২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:১৭:৫৬ অপরাহ্ন


দেশকে মাহমুদুর রহমান মান্না
৫২ বছরে বাংলাদেশে এতো খারাপ সময় আসেনি
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৮-২০২২
৫২ বছরে বাংলাদেশে এতো খারাপ সময় আসেনি


গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, একটা জবরদখলকারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো তার আবার যৌক্তিকতা কি? আমাদের আন্দোলন বৈধ, না অবৈধ সে প্রশ্ন করাই অবান্তর। প্রশ্ন হচ্ছে, এরা কি নির্বাচিত সরকার। এরা জবরদখলের পর লুটপাট করেছে। এসরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার ব্যাপারে মানুষ জাস্টিফিকেশন খোঁজে না। 

নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।  সাক্ষাৎকার নিচে তুলে ধরা হলো- 

দেশ: জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার ও পণ্যের দাম কমানোর দাবিতে ২৭ আগস্ট গণতন্ত্র মঞ্চ বিক্ষোভ ও পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছে। আপনি কি মনে করেন এসব দল নিয়ে গড়ে ওঠা জোট থেকে ডাকা কর্মসূচিতে মানুষ স্বর্তঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবে।

মাহমুদুর রহমান মান্না: দেখেন আমরা কিন্তু একটু খেয়াল করলে বুঝতে পারবো যে বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত গণআন্দোলনের ইতিহাস বেশি নেই। সম্প্রতি ছাত্রদের কোটা ও ভ্যাট নিয়ে আন্দোলনটা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে ’৬০ ও ’৬২ এবং ’৬৯ গণঅভ্যুথানকে আপনি স্বতঃস্ফূর্ত বলতে পারেন। যেমন সম্প্রতি আমেরিকাতে দেখা গেল কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের বিরুদ্ধে। কিংবা ট্রাম্পের অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে আমেরিকানরা যেভাবে দাঁড়ালো। সাম্প্রতিক সময়ে আমি তো বলি গত ৫২ বছরেবাংলাদেশে এতো খারাপ সময় আসেনি। এতো দুর্বল সরকারও বাংলাদেশে আসেনি। আমরা তো রাস্তায় যাচ্ছি,কথা বলছি জণগণের সাথে। কিন্তু সে ধরনের স্বতঃস্ফূর্ত সময় তো এখনো আসেনি।তবে ভেতরে চাপা ক্ষোভটা বেশ স্পষ্ট। একটা মিছিল দেখলে মানুষকে বলতে শোনা যায় না ফেলে তো দিতে পারছেন না। যাবে কবে এরা-এরকম একটা ভাব। আমার মনে হয় কোনোদিন হঠাৎ করে একটা ক্ষোভের মারাত্মক বহিঃপ্রকাশ ঘটবেই। 

দেশ: এই যে বললেন স্বর্তঃস্ফূর্ততা এখনো দেখছেন না এর কারণ কি? আপনাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা, না অন্যকিছু? কারণ আপনাদের এদেশের জনগণ খুব একটা চিনে না বা এসব দলের সমর্থকও নেই। সেজন্য কি...?

মাহমুদুর রহমান মান্না:আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লাভ নেই। আমাদের তুলনায় বিএনপি তো অনেক শক্তিশালী দল। বিএনপি তো সে হিসেবে সরকার পতনের সেরকম মিনিংফুল আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। 

দেশ: বিএনপি কেন পারছে না? 

মাহমুদুর রহমান মান্না:এটা বিএনপিই ভালো বলতে পারবে। কিন্তু তারাতো এটা বলে- কই মানুষ তো আসে না। তাদের(বিএনপির) লোকেরাই আসে। 

দেশ: আপনি বলছেন বিএনপির মতো বড় দলের লোকেরাও বলে যাচ্ছে তাদের কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ নেই। কেবল নিজদলের সমর্থকরাই অংশ নেয়।আপনারা নিজেরাও বোঝেন আপনাদের সাতদলের ব্যানারেও স্বতঃস্ফূর্ত কেউ আসবে না। তাহলে আপনারা যে ইস্যুতে কাজ করছেন,মাঠে নামছেন তাতে তো মনে হয় না আপনারা জনসমর্থন পাবেন। কি বলেন আপনি?

মাহমুদুর রহমান মান্না: একেকজনের মূল্যায়নএকেকরকম হয় না? মানুষ আন্দোলনে না আসার একটা কারণ হচ্ছে- জণগণ আসলে অতীতে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। আন্দোলনের পরে তারা পরবর্তীতে কি কি পেয়েছে তার গুণগত মান বাছবিচার করছে। আওয়ামী ক্ষমতা থেকে চলে গেলে কি হতে পারে সেব্যাপারেও তাদের আস্থা নেই। আমি মনে করি, মানুষের একটা কোয়ালিটি জাজমেন্ট আছে। তাতে সততার ব্যাপার আছে। আছে সাহসিকতার ব্যাপার। তাতে দেখা যায়, জনগণ আমাদের প্রতিই বেশি আস্থা দেখাচ্ছে। 

দেশ: আপনি অতীতে এবং বর্তমানেও বলেছেন জনগণ দুদলের শাসনব্যবস্থা দেখেছে। এও বলে থাকেন বিএনপি আওয়ামী লীগ মুদ্রার এপিট-ওপিট। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই বিএনপির সাথেই কীভাবে আন্দেলন করে যাচ্ছেন। এদের সাথে আন্দোলন করে রাজনৈতিক মাঠে নতুন বন্দোবস্ত কি আদৌ সম্ভব? এর ফলাফল কি? বিএনপির কি রাতারাতি বদলে যাবে? আপনাদের কি সে শক্তি আছে বিএনপিকে নতুন বন্দোবস্ত এ রাজি করানোর ব্যাপারে?

মাহমুদুর রহমান মান্না: নতুন বন্দোবস্তের জন্য কিন্তু তাদের সাথে ভিড়ছি না। আমি যেভাবে নতুন বন্দোবস্তের কথা বলি তারা কিন্তু সেভাবে বলছে না। আমি বন্দোবস্ত বলতে একটা কল্যাণ রাষ্ট্র বুঝি। যেমন দেশে ৬কোটি দরিদ্র মানুষ আছে,যারা কিছুই উপার্জন করে না। তাদের সম্পত্তিও নেই, কোনো কিছু উপার্জনও করে না। আমি তাদের এমনিতেই টাকা দেবোরাষ্ট্র থেকে। মাসে এক হাজার করে টাকা দেবো। আগে মনে করা হতো এতো টাকা দেয়া হবে কীভাবে। এখন তো দেখা যাচ্ছে ৭২ হাজার কোটি টাকা কোনো ব্যাপারই না।

একটা পরিবারে এমন চারটা লোক থাকলে তো মাসে তারা চার হাজার টাকা পাবে। এখান থেকে যেভাবেই পারুক এর মধ্য থেকে এক হাজার টাকা সেফ করা হবে তাদের পক্ষ থেকে। সে-তো আর মানিলন্ডারিং করবে না। এই কথা কেউ বলেনি-আমার দল বলছে। নতুন বন্দোবস্তের যে কথা বলা হচ্ছে, তারা হয়তো জানে না যে এধরনের কথা আওয়ামী লীগ বিএনপি এর আগে বহুবার বলেছে। যেমন বলা হচ্ছে, এই সংবিধানের ৭২ ধারা বদল করতে হবে। এটাতে বিএনপি আওয়ামী লীগ রাজি। বিচার বিভাগকে জনগণের দোরগোড়ায় নিতে হবে-এটাতেও তারা রাজি। নিম্ন আদালতকে স্বাধীনতা দিতে হবে-এতেও এই দুদল রাজি আছে। এসব কর্মসূচির সাথে আওয়ামী লীগ, বিএনপির পার্থক্য করা যাবে না। আমি অনেককে বলি আওয়ামী লীগের আর বিএনপির ভিশনগুলো পড়তে। দুদলের ভিশন একইরকম।

কেউ হয়তো বলবেন আপনারা তো তার থেকে নতুন কিছুই করতে পারছি না। আমি এব্যাপারে বলবো আমি যেকোটি লোককে রাষ্ট্র থেকে সাহায্যের কথা বলছি, তাতে করে তো একটি স্বাবলম্বী মানুষ গড়ে উঠবো। যাদের থেকে টাকা দিয়ে ভোট কেনা যাবে না। যাদেরকে টাকা দিয়ে জনসভায় আনা যাবে না। এভাবে একটা গণতান্ত্রিক সুস্থধারা ফিরে আসবে দেশে। তাছাড়া এই সময়ে বিএনপির বিরুদ্ধে সমালোচনা করার যুক্তি নেই। এখনো বিএনপি ডাকলে মানুষ আসছে। আমি ডাকলে তো আসছে না। বিএনপির অতো বড় সমাবেশ দেখলে সমালোচনা করলেও আমি তাদের সাথে আছি। আমি এব্যাপারে বিএনপিকে সাথে রাখার ব্যাপারে আছি। আমি মনে করি, বিএনপির প্রায় ৭০ শতাংশ নেতা-কর্মী মনে করে মাহমুদুর রহমান মান্না তাদের রিয়েল বন্ধু। কিন্তু আমি বিএনপি বা আওয়ামী লীগের বন্ধু না।

আমি তো জনগণের বন্ধু। আমি সেখানে বলেছি এই প্রোগ্রাম নেয়া যেতে পারে তাতে দেখেছি তারা একমত হয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে তো তারা এটা বলতে পারবে না। এমন একটা অবস্থা হয়ে একটা প্রতিযোগিতার মধ্যে আছে। আমি একটা প্রোগ্রাম দিলে আমাকে এর বিপরীতে আরেকটা প্রোগ্রাম দিতে হবে। অথচ লেনিন এমন করে বলেননি। সে সোশ্যাল রেভুলেশনারিদের একটা প্রোগ্রাম নিয়ে মাঠে কাজ করেছিল। অথচ তারা তাকে বলেছিল লেনিন তুমি আমাদের কর্মসূচি নিয়েছো কেন,আমাদের প্রোগ্রাম দিয়ে বাহাদুরি করো? এর উত্তরে লেনিন সরাসরি বলেছিল তোমাদের প্রোগ্রামটা ভালো, তাই আমি নিয়েছি। তোমাদের তো খুশি হওয়ার কথা। এমন রাজনৈতিক অ্যাপ্রোচ থাকা উচিত। সে হিসেবে আমি বলছি, যে আওয়ামী লীগ, বিএনপিকে কোয়ালিটি দিয়ে ফাইট করতে হবে। তাই আমি বলবো এই কর্মসূচি নাও। যদি তা না নাও তাহলে তুমি তোমারটা নাও আমি আমার কর্মসূচি নেবো। কোনো ঝগড়াঝাটির দরকার নেই, নেই কোনো শত্রুতা। 

দেশ: তাহলে কি বলবো বিএনপির সাথে আপনাদের কোনো বিষয়ে কনফ্লিক্টআছে?

মাহমুদুর রহমান মান্না: কনফ্লিক্ট সেভাবে এখনো হয়নি। সেটার কারণ হিসেবে বলবো বিএনপি নেতারা এগুলো নিয়ে অতো বেশি ভাবেনি। এটা হতে পারে বিএনপির সামনে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকেই খুবই ইমোশনাল ইস্যু। কারণ তাদের নেত্রীর গোয়িং টু ডায়িং। তাদের কাছে গিয়ে যদি বলি ভাই আপনারা গরিব মানুষের জন্য কি করছেন? তারা বলবেন আরে রাখেন তো আমাদের নেত্রী অসুস্থ, বাঁচতে হবে, মারা যাচ্ছেন। তারা এটার মধ্যেই আটকে আছেন। তাছাড়া হাজার মাইল দূরে থাকেন তারেক রহমান। যতোই বলুক ওইটা অ্যাকিউরেট হতে পারে না, জনগণের বা নেতা-কর্মীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া। এই দুর্বলতা তো আছে তাদের। এর কারণে তারা মনে করে আমরা ইনডিপেনডেটলি কিছু একটা করলে ভুল বোঝাবুঝি হবে। তাই তাদের এরকম স্বাধীনভাবে মতামত দেয়ার বিষয়টা দেখি না। 

দেশ: তাহলে যে দলের স্বাধীনভাবে একটি কর্মসূচি নিতে দোদুল্যমানতা থাকে সেদলের সাথে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে কতটুকু সফল হবেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: এধরনের প্রশ্নটা আমি মনে করি না ঠিক আছে। কারণ এখনো বিএনপির মতো দলের ডাকেই মানুষ আসে। আমার কথায় তো আসছে না। তাই আমাকে তো তার লাগবেই। আমার একটা সৌভাগ্য হয়েছে বিএনপির লোকেরা আমাকে আন্ডার এস্টিমেট করে না, সম্মানও করে। 

দেশ: আমি কি বলবো আপনি বিএনপিকে ব্যবহার করছেন? 

মাহমুদুর রহমান মান্না:কি ব্যবহার করছি? (সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন)। ব্যবহারের কি আছে?

দেশ: মানে বিএনপির জনসমর্থনকে ব্যবহার করছেন। কারণ আপনার তো তা নেই। 

মাহমুদুর রহমান মান্না:আমার জনসমর্থন তো দুর্বল সেকথা বলিনি।আমি বিএনপির বহু প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতে আসতে পারবো।অ্যানি প্লেস ইন বাংলাদেশ। আমি কিন্তু বলছি উনারা ডাকলে তো মানুষ আসছে। এটা শুধু জনসমর্থনই না দলও একটা ফ্যাক্টর। 

দেশ: আপনি কি বলতে চাচ্ছেন উনারা ডাকলে মানুষ আসছে,কিন্তু কথা আপনার মতো নেতাদের কথাটা বিশ্বাস করছে? বিষয়টা এরকম? জনগণ তো তাদের কথা ও কর্মকাণ্ড দেখেছে অতীতে- এই তো?

মাহমুদুর রহমান মান্না: হ্যাঁ, রাইট। এটাই ফ্যাক্ট। তবে আমি কিন্তু এই ল্যাঙ্গুয়েজেই বলিনি। আমি এখানে কেয়ারফুল থাকতে চাই। আমি সব কথা বলতে চাই তাদেরকে (বিএনপি),তবে এমনভাবে বলবো না, যাতে তারা আহত হন। কিন্তু বন্ধু হিসেবে চাই। আমি এমন বন্ধুত্বটা খুব যত্নের সাথে মেইনটেন করতে চাই। আমরা অনেক রাজনৈতিক বন্ধুদের তারা হয়তো সহ্যই করতে পারে না। যেমন ধরুন, জাফরুল্লাহ ভাই(গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রেরপ্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী)।তারা উনার কথাই সহ্য করতে পারে না। আমি অবশ্য উনাকে বলেছি আপনি এই ধরনের বক্তব্য তো অন্যভাবে বলতে পারতেন? উনাকে বলেছি যতোই বলেন, তারেক রহমান ওখান থেকে যতোই কলকাঠি নাড়ু–কনা কেন ওর কথা কিছু হবে নাকি? কিন্তু এধরনের কথা এভাবে ঠিক না বলা। কারণ বিএনপির নেতাই তো তারেক রহমান। তাদের নেতার বিরুদ্ধে কথা বললে কেন তারা সহ্য করবে? 

দেশ: অবশ্যই তো এর কারণ আছে। কারণ জাফরুল্লাহ চৌধুরী তো সরাসরি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিএনপিরভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বিরুদ্ধেই বলেছেন। সরকারের কারো বিরুদ্ধে তো অতো খোলামেলা বলেননা। সেজন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষেপতে পারে না?

মাহমুদুর রহমান মান্না: না, ঠিক না। গত ২১ আগস্ট রোববার এক অনুষ্ঠানে তিনি তো সরকারের বিরুদ্ধে অনেক কিছু বলেছেন। শুধু তো একজনের বিরুদ্ধেই বলেন-এমনটা ঠিক না। দেখেন জাফরুল্লাহ ভাইকে নিয়ে তো আমাদের দলও জোটে সমস্যা হয়েছে। কারণ তিনি বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে শেখ রেহানাকে বসানোর কথা। বলেছেন, হাসিনা আপনি পারবেন না। রেহানাকে দিন। আমি উনাকে বলেছি কেন আপনি (গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রেরপ্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী) আর আমি এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করছি, সেখানে কি শেখ রেহানাকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য? 

দেশ: আপনি কি এসব কথা উনাকে সরাসরি বলেছেন? 

মাহমুদুর রহমান মান্না: হ্যাঁ, বলেছি। কেবল ব্যক্তিগতভাবেই না,দল ও জোটের বৈঠকেও। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উনি যেন এসব কথা না বলেন। কিন্তু উনি আলাদাভাবে থাকতেই পছন্দ করেন,এভাবেই কথা বলতে চান। সেভাবেই আছেন। কিছু মানুষ আছে না স্বাধীনভাবে কথা বলতে চান? 

দেশ: আপনি কি মনে করেন এধরনের আন্দোলন করে এসরকারের পতন ঘটাবেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: আমার মাঝেমধ্যে মনে হয় কি জানেন। আমরা যদি এভাবে আন্দোলন না-ও করি, তারপরও এসরকার এদেশ চালাতে পারবে না। দেখেন একজন ফরেন মিনিস্টার এভাবে কথা বলার পর কি মনে করেন এটা একটি সরকার? এটা কি কোনো সরকারের মধ্যে পড়ে? টাকার দাম একশ বিরাশি থেকে চুরাশি হয়েছে। কিছুই করতে পারে না? এব্যাপারে বিএনপির সম্বন্ধে আমার অভিযোগ আছে। কিন্তু তুলি না। আমার মনের মধ্যে আছে। এ সরকার তো অর্থনীতিকেই সামাল দিতে পারছে না। 

দেশ: আপনারা যে আন্দোলন করছেন তার যৌক্তিকতা কি? সারা বিশ্বেই তো খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। 

মাহমুদুর রহমান মান্না: এমন প্রশ্ন করলেও তো অন্যায় করা হবে। একটা জবরদখলকারী সরকারে বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো তার আবার যৌক্তিকতা কি? এরা কি নির্বাচিত সরকার। এরা একদিকে জবরদখলকারী, অন্যদিকে এরা দেশও চালাতে পারছে না। যোগ্য লোক তো জবরদখল করতে পারে। পরে অনেক ভালো কাজ করে। ইতিহাস তা সাক্ষ্য দেয়। কিন্তু এরা তো জবরদখলের পর লুটপাট করেছে। এসরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার ব্যাপারে মানুষ জাস্টিফিকেশন খোঁজে না। মানুষ বলে আপনারা পারেন না।

জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলন এবং গণসংহতি আন্দোলন-এই সাতটি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আত্মপ্রকাশ করেছে সম্প্রতি। এ জোটের অন্যতম নেতা হচ্ছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি একদিকেরাজনীতিবিদ এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু)-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক। 

শেয়ার করুন