২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৪:০৬:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


হিন্দুদের সমাবেশে প্রিয়া সাহা
বাংলাদেশে সরকারি অর্থায়নে মডেল মসজিদ হয় কিন্তু মডেল মন্দির হয় না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০১-২০২৩
বাংলাদেশে সরকারি অর্থায়নে মডেল মসজিদ হয় কিন্তু মডেল মন্দির হয় না মঞ্চে অতিথিবৃন্দ


বাংলাদেশে সরকারি অর্থায়নে মডেল মসজিদ তৈরি করা হয়, কিন্তু সরকারি অর্থায়নে মন্দির তৈরি করা হয় না। ১৯৪৭ সাল থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলের যে অবৈধ কর্মকা- শুরু হয়েছে তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ, মন্দির ভাঙচুর চলছে। বাংলাদেশে শত শত মন্দির ভাঙা হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকার একটি পুনর্নির্মাণ করে দেয়নি। বাংলাদেশে অব্যাহতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কারণে হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশে ২০ শতাংশ হিন্দু ছিলো তা বর্তমানে ৮ শতাংশ এ নেমে এসেছে। গত ৮ জানুয়ারি বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে ইউনাইটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’র হিন্দু সমাবেশে প্রিয়া সাহা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রুকলিন ইসকন মন্দিরের প্রেসিডেন্ট হংসরূপা দাস, এইচ আর সিবিএমের ডিরেক্টর প্রিয়া সাহা, ভবানী মন্দিরের জাগ্রোবচন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনাইটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’র আহ্বায়ক নিত্যানন্দ কিশোর দাস ব্রহ্মচারী।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। গীতা পাঠ করেন নিউইয়র্কের হিন্দু মন্দিরের ১০ জন নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোর যারা এই আমেরিকাতে জন্মগ্রহণ করেছে এবং এখানে লেখাপড়া করছে। অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন প্রধান অতিথি জেনিফার রাজকুমার, ইউনাইটেড হিন্দুসের আহ্বায়ক নিত্যানন্দ কিশোর দাস ব্রহ্মচারী, প্রিয়া সাহা, জাগ্রোবচন, জগদীশ শাস্ত্রী, শঙ্কর পারিয়াল, ভবতোষ মিত্র, রাম দেবনাথ, চন্দন দাস, শিতাংশু গুহ এবং সুশীল সাহা। অতঃপর নিউইয়র্কের বিভিন্ন মন্দিরের ভক্তদের দ্বারা পরিবেশিত হয় বিশেষ ভজন কীর্তন। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রিতু রায়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন মন্দিরের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশে হিন্দুদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। তাঁরা এ অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন ইউনাইটেড হিন্দুস অব ইউএসএকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রধান অতিথি জেনিফার রাজকুমার বলেন, তিনি একজন গর্বিত হিন্দু এবং সব সময় হিন্দু কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। তিনি উল্লেখ করেন নিউইয়র্ক সিটিতে বিভিন্ন সরকারি স্কুলে দিওয়ালিতে ছুটির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেন অচিরেই সেটা মঞ্জুর হবে। 

প্রিয়া সাহা তার বক্তব্যে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে যে অনিয়ম এবং এবং অবিচার চলছে তার বিবরণ দেন। তিনি উল্লেখ করেন বাংলাদেশের বিভিন্ন কালো আইনের মাধ্যমে হিন্দুদের সম্পত্তি নামে-বেনামে সরকার এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ দখল করছেন এবং এ প্রক্রিয়া চলমান আছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন ইউনাইটেড স্টেটসের কংগ্রেসে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে পাক হানাদার কর্তৃক ভয়াবহ এবং বীভৎস গণহত্যার বিলটি অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে সরকারি অর্থায়নে মডেল মসজিদ তৈরি করা হয়, কিন্তু সরকারি অর্থায়নে মন্দির তৈরি করা হয় না। ১৯৪৭ সাল থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলের যে অবৈধ কর্মকা- শুরু হয়েছে তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ, মন্দির ভাঙচুর চলছে। বাংলাদেশে শত শত মন্দির ভাঙা হয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকার একটি পুনর্নির্মাণ করে দেয়নি। বাংলাদেশে অব্যাহতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কারণে হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশে ২০ শতাংশ হিন্দু ছিলো তা বর্তমানে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

হংসরূপা বাংলাদেশে হিন্দুদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সুশীল সিনহা বাংলাদেশে নির্বাচন পরবর্তী হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেই সাথে তিনি জাতীয় সংসদে জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন বণ্টনপূর্বক সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন তমা চক্রবর্তী, রীণা রায়, মনিকা দাস। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রামদাস ঘরামী, সুতিপা চৌধুরী এবং রিতা রায়।

সবশেষে  নিত্যানন্দ কিশোর দাস ব্রহ্মচারী তাঁর সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে সমস্ত অতিথি, বিভিন্ন মন্দির এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, স্পন্সর, শুভানুধ্যায়ী এবং সংগঠনের সমস্ত নেতাকর্মীকে শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন