২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৬:২৩:৪৪ পূর্বাহ্ন


ফান্ড রেইজিংয়ে তিন লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি
মসজিদ নামিরায় নামাজ শুরু হবে তিন মাসের মধ্যেই
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১১-২০২২
মসজিদ নামিরায় নামাজ শুরু হবে তিন মাসের মধ্যেই বক্তব্য রাখছেন আব্দুল্লাহ আল আরিফ


গুনাহ ও পাপের কাজের সাক্ষী হবেন না, সব সময় ভালো কাজের সাক্ষী হবেন। গুনাহ বা পাপ করলে গোপন রাখবেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। আর সাক্ষী রাখলে কেয়ামতের ময়দানে তারাই সাক্ষী দেবেন। আল্লাহর পথে দান করলে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা নিজেই পুরস্কৃত করবেন। গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে মুনা সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটসের (মসজিদ নামিয়া) ফান্ড রেইজিং ফান্ডে প্রধান আলোচক, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ এসব কথা বলেন।

মুনার জ্যাকসন হাইটস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক মোমিনুল ইসলাম মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং এলেমহার্স্ট চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট কায়কোবাদ কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুনা নর্থের প্রেসিডেন্ট আব্দুলা আল আরিফ, আল নূর মসজিদের ইমাম মওলানা মুফতি ইসমাইল, উডসাইড বায়তুল জান্নাহ মসজিদের প্রেসিডেন্ট তোফাজ উদ্দিন, মুনার মসলিসে সুরার সদস্য মওলানা তোহা আমিন, আব্দুল হাকিম মিয়া প্রমুখ।

ব্যাপক প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। জ্যাকসন হাইটস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মোমিনুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এই মসজিদ গত বছরের এপ্রিলে ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ডলার দিয়ে ক্রয় করা হয়েছিলো। পুরো অর্থই পরিশোধ করা হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে কর্জে হাসানা নেয়া হয়েছে। এখন মানুষের সেই অর্থ ফেরত দিতে হবে। তিনি বলেন, মসজিদের কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। আশা করি আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে মসজিদ নামিরায় নামাজ আদায় শুরু হবে। কর্জে হাসানা কত এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো কর্জে হাসানা প্রায় ১৩ লাখ ডলার। ফান্ড রেইজিং থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। সেই অনুযায়ী কর্জে হাসানা থাকবে প্রায় ১০ লাখ ডলারের মতো। মসজিদ চালু হলে দান-খয়রাত থেকে তা দেয়া হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি মুনার ২০তম মসজিদ। মুনা মসজিদ মানেই নামাজ আদায়সহ ইসলামিক শিক্ষার একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান। মুনা নিউইয়র্কস্থ দ্বীনের কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধান আলোচক মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ বলেন, সব মসজিদের মালিকই এক। মসজিদে মালিকের কথাই বলা হয়, রাসুলে করিম (সা.)-এর কথা বলা হয়। তিনি বলেন, গুনাহ ও পাপের কাজের সাক্ষী হবেন না, সব সময় ভালো কাজের সাক্ষী হবেন। গুণাহ বা পাপ করলে গোপন রাখবেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। আর সাক্ষী রাখলে কেয়ামতের ময়দানে তারাই সাক্ষী দেবেন। আল্লাহর পথে দান করলে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা নিজেই পুরস্কৃত করবেন। তিনি প্রবাসের নতুন প্রজন্মের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমাদের মসজিদে অনেকের জানাজা হয়। ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে জ্যামাইকাতেই ২ ডজনের বেশি নতুন প্রজন্মের তরুণের মৃত্যু হয়েছে। সবাই জানেন তাদের মৃত্যু ড্রাগে হয়েছে। কিন্তু কেউ বলতে চান না, এমনকি অভিভাবকরাও বলতে চান না। তারা বলেন, হার্ট অ্যাটাকে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এটা আমাদের কমিউনিটির জন্য ভয়ঙ্কর মহামারী। এর কারণ হচ্ছে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারছি না। উপযুক্ত শিক্ষা হচ্ছে ইসলামি শিক্ষা। যে শিক্ষা দেয়া হবে এই মসজিদে।

আব্দুল্লাহ আল আরিফ বলেন, মসজিদ নববী যেভাবে করা হয়েছে, আমরা সেভাবে এই মসজিদ করবো। এই মসজিদের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবিহীন মসজিদ হবে। অন্যান্য মসজিদের চেয়ে এটাই আমাদের পার্থক্য। যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাদের থাকতে হবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস এবং নামাজ কায়েম করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের এই মসজিদে কোনো ব্যাংক ঋণ নেই। সুদের কোনো বিষয় নেই। আমাদের এই মসজিদে নতুন প্রজন্মের জন্য শিক্ষাব্যবস্থা থাকবে। অন্যান্য মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, নামাজ শেষে ১০ মিনিটের মধ্যে মসজিদের দরজা বন্ধ। কিন্তু আমাদের এখানে তা হবে না। তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের ৬০ শতাংশ ড্রাগে আসক্ত। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের উপযুক্ত শিক্ষা। তাদের উপযুক্ত ইসলামি শিক্ষা দিতে হবে, সেই সাথে তাদের জায়গা করে দিতে হবে। পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তারা যেন মসজিদে এসে শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তিনি বলেন, মুনার প্রতিটি মসজিদে নতুন প্রজন্মকে দেখতে পাবেন। আমাদের এই মসজিদের ফার্স্ট ফ্লোরে থাকবে মহিলা এবং বাচ্চাদের জন্য। আমি বলতে চাই তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তিনি আরো বলেন, মুনা এসব কর্মকা-ের পাশাপাশি মানবসেবায় কাজ করে যাচ্ছে। আমরা জব সেমিনার করি।

অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন মহিন, ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন আরাফাত রহমান এবং কবিতা আবৃত্তি করেন ববি আবুল বাশার।

শেয়ার করুন