১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০১:৫৫:০৪ অপরাহ্ন


জয়তু! বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি।
বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি সাত বছরে তিন মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন
দেশ রিপোর্ট:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০২-২০২৩
বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি সাত বছরে তিন মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির প্রথম ভবন


 বর্তমানে প্রবাসে যত আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে তার মধ্যে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি অন্যতম। যদিও এই সংগঠনেও এক সময় দ্বিধা-বিভক্তি ছিলো। মামলা মোকদ্দমা ছিলো। নেতৃত্বের গুণে তারা সেগুলো ওভারকাম করে বর্তমানে আদর্শিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই সংগঠনকে এখন অনুকরণীয় সংগঠন বলা যায়। প্রবাসের যে কোনো আঞ্চলিক সংগঠন এই সংগঠনকে ফলো করতে পারে। মূলত ২০১৫ সাল থেকেই এই সংগঠনের নেতৃত্ব পরিবর্তনের সাথে সাথেই সংগঠনটিও উন্নয়নের অনেক নজির স্থাপন করেছে। যোগ্য এবং সৎ নেতৃত্ব যে একটি সংগঠনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির দিকে তাকলেই হয়। ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই সংগঠন প্রায় তিন মিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে দুটো ভবন এবং ওয়াশিংটন


বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির দ্বিতীয় ভবন

মেমোরিয়ালে প্রায় চারশ কবর ক্রয়। ছাড়াও নিজ এলাকার মৃত ব্যক্তি এবং দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা। দুটো ভবনের মূল্য পরিশোধ করার পরও এখনো সংগঠনের ফান্ডে রয়েছে প্রায় লাখ ডলারের মতো। নেতৃত্বের জ্যোতিতে উদ্ভাসিত এখন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি। বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি নোয়াখালীবাসীর জন্য একটি গর্বিত প্রতিষ্ঠানে রূপ লাভ করেছে।


বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির কার্যক্রম

দুর্দিনে দুঃসময়ে বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর পাশে দাঁড়ানো প্রত্যয় নিয়ে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠান করা হয় এই সংগঠন। প্রথমে নাম ছিলো গ্রেটার নোয়াখালী ওয়েলফেয়ার সমিতি। ২০০৩ সালে এই সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটি ইউএসএ।


বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির দায়িত্বে যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন সালামত উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ ছিলেন নজির ভান্ডারি। তখনই ব্রুকলিনের ১১৮ বেভার্লি রোড- ফ্যামিলি ভবন ক্রয় করা হয়। এই ভবন নেয়া হয়েছিলো কোষাধ্যক্ষ নজির ভান্ডারির নামে। এই ভবনের ঋণ পরিশোধ করা হয় যখন সভাপতি ছিলেন হাজি মফিজুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নূরুল আমিন। এই সময় ভবনের লিজ দেয়া হয় মরহুম হাজি ওবায়দুল হককে, ভবন লিনে চলে যায় এবং চাঁদা তুলে লিন এবং ভবনের মূল্য পরিশোধ করা হয়। ২০০৫ সালের নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন হাজি ওবায়দুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাজু মিয়া। এই সময় সংগঠনে বিরোধের জন্ম। কার্যকরি কমিটিও বিভক্ত হয়ে পড়ে। হাজি ওবায়দুল হক ভাড়া বন্ধ করে দেন এবং ভবন দখল করে রাখেন। ২০১১ সালের নির্বাচনে লাল সফি সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তাজু মিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। হাজি ওবায়দুল হকের বিরুদ্ধে কমিটির হয়ে নজির ভান্ডারি মামলা দায়ের করেন। ২০২৩ সালে মামলার রয়ে হাজি ওবায়দুল হক হেরে যান। অর্থ করচ করে ভবনের কনস্ট্রাকশনের কাজ করা হয়। ২০১৪ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন আব্দুর রব মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জাহিদ মিন্টু।


বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির কার্যক্রম

এরপর থেকেই বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটিতে উন্নয়নের জোয়ার বইতে থাকে। সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ছিলেন সব উন্নয়নের রূপকার এবং বাস্তবায়নে প্রধান সেনাপতির মিকা পালন করে জাহিদ মিন্টুসহ কার্যকরি কমিটির সব সদস্য, একই সঙ্গে ট্রাস্টি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। রূপকার পরিবর্তন হয়ে অভিভ হন নাজমুল হাসান মানিক। তিনি সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সাধারণ সম্পদকের দায়িত্বে ছিলেন জাহিদ মিন্টু। ২০২০ সালে মে মাসে ৫০৫ ব্রকলিনে ছয় ফ্যামিলির বাড়ি ক্রয় করা হয়। এই বাড়িতে নাম ছিলো সভাপতি নাজমুল হাসান মানিকের। এই বাড়ির মূল্য ছিলো এক মিলিয়ন, ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ডলার। ক্লোজিং কস্টসহ ছয় লাখ ৫০ হাজার ডলার পেমেন্ট করা হয়। ঋণ থাকে লাখ ৪০ হাজার ডলার। এই অর্থ তিন কিস্তিতে পেমেন্ট করা হয়। যার পরিমাণ লাখ ৬৪ হাজার ডলার। গত ২৮ জানুয়ারি সর্বশেষ পেমেন্ট করা হয়। এরই মধ্যে হাফ মিলিয়ন দিয়ে ওয়াশিংটন মেমোরিয়ালে চারশ কবর ক্রয় করা হয়। যার মধ্যে একশ কবর বিক্রি করা হয়েছে। অন্যদিকে মৃত ব্যক্তিদেরও দেওয়া হয়েছে। বর্তমান প্রায় আড়াইশো কবর রয়েছে। এই কবরের অর্থও পরিশোধ করে দেয়া হয়। জানা গেছে, বর্তমানে এই দুটো ভবন থেকে প্রায় মাসে ১৫ হাজার ডলারের ওপরে আয় হচ্ছে।

একটি সংগঠনের ভবন থেকে যদি মাসে ১৫ হাজার ডলারের ওপরে আয় থাকে- সেই সংগঠনের আর কী লাগে। এজন্য ধন্যবাদ এবং প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য নোয়াখালী সোসাইটির কার্যকরি, উপদেষ্টা পরিষদ, ট্রাস্টি বোর্ড এবং সাধারণ নোয়াখালীবাসী। যেভাবে আয় হচ্ছে, তাতে প্রবাসে যে কোনো উন্নয়নমূলক কর্মকাÐ করতে নোয়াখালী সোসাইটি পিছটা হবে না। তাদের পক্ষে অসম্ভব বলে আর কিছু নেই। বৃহত্তর নোয়াখালীবাসী জন্য এর চেয়ে আর বড় প্রাপ্তি কী পারে। নেতৃত্ব এবং সততা যে সব কিছুকে পাল্টে দিতে পারে সেটার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি। এর ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখতে হবে। সঠিক নেতৃত্ব বেচে নিতে হবে। জয়তু! বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি।

শেয়ার করুন