোয়ারের সাথে তার প্রার্থক্য নেই। তিনি আরো বলেন, কখনো বাবা-মা এবং শ্বশুড়- শাশুড়ির সাথে খারাপ ব্যাহার করবেন না। ভাল মানুষ হতে চেষ্টা করুন। তিনি আরো বলেন, ভাল কাজে সব সময় আমাকে পাশে পাবেন এবং আমি থাকবো।

আব্দুল হাসিম হাসনু বলেন, আমরা গত ৭ বছর ধরে পথ মেলা করছি। বাংলাদেশের কৃষ্টি কালচারকে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য। সেই সাথে বাংলাদেশী পণ্য।

সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন মেলাকে সফল এবং স্বার্থক করার জন্য ব্রঙ্কসবাসীসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাকসুদা আহমেদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বিকেলে বেলুন উড়িয়ে পথমেলার উদ্বোধন করেন। এই সময় সংগঠনের কর্মকর্তাসহ কম্যুনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। যদিও দুপুর থেকে মেলাস্থলে লোকজন আসতে থাকে। তারা মেলায় এসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং মেলা প্রাঙ্গণে কেনাকাটা করেন। যারা স্টল দিয়েছেন তারাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। দুপুরে মেলায় লোকজনের উপস্থিতি একটু কম থাকলেও শেষে বিকেলে মেলায় যেন মানুষের ঢল নামে। পুরো এলাকায় বাঙালির পদোচারণায় ভারি হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে দেশ এবং কম্যুনিটিতে বিশেষ অবদানের জন্য আবু জাফর মাহমুদকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। মূলধারার রাজনীদিবিদরা তার হাতে সম্মাননা তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীন, কালা মিয়া, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব, রোকসানা মির্জা, আমানত হোসেন আমান এবং নৃত্য পরিবেশন করেন নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি।

মেলার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন বাংলা মেলার আহবায়ক সৈয়দ ইলিয়াস খছরু, সদস্য সচিব ফয়ছল আহমদ, প্রধাান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম ভূইয়া, সহ সভাপতি মোহাম্মদ সাদি মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ কামাল উদ্দিন, আলমগীর কবির শামীন, কোষাধ্যক্ষ শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী মোমিত তানিম, প্রচার ও গণ সংযোগ সম্পাদক সোহেল আহমদ, স্কুল শিক্ষা ও সমাকল্যাণ সম্পাদক সালমা সুমি, মোহাম্মদ করিম রনি, মোহাম্মদ রাজু প্রমুখ।

  

শেয়ার করুন