১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৫:৩৯:১১ পূর্বাহ্ন


অস্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শিক্ষা সফর
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৯-২০২২
অস্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শিক্ষা সফর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্টিতব্য টি-২০ বিশ্বকাপে এ দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে দেখা যাবে না/ফাইল ছবি


ক্রিকেটের বিশ্ব অঙ্গনে সব ফরম্যাটে নিচের সারির অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার কাঠিন কন্ডিশনে টি-২০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে। আইসিসি দল ঘোষণার জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর শেষ সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিলো। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে এবারে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনাল যথারীতি হবে ঐতিহাসিক এমসিজি  (মেলবোর্ন) আইকনিক মাঠে। বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব এমিরেটসে অনুষ্ঠিত টি -২০ বিশ্ব কাপ ২০২১ এর এলিট গ্রুপে কোনো ম্যাচেই জয় পায়নি। এমনকি কিছু দিন আগে অনুষ্ঠিত হওয়া টি-২০ আদলের এশিয়া কাপেও জয় শুন্য থেকেছে। বিশ্ব কাপে পরিবেশ পরিস্থিতি, প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক তুখোড় থাকবে।


তদুপরি তথাকথিত পঞ্চ পাণ্ডবের মধ্যে একমাত্র সাকিব ছাড়া বাকি চারজন নানা কারণে ঝরে পড়ে- আনকোড়া বা নবীন দলে পরিণত। ফলে  এ শিক্ষানবীশ বা নবীন দল হলে পানি পাবে না বলেই দেয়া যায়।  শুনতে কটু লাগলেও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট পরিবেশের ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি- বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন হবে নিতান্তই শিক্ষা সফর। এমনকি একটি ম্যাচ জয়ের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখি না। আর যদি পেয়েই যায় সম্ভবত আমার চেয়ে বেশী খুশী কেউ হবে না। আমি কিন্তু সব ক্ষেত্রে সব সময় বাংলাদেশের জয় কামনা করি। কিন্তু বাস্তবতার কঠিন জমিনে দাঁড়িয়ে আমাকেও বলতে হচ্ছে বৈষয়িক টুর্নামেন্টে একটি ম্যাচেও বাংলাদেশের জয় এখন অঘটন বলেই বিবেচিত হবে। 

১২ দলের ম্যাচে অনুষ্ঠিতব্য এবারের বিশ্ব কাপে ৮ টি পুণঃনির্ধারিত হয়ে আছে বাকি চারটি দল আসবে দুটি গ্রুপে বিভক্ত দলগুলোর প্রি টুর্নামেন্ট কোয়ালিফিকেশন রাউন্ড খেলা থেকে। 



বাংলাদেশ দলের অনুশীলন/ছবি সংগৃহীত 



গ্রুপ এক : ইংল্যান্ড ,অস্ট্রেলিয়া , নিউজিল্যান্ড ,

আফগানিস্তান, গ্রুপ এ বিজয়ী ,গ্রুপ বি রানার আপ 


গ্রুপ  দুই : ভারত , পাকিস্তান ,দক্ষিণ আফ্রিকা ,

বাংলাদেশ , গ্রুপ বি বিজয়ী ,গ্রুপ এ রানার আপ 


বাংলাদেশ স্কোয়াড:


সাকিব আল হাসান ( অধিনায়ক) , নুরুল হাসান সোহান ( সহ অধিনায়ক) , মেহেদী হাসান মেরাজ, লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, এবাদত হোসাইন , নাজমুল হাসান শান্ত, আফিফ হোসাইন , সাব্বির রহমান , মোসাদ্দেক হোসাইন, ইয়াসির আলী, মুস্তাফিজুর রহমান ,মোস্তাফিজুর রহমান , তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ , নাসুম আহমেদ,। 

স্ট্যান্ড বাই : শরিফুল ইসলাম, শেখ হাসান মেহেদী, রিশাদ হোসাইন , সৌম্য সরকার 

তামিম , মুশফিক টি ২০ ফরমেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছে। মাহমুদুল্লাকে আবারো অবহেলা করা হলো. জানিনা শান্তকে কোন বিশেষ কারণে ফিরিয়ে াণ হলো? দলে লিটন দাস ছাড়া সিকৃত কোনো ওপেনার নেই।  অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তান , ভারত ,দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সম্ভবত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মোকাবিলা করতে হবে. মেক শিফট ওপেনারদের দিয়ে ইনিংস সূচনার ঝুঁকি কেন নেয়া হলো বোঝা গেলো না. প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুখোড় পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে মেহেদী মিরাজ অথবা সাব্বিরকে দিয়ে ইনিংস সূচনা করা ঝুঁকি পূর্ণ হবে।

আর শুরুতেই উইকেট হারালে সাকিব আফিফের পক্ষে সামাল দেয়া কঠিন হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মিডল অর্ডারে মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ নাই। ব্যাটিং বাংলাদেশের মূল সমস্যা হবে। ভারত , পাকিস্তান , দক্ষিণ আফ্রিকার রয়েছে দুরন্ত গতির তুখোড় দল। সেখানে তাদের অভিজ্ঞতার তুলনায় কী দল নির্বাচন করেছে বাংলাদেশ। তাই এবারের মিশনটিকে বলছি শিক্ষা সফর আক্রমণ। এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোয়ালিফাই করলে ওদের পেস এটাক অনেক সমৃদ্ধ।  আমি মনে করি অন্তত একজন জেনুইন ওপেনার হওয়া ভুক্ত হয় উচিত ছিল।

পারভেজ ইমনকে অথবা সৌম্য সরকারকে দলে রাখা যেত। প্রশ্ন থাকবে কেন দলে ফিরেছে শান্ত? আমি মাহমুদুল্লাকে বাদ দেয়াতে বিস্মিত নই। ওর নিজের থেকেই সরে যাওয়া উচিত ছিল। ইয়াসির আলীর নির্বাচন ঠিক আছে। আমি এই দলের বাটিংএ সাকিব ,লিটন এবং আফিফ এবং সোহান ছাড়া কারো মাঝেই সম্ভাবনা দেখি না। হয়তো সাইফুদ্দিন বা সাব্বির দুই একটা ম্যাচ ভালো খেলবে। 

দল অন্তত ১৭০ রান করতে না পারলে কোনো দলের বিরুদ্ধেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না। মুস্তাফিজ, তাসকিন,এবাদাত, হাসান মাহমুদ, সাইফুদ্দিন মজুদ থাকায় মনে করি পিসি এ্যাটাক মন্দ হবে না। স্পিন আক্রমণের ভার থাকবে শাকিব, মেরাজের কাঁধে। জানিনা নাসুমকে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটে খেলার জন্য কোন বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বোধ গম্য নয়। বরং আফিফ, মোসাদ্দেক অনেক কাজে লাগবে।  

গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিটি চ্যাম্পিয়নশিপ দৌড়ে থাকবে।  সাম্প্রতিক সময়ে এমনকি জিম্বাবুয়ে , স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড অনেক উন্নত ক্রিকেট খেলছে। হয়তো এইসব বিবেচনা করেই ক্রিকেট বোদ্ধা বিসিবি সভাপতি বলেছেন ২০২২ বিশ্বকাপ নয়- পরের বিশ্ব কাপের জন্য দল গঠন হয়েছে। পরবর্তী বিশ্ব কাপের জন্য যদি এখনই দল তৈরীতে মনযোগী হতে হয় তাহলে আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য কেন আরো দুই বছর আগে দল গঠনে মনযোগী হয়নি বিসিবি। কোথায় তার দুর্বলতা। 


কী নিয়ে ভাবছেণ তিনি এতদিন। জনগনের কষ্টের অর্থ খরচ করে আবল তাবল ভাবনার কোনো মানে হয়না। এভাবে সময়ক্ষেপন করে আর কত। ২০০৬ সন থেকে বাংলাদেশ টি-২০ খেলে আসছে। এখনও একটা পারফেক্ট দল হয়নি। অথচ কদিন হলো শুরু করেছে আফগানিস্তান। ওদের ক্রিকেটের সুযোগ সুবিধাই বা কী। নিজের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারে না। হোম করে ধার করে অন্যের মাঠে। পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধাও নেই। নেই অর্থের ঢামাঢোল। খেলোয়াড়দের সুযোগ সুবিধা নেই বললেই চলে। প্রাকটিস সুবিধাও নিছক কম। এরপরও কী পারফরমেন্স তারা করছে সেটা আর লিখে বুঝানোর প্রয়োজন নেই। 

তাই বলছি, স্কোয়াড বিশ্লেষন করে ও প্রতিপক্ষের শক্তি ধারা অনুসারে এবারের বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন সম্ভবত শিক্ষা সফরই হবে।  


শেয়ার করুন