২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ১১:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন


আওয়ামী লীগ একঘরে হয়ে যাচ্ছে?
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০২-২০২৩
আওয়ামী লীগ একঘরে হয়ে যাচ্ছে? আওয়ামী লীগের পতাকা


সরকারের বিরুদ্ধে ডান-বামসহ উদার গণতান্ত্রিক দলগুলি এককাতারে চলে আসায় সরকার মহা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। যতোই ক্ষুদ্র না তেমন সাংগঠনিক শক্তি না থাকলেও বিএনপির পাশাপাশি এসব দলমত রাজপথে এক হয়ে মাঠে নামায় দেশ-বিদেশে সরকার কঠিন ইমেজ সংকটে আছে। সব দল-মতকে নিয়ে আন্দোলনে মাঠে নিয়া আসতে পারায় বিএনপির পক্ষ থেকে সফল হওয়ায় আওয়ামী লীগের কপালে ভাঁজ পড়েছে। একদিকে এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে যেমন তৎপর রয়েছে, এর পাপাপাশি তারা এধরনের পরিস্থিতির ওপর কড়া নজরও রাখছে।

ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি এবং এটা চলমান রয়েছে। মোটামুটি এধরনের কর্মসূচি নিয়েই সাথে যোগ দিয়েছে বলা যায় মাঠের সবক’টি বিরোধীদল। যারা একেবারে বিএনপিসহ অন্য দলগুলির সাথে নেই তারাও ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে দাবিতেই মাঠেই রয়েছে। ফলে বলা যায় অর্ধশতাধিক দল এখন ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করছে। 

কারা কারা আছে বিএনপির সাথে...

বিএনপির সাথে বর্তমানে যুগপৎ আন্দোলনে আছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সাত দলীয় জোটের ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আত্মপ্রকাশ করেছে গত বছর আগস্ট মাসে। জোটভুক্ত দলগুলো হলো জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলন। জোটের ঘোষণায় বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এই মঞ্চ গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্র, সংবিধান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারব্যবস্থা নিয়ে মঞ্চের সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাবসহ দাবি রয়েছে।

গণফোরামের একাংশ গণফোরাম বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু এবং অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীও বিএনপির সাথে আন্দোলনে নেমেছে যুগপৎভাবে। এদিকে বিএনপির ১০ দফার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। সেই সঙ্গে তাদের মতে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিএনপি যেসব কর্মসূচি দেবে, তাতেও এলডিপির পূর্ণ সমর্থন থাকবে বলেও তারা জানিয়েছেন। 

অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ১২ শরিক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন জোট গড়ার ঘোষণা দিয়েছে গত বছরের ২২ ডিসেম্বরে।  নতুন এই ‘১২ দলীয় জোট’ গড়ার ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার। নতুন এই জোটে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ছাড়াও রয়েছে কল্যাণ পার্টি, লেবার পার্টি, জাতীয় দল, বাংলাদেশ এলডিপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল-জাগপা (তাসমিয়া প্রধান), এনডিপি, এলডিপি (সেলিম), মুসলিম লীগ, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি এবং সাম্যবাদী দল।

অন্যদিকে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ’জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ গত মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ১১টি দল নিয়ে নতুন এই জোট গঠিত হয়েছে। এই দলগুলো আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ও নতুন জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এ ঘোষণা দেন। নতুন জোটে থাকা দলগুলো হলো ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, জাগপা (খন্দকার লুৎফুর), ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), বাংলাদেশ ন্যাপ, বিকল্প ধারা (নুরুল আমিন), সাম্যবাদী দল, গণদল, ন্যাপ-ভাসানী, ইসলামী ঐক্যজোট, পিপলস লীগ ও বাংলাদেশ সংখ্যালঘু জনতা পার্টি। তবে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে জামায়াত পিছুটান দিয়েছে রহস্যজনক কারণে। 

বাম গণতান্ত্রিক জোটও আছে তাদের মতো করে..

এদিকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ সরকারকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে এদের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে সংসদ ভেঙে দিতে দাবি জানিয়ে আসছে। এরা এর বদলে তারা তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে সরকারের কাছে। এর পাশাপাশি তারা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতেও  মাঠে আন্দালন করে যাচ্ছে, একের পর এক কর্মসূচি দিচ্ছে। জোটের ভাষায় বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, ভোট ডাকাতির সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পুনরায় মূলবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, দুর্নীতি-অপচয় ও টাকা পাচার বন্ধের দাবিতে দেশব্যাপী  সমাবেশ করে যাচ্ছে। গত রোববারও সমাবেশ করেছে এসব দাবি জোটটি। বাম জোটে আছে সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বাসদ (মার্কসবাদী), সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি। 

আলাদাভাবে একই লক্ষ্যে সিপিবিও..

দুঃশাসন হটানো, ব্যবস্থা বদলানো, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু এবং পাচারের টাকা ও খেলাপি ঋণ উদ্ধারসহ এর সাথে জড়িতদের শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দোষীদের শাস্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারসহ নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, দেশে সাম্রাজ্যবাদী বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আগামী ১২ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি সপ্তাহব্যাপী সারা দেশে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ, পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।  কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঢাকায় ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার, বিকেল ৪টায় পুরানা পল্টন মোড়ে সমাবেশ করে। এদিকে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের উদ্যোগেও লক্ষ্য এক নিয়ে তাদের মতো করে আন্দোলন করে যাচ্ছে।

নাগরিক বিবৃতিতে সরকার বিব্রত

গত ৮ ডিসেম্বর গ্রেফতার হওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির দাবিতে গত ডিসেম্বরের বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ৬০ নাগরিক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম দেশের বিশিষ্ট এই ৬০ নাগরিকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিতে ভূমিকা রেখেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কোনো পরোয়ানা ছাড়া তার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। এখন পর্যন্ত তাকে জামিন দেয়া হয়নি। আমরা পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছি, তিনি অসুস্থ। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, মির্জা ফখরুল এদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে রাজনীতি করছেন। আমরা মির্জা ফখরুলের বন্ধু এবং শুভাকাক্সক্ষীরা তার সুস্থতার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা দেশকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী ও বেগবান করার জন্য মির্জা আলমগীরের মুক্তি দাবি করছি- বিবৃতিতে যোগ করা হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এধরনের বিবৃতিতে সরকারের বিভিন্ন মহলে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক ইমেজকে অনেক উন্নত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এর পাশাপাশি সম্মানিত হয়েছে দল হিসেবে বিএনপিও। এতে করে দেশ-বিদেশে সরকার তার রাজনৈতিক ইমেজ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বিশেষ করে লেখক ও শিক্ষক বদরুদ্দীন উমর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ (অব.), বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ কামাল (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান (অব.), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ (অব.), এআইটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এটিএম নূরুল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সদরুল আমীন (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দীন খানসহ  এধরনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে এভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতার মুক্তি দাবি বিরল। গণমাধ্যমে লেখা হয়েছে এভাবে যে মির্জা ফখরুলের মতো একজন নম্র ও ভদ্র নেতা মারামারি ও ভাঙচুর করছেন এবং সেটাও করেছেন ছদ্মবেশ ধারণ করে বা গোপনে-গল্পের নাটক আরো শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। না হলে পাঠক ও দর্শকরা এসব নাটক দেখে মজা পান না।  বলা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক নেতার জন্য বুদ্ধিজীবীদের এ ধরনের বিবৃতি আমাদের দেশে একেবারেই বিরল এক উদাহরণ। এটা শুধু বিরলই না। একদম নতুন রাজনৈতিক আচরণও বটে। মির্জা ফখরুলের জন্য ৬০ জনের বিবৃতিটা কিছুটা ব্যতিক্রম এ কারণে যে, সাধারণত রাজনৈতিক দলঘেঁষা বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিককর্মীরা নিজদলের নেতা-কর্মীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে থাকেন। মির্জা ফখরুলের জন্য যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের অনেকেই বিপরীত রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। অনেকের আবার রাজনীতির সঙ্গে একেবারেই সংযোগ নেই। এ কারণেই বিবৃতিটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া বিভিন্ন ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। এমন বিরল ঘটনায় আওয়ামী এই বিবৃতি ভালোভাবে নেয়নি। আর এমন বিবৃতি দেখে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একেবারে শীর্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে বিএনপি কূটনৈতিক ও ডান-বাম সবাইকে মাঠে নামিয়েছে। এমন বিবৃতিতে দলটির চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণও আছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। এতে করে আওয়ামী লীগকে ক্রমশ একঘরে করার ইঙ্গিত দিচ্ছে রাজনীতিতে।  

শেষ কথা...

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও এর পাশাপাশি বিভিন্ন জোট ও দল।  বিভাগীয় শহরে সমাবেশ শেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করে বিএনপি। এর পরে করে গণমিছিল। এর পরে ১১ জানুয়ারি গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করে। ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সেদিন বেলা ১১টায় বিইআরসির সামনে এ প্রতিবাদী বিক্ষোভ সমাবেশ করে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ১৫ জানুয়ারি বাম জোটের বিক্ষোভ করে। সব মিলিয়ে সবদলই সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নেমেছে। এধরনের আন্দোলনে প্রধান দল বিএনপি সমমনা দলগুলোকে নিয়ে অহিংস পথেই যুগপৎ আন্দোলন  করে যাচ্ছে। পদযাত্রা থেকে আবারো বিভাগীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এমনই আভাস দিয়ে বলেছেন, তাঁরা সরকারের উসকানিতে পা দেবেন না। বরং গণমানুষকে সম্পৃক্ত করে, অহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা সরকার পতনের আন্দোলন এগিয়ে নেবেন। ফলে সরকার পড়েছে বেকায়দায়। না পারছে তারা বিএনপির কর্মসূচিতে প্রশাসনিকভাবে ঠেকাতে। না পারছে রাজনৈতিকভাবে ঠেকাতে। আবার দেশ-বিদেশে বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-হানাহানি, গাড়ি-ভাঙচুরের মতো অভিযোগ দিতে পারছে না। ফলে সরকার রয়েছে মহাবিপদে, দুশ্চিন্তায় ও অস্থিরতায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের বির্ভিন্ন পর্যায়ে আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তা যে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অঙ্গনে কি একঘরে হয়ে যাচ্ছে?

শেয়ার করুন