২৮ মার্চ ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৬:৫৭:২৩ অপরাহ্ন


লন্ডনে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বাসে চড়া হলো না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৯-২০২২
লন্ডনে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বাসে চড়া হলো না জো বাইডেন


ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যে যোগ দিতে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের রাষ্ট্র, সরকার ও রাজকীয় প্রধানরা যুক্তরাজ্যে গিয়ে সমবেত হয়েছিলেন। পরিকল্পনা মোতাবেক নানা দেশ থেকে আগত এসব গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা একইসাথে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রক্ষিত প্রয়াত রানীর কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার।

এছাড়া ওই সময়ে ব্রিটেন ছাড়াও সকল কমনওয়েলথভুক্ত দেশসহ পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে ১৮ লাখ সাধারণ মানুষ রানিকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে লন্ডনে ধেয়ে আসবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছিলো। অভূতপূর্ব এই জনসমাগমের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকটি বিবেচনা করে ব্রিটিশ সরকার আমেরিকার প্রেসিডেন্টসহ বিশ্বনেতাদের প্রাইভেট লিমোজিন কার পারিহার করার পরামর্শ দিয়েছিলো। বলা হয়েছিল এর পরিবর্তে কর্তৃপক্ষ বরেণ্য অতিথিদের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নেয়ার ব্যবস্থা করবেন বাসযোগে। এতে করে সুবিধাজনকভাবে একটি বাসে বেশ কিছু অতিথিদের আনা নেয়া সম্ভব হবে।

লন্ডন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল বিশাল এই ঐতিহাসিক জনসমাগমের সাথে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বনেতাদের নিরাপত্তা বিধানের মতো কঠিন দায়িত্ব ইতোপূর্বে তারা কখনো পালন করেননি। এমনকি বিদায়ী রানির সিংহাসনে আরোহণের ৭০তম বার্ষিকী অথবা গত ১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক আয়োজনের নিরাপত্তা বিধানের চাইতে রানির শেষকৃত্যের কাজটি ছিল বহুগুণ চ্যালেঞ্জিং। এই পরিস্থিতিতে সকল মহলে প্রশ্ন ছিল বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি সুকঠিন নিরাপত্তাবেষ্টিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কি ব্রিটিশ সরকারের অনুরোধে বাকি বিশ্বনেতাদের সাথে একযোগে বাস করে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে যাচ্ছেন? 

কিন্তু এ বিষয়ে কি বললেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা দেখভালকারী বিশেষজ্ঞরা। বাসে করে বাইডেন? এটাতো একটা অসম্ভব কথা! রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা পরিকল্পনাকারী একজন সাবেক কর্মকর্তা অনিতা ম্যাকব্রাইড তার এই মন্তব্যের সাথে আরো যোগ করলেন- কোনো অবস্থাতেই ইউএস সিক্রেট সার্ভিস এরকম ব্যবস্থায় সম্মত হবে না। অনিতা ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সহকারী ও ফার্স্টলেডি লরা বুশের চিফ অব স্টাফ।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সালে আরমিস্টিসডের প্রথম একশত বছর পূর্তি উপলক্ষে (যে দিনটি ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভেটারানদের জন্য শ্রদ্ধা জানবার দিন) রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিসে সেই দিনের অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন রাষ্ট্রপতির আর্মার্ড ভেহিকলে। তবে একই অনুষ্ঠানে অন্য বিশ্বনেতারা গিয়েছিলেন বাসে করে। ব্রিটিশ রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা জনবহুল কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে বাসে করে যোগদানের অনেক নজির রয়েছে। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বেলায় এমন নজির কখনো দেখা যায়নি। দুনিয়ার চোখ কান খোলা মানুষেরা জানেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করে থাকেন তার জন্য নির্ধারিত বিশেষ বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে করে। যদি কোনো কারণে এর ব্যত্যয় ঘটে, তখন তিনি যাতায়াত করেন ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ‘দ্য বিস্ট’ নামের একটি কালো লিমোজিনে করে। 

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন তার সময়কালে ব্যতিক্রমীভাবে মরক্কোর প্রেসিডেন্ট হাসানের মৃত্যুর পর এক শোক শোভাযাত্রায় পায়ে হেঁটে শরিক হয়েছিলেন বিশ্বনেতাদের সাথে। তবে তাঁর এরকম সিদ্ধান্তে অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলো প্রেসিডেন্টের সিক্রেট সার্ভিস। তবে বাইডেনের বাসযাত্রা নিয়ে ব্রিটেনে কোনো চাঞ্চল্য জেগেছিলো বলে শোনা যায়নি এবং তিনি কীভাবে রানির ফিউনারেল উপস্থিত হয়েছিলেন সে বিষয়ে মিডিয়াতেও কোনো বিশেষ তথ্য আসেনি। তবে দ্য টাইমস অব লন্ডন এক অসমর্থিত সূত্রের বরাতে আগেই জানিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার বাইডেনকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে একটি হ্যাভিলি আরমোরড প্রেসিডেন্টশিয়াল কালো লিমোজিন ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

শেয়ার করুন