২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০১:৫৫:০৮ পূর্বাহ্ন


জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন মামলা ও বিভক্তির পথে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০২-২০২৩
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন মামলা ও বিভক্তির পথে


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন। নবনির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই জালালাবাদ ভবন নিয়ে চরম অচলাবাস্থার সৃষ্টি হয়। এই অচলাবস্থার মূল কারণ হচ্ছে ইগো। নিয়ে বর্তমানে চলছে চরম বিরোধ। এই বিষয়টি এখন টক অব দ্য কমিউনিটি। যারা ভবন ক্রয় করেছেন এবং জালালাবাদবাসীর ৩৮ বছরের স্বপ্ন পূরণ করেছেন তারা যেন বিপদে পড়েছেন। তাদের সরলতার সুযোগ নিয়েই খেলাধুলা শুরু করে দিয়েছেন একটি চিহ্নিত মহল। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠার পর যারা ভবনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তাদের বাড়া ভাতে যেন চাই পড়েছে। তারা জালালাবাদবাসীকে ভবন দিতে পারেননিÑসেই ব্যর্থতার দায়ভার না নিয়ে উল্টো নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন। বিদায়ী সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ এবং কোষাধ্যক্ষ বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম বিশেষ পরিস্থিতিতে এই ভবন ক্রয় করেছেন। এই ভবন ক্রয়ের পুরো দায়-দায়িত্ব ময়নুল-শেফাজ কমিটির। কিন্তু তার যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে। অনেকেই জানিয়েছেন, জালালাবাদের মোড়লদের কারণে সমঝোতা হচ্ছে না। তারাই দূর থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন। তাদের অঙ্গুলির ইশারাতেই চলছেন বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান এবং তার নেতৃত্বাধীন কমিটির একটি অংশ। যদিও অধিকাংশ জালালাবাদবাসী ভবনের পক্ষে। সাবেক সভাপতি সৈয়দ শওকত আলী সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু সেই সমঝোতা আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা সন্দেহ। কারণ সভাপতির নেতৃত্বাধীন কমিটির অংশটি চাচ্ছে না সমঝোতা হোক। হেলাল-শেফাজ এই মইনুল কৃতিত্ব নিয়ে যাক। কারণ তারা যদি সত্যিকার অর্থে জালালাবাদবাসীর পক্ষে থাকতেন, তাহলে বিরোধ না বাড়িয়ে সমঝোতার পক্ষেই থাকতেন। কিন্তু তারা তা করছেন না। উল্টো তারা যে গঠনতন্ত্রের দোহাই ভবনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করছেন, সেটাই তারা লঙ্ঘন করছেন। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদককে তারা কোনো কিছু না জানিয়ে কার্যকরি কমিটির সভা ডাকছেন, পকেট ট্রাস্টি বোর্ড করছেন।

কয়েক মাস আগে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে শোকজ নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল। যে প্যাডে শোকজ দেয়া হয় সেই প্যাডে উল্লিখিত ঠিকানায় মইনুল ইসলাম শোকজ নোটিশের জবাব পাঠিয়েছেন। বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান সেই শোকজ নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন। প্রশ্ন হলো যে, ঠিকানা প্যাডে ছিল, সেই ঠিকানা জবাব পাঠানোর পরও তা পেলে দায়িত্ব কার?

এদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হতে পারে। মইনুল ইসলামকে বহিষ্কার করলেই জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের অবস্থা হবে ত্রাহি মধুসূধন। পরিস্থিতি মোড় নিতে পারে মামলা এবং বিভক্তির দিকে। দুই ধরনের মামলা হতে পারেÑমইনুল ইসলাম তার বহিষ্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে মামলা করতে পারেন। দুই জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরি কমিটি তাদের অর্থ ফেরতের জন্য মইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। সূত্র জানায়, মইনুল ইসলামকে বহিষ্কার বা তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের আরেক পাল্টা কমিটি হবে। সেই কমিটি নতুন করে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করবে। তখন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে চলে যাবে। মামলা করলে অতীতের কর্মকাÐের বিষয়গুলো আসবে। তা থেকে কেউ মুক্তি পাবেন না। ইতিমধ্যেই বিভক্তির আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। যেটা কোনোভাবেই জালালাবাদবাসীর কাম্য নয়। তারা চায় না মামলা-মোকদ্দমা। তারা সমঝোতার মাধ্যমে ভবন চায় এবং ভবন ক্রয়ের সময় কোনো ভুলভ্রান্তি হলে তা সংশোধন চায়। এক গোঁয়াতুমি করা কোনো পক্ষের উচিত নয়। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে সভাপতি তার অংশকে সভা করছেন। আবার সভাপতি এবং তার অংশকে বাদ দিয়ে যদি সাধারণ সম্পাদক অনুষ্ঠান শুরু করেন, তাহলে কী অবস্থা দাঁড়াবে? তখন বড় প্রশ্ন দেখা দিবে জালালাবাদ তুমি কার?

শেয়ার করুন