২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪৯:২৬ অপরাহ্ন


নজরুল গবেষক ড. উইনস্টনের সাথে কনসাল জেনারেলের বৈঠক
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৯-২০২২
নজরুল গবেষক ড. উইনস্টনের সাথে কনসাল জেনারেলের বৈঠক


কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম গত ১১ সেপ্টেম্বর ম্যাসাচুয়েটস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. উইনস্টন ল্যাঙলি’র সাথে এক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। পশ্চিমা বিশ্বে যারা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে গবেষণা করেছেন তাদের মধ্যে ড. ল্যাঙলি অন্যতম। তিনি Kazi Nazrul Islam, The voice Poetry and the struggle for human wholeness- নামে একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন।

বৈঠকে ড. ইসলাম ও ড. ল্যাঙলি বিংশ শতাব্দীর বিস্ময়কর সাহিত্য প্রতিভা কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও কর্ম নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। নজরুল কল্পনা করেছেন সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে গড়া এক সমাজের, যেখানে নেই শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন আর সাম্প্রদায়িক ভেদ; বলে তারা অভিমত প্রকাশ করেন।

‘গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’ উদ্ধৃতি পূর্বক কনসাল জেনারেল বলেন, চেতনার কবি, মূল্যবোধের কবি, সাম্যের কবি, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুলের বিদ্রোহী সত্তার মূলে ছিল মানবতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ। আর এই মানবতার অপমান তিনি যখন যেখানে দেখেছেন, বিদ্রোহে মুখর হয়েছেন। তিনি যোগ করেন, মানব জীবনের গভীরতম উপলব্ধিসমূহ নিয়ে; আর্ত, নির্যাতিত বিশ্বমানবের বেদনার সুর তার কাব্যের ভিতর অনুরণিত হয়ছে। মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক সকল ক্ষেত্রের বৈষম্য ও অসঙ্গতি তাকে প্রবলভাবে আলোড়িত করেছে। সমাজের এই অচলায়তন ভাঙতে ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় রচনা করেছেন বহু গান ও কবিতা। বাংলাদেশিদের চিন্তাচেতনায়, মননে, উদার জীবনাচরণে কবি নজরুলের লেখনীর প্রভাবের কথা কনসাল জেনারেল ড. ল্যাঙলিকে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, নজরুল ছিলেন তারুণ্যের প্রতীক, সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী; চির মুক্তিকামী এই কবি বিশ্বমানবের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন শক্তি, নতুন প্রেরণা, নতুন আলোর বার্তাবাহক। কনসাল জেনারেল র্বতমান বিশ্ব পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে নজরুলের লেখার উপযোগিতা ও প্রাসঙ্গকিতা এভাবেই ল্যাঙলির সামনে উপস্থাপন করেন। 

ড. ল্যাঙলি কনসাল জেনারেলের কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং বিশ্ব মানবতার প্রতি নজরুলের কবিতায় যে তীব্র অনুভ‚তি ব্যক্ত হয়েছে তা সত্যইি বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেন। নজরুল ইসলামকে একজন সত্যিকারের ’গ্লোবালিস্ট’ আখ্যা দিয়ে তার চিন্তাচেতনা ও দর্শনকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে তার প্রচেষ্টা ও প্রত্যয়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি আমেরিকানসহ মূলধারার তরুণ প্রজন্মকে নজরুলের লেখনীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর গুরুত্বারোপ করেন।

নজরুলের উদার, বিশ্বজনীন বার্তা সারা বিশ্বে বিশেষত আমেরিকায় ব্যাপকভাবে প্রসারের লক্ষ্যে আগামীতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট, নিউইয়র্ক ড. ল্যাঙলির সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে আলোচনার সমাপ্তি ঘটে।

শেয়ার করুন