২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৫:৩৯:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


কী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে
নির্বাচন একতরফা সমঝোতা নাকি অন্যকিছু
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২৩
নির্বাচন একতরফা সমঝোতা নাকি অন্যকিছু


দেখতে দেখতে চলে এসেছে আরেকটি জাতীয় নির্বাচন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। অনেকের ধারণা এ নির্বাচন হবে স্মরণকালের সেরা নির্বাচন। মানুষ শান্তিতে, নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন। নিজেদের প্রার্থীকে ভোটের মাধ্যমে জিতিয়ে আনতে পারবেন। ভোট কারচুপি, ডাকাতি, আগের রাতে ব্যালট বাক্সভর্তি, ক্ষমতার ব্যাবহার করে ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য ভীতিকর অবস্থা তৈরি, প্রার্থীদের মারধর, এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে বারণ, সমর্থকদের আটক, জেল-জরিমানা, হুমকি-ধমকি এর কিছুই থাকবে না। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে এগুলো ছিল। সেটা জাতীয় নির্বাচন হোক, আর স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন হোক। মানুষ সত্যিই ভোট দিতে যেতে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। ভোট এলে ক্ষমতার এমন দাপট মানুষ পছন্দ করেন না। 

আসলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র একরকম নির্বাসিত হয়ে রয়েছে। যে জন্য বিশ্ব গণতান্ত্রিক দেশসমূহকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সম্মেলন করে আসছে একের পর এক, সেখানে গণতন্ত্রের জন্য ৩০ লাখ মানুষের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ উপেক্ষিত। বাংলাদেশকে তারা আমন্ত্রণ জানাচ্ছে না। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রের বড্ড অভাব। মার্কিন প্রশাসন থেকে শুরু করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও বন্ধুপ্রতিম ও দাতা দেশসমূহের অনেকেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র মেরামতের তাগাদা দিচ্ছেন। এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য খুবই লজ্জার। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জার।  

বাংলাদেশের জনগণ কীভাবে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হানাদার এক বাহিনীকে হটিয়ে দেশ পরাধীন মুক্ত করতে পারে-সে সাহস দেখিয়েছে। কীভাবে জাত-ধর্ম বিসর্জন দিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের স্বার্থে অস্ত্র ধরে, লড়াই করে বিশ্বের বুকে বীর বাঙালি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে-সে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সে বাংলাদেশে এখন সাধারণ মানুষ নিজের অধিকারের জন্য চুপ করে বসে রয়েছেন। নিজের ভোট অন্যরা দিচ্ছেন। কথা বলছেন না। মানুষ লজ্জা-ক্ষোভে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। এ লজ্জা শুধু রাজনীতিবিদেরই নয়, ক্ষমতাপিপাসু গুটিকয়েক মানুষের। এ মানুষগুলো তারা চেনেন। কিন্তু কিছুই বলেন না। 

ঠিক এ বিষয়গুলো নিয়ে এখন পশ্চিমারা এসে তালিম দিচ্ছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। বলছেন, বাংলাদেশে সঠিক গণতন্ত্র না ফিরলে বন্ধুত্ব এমনকি সাহায্য সহযোগিতাও হ্রাস করে দেবেন। এ কথাগুলো সত্যিকার অর্থেই লজ্জার। বড় লজ্জার বিষয় হলো বীর বাঙালিকে এখন গণতন্ত্র শিখতে হচ্ছে, অধিকার লড়াইয়ের তালিম শুনতে হচ্ছে। এমন একটা পরিবেশ বাংলাদেশে তৈরি হয়ে গেছে। এটা বড্ড কষ্টের। বড্ড লজ্জার। 

কেন আমাদের মাঝে এ অনৈক্য! এ প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা। সবারই রয়েছে ক্ষমতার লোভ। ক্ষমতা ধরে রাখার লোভ। ক্ষমতায় যাওয়ার লোভ। কেউই দেশের মানুষের মনের কথা বোঝার চেষ্টা করেন না। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এক ধরনের রাজনৈতিক ব্যবসার কষাঘাতে এখন সাধারণ মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছা। কিন্তু কে শোনে কার কথা! 

বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতি মূলত দুই ধারায় বিভক্ত। দীর্ঘ তিন টার্ম ক্ষমতার মসনদে থেকে এক পক্ষ ক্ষমতার মোহে অন্ধ। অন্যপক্ষ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না যেতে পারার আক্ষেপ। তবে এটা বাস্তব, সাধারণ জনগণ ভোট দিয়ে যাকে নির্বাচিত করবেন দেশ চালাতে তারাই তো দেশ চালাবেন। কিন্তু বাংলাদেশে সেই ভোটের কালচার এখন নির্বাসিত। 

মূল লড়াই এখন ‘আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব’ এ নীতিতে ফেরানো। এক সময় আওয়ামী লীগের মুখে ছিল এ বাক্য। আওয়ামী লীগের নেতারা গর্ব করে বলতেন, আওয়ামী লীগ লড়াই করে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এখনো সে লড়াইটা আছে। তবে সে লড়াই করছে এখন বিএনপি। আওয়ামী লীগও বলেন, বলেন না এমন না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বিএনপি বিগত দুই ২০১৪ ও ২০১৮ সনের ভোটের চিত্র সামনে এনে বলছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে মানুষ ভোট দিতে পারে না। যার উদাহরণ ২০১৪ ও ২০১৮। তাই ক্ষমতাসীন দলের অধীনে কোনো নির্বাচন আর নয়। বিএনপি কোনোদিনই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। আওয়ামী লীগ বলছে এখন আইন হয়েছে। ফলে সে আইন অনুসারে নির্বাচন হবে। আর সেটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। তারাই সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবেন। 

দুই দল কেউ কারো সঙ্গে মিলছে না। দুই দলের মধ্যে কোনো সংলাপ হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। ফলে এখানে সুযোগ নিয়েছে বিদেশি দেশসমূহ। তারা সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছেন বর্তমান সরকারকে। কিন্তু বিএনপি তো বর্তমান প্রক্রিয়ায় নির্বাচনেই অংশ নেবে না। তাহলে কীভাবে সম্ভব সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্যও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কারণ বিএনপি তো দেশের প্রধান এক রাজনৈতিক দল। এমন প্রেক্ষাপটেই চলছে বিদেশিদের দেনদরবার। 

যতই সামনে চলে আসছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, ততই উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দুই পক্ষের হুমকি পাল্টা হুমকি সাধারণ মানুষ আবার একটি রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতির আলামত দেখতে পাচ্ছে। যা মোটেও কাম্য নয়। এখানে উড়ছে তৃতীয় এক শক্তির কথাও। নিরপেক্ষ কেউ যেমনটা ড. ইউনূস বা এমন অন্য কাউকে দিয়ে ড. ফখরুদ্দীন, মঈনুদ্দিনের আমলের মতো কিছু হয়ে যায় কি-না সেটাও কেউ কেউ শঙ্কা করছেন। কারণ দেশের রাজনীতিতে ঐক্য না হলে তৃতীয় দরজা দিয়ে কেউ ঢুকবেন এটাই বাস্তবতা।  

এমন প্রেক্ষাপট বিদেশিদেরও জানা! তাই তাদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। তারাও চান শান্তি-শৃঙ্খলা। দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখে যাতে এগিয়ে যায় দেশ সেটাই। তাই তো প্রতিনিয়ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সম্ভব্য সব চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে এটাও ঠিক, দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমাধান না হলে বিদেশিদেরও তো কিছুই করার থাকবে না। হয়তো তখন চলে আসতে পারে ওয়ান ইলেভেনের মতো কোনো পরিস্থিতি। যা দুই দল কেন, দেশের মানুষেরও কাম্য নয়। কিন্তু সুষ্ঠু সমাধানের জন্য অমন তৃতীয়পক্ষের আবির্ভাব ঘটে তখন তো কিছু করার থাকছে না। সেটা চায় না আবার এ দুই পক্ষ। কারণ বিগত ওয়ান ইলেভেনে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কী দুর্গতি হয়েছিল সেটা মনে করে এখনো অনেকেই শিউরে ওঠেন। শীর্ষ দুই নেত্রী-বেগম খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনাকেও জেলে যেতে হয়েছে। এটা আসলে কারো জন্য মঙ্গলজনক নয়। 

ফলে সমাধানের পথ খোঁজার দায়িত্ব দুই পক্ষেরই। কিন্তু সেটা কবে? ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসটাও যাই যাই করছে। মাঝে সাত-আট মাস। তিন মাস আগে তো নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে। কারণ ডিসেম্বর ২০২৩ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। মাঝে খুব বেশি সময় একটা নেই। ফলে সময় যত ঘনিয়ে আসছে, উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। কী হতে যাচ্ছে? কী হবে?

কেউ কেউ এমন পরিস্থিতির বিভিন্ন রকম ব্যাখ্যা করছেন। কেউ বলছেন, অবশ্যই সমাধান রয়েছে আর সেটা রাজনৈতিক ঐক্য। শেষ পর্যন্ত দুই দল ছাড় দিয়ে সমাধানে চলে যাবে। কিন্তু আসলেই কী?

এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে দুই দলকেই। কিন্তু সরকারি দলের কর্মকাণ্ড মোটেও তার কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। কারণ বিএনপি দীর্ঘদিন থেকেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে আসছে। সেগুলোতে বাধাদান করছে সরকারি দল। পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে অশান্ত পরিবেশও তৈরি করছে। এ লক্ষণ মোটেও সুখকর নয়। সঙ্গে পুরোনো স্টাইলে মামলা ধরপাকড় তো আছেই। ফলে বিএনপির ইচ্ছা থাকলেও ছাড় দিয়ে সমাঝোতার পথে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া বিএনপি তো আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবেই না সেটা বারবার বলছে। বিশেষ করে সম্প্রতি যে উপনির্বাচনগুলো হয়েছে সেখানেও সরকার দলের কর্মকাণ্ডগুলো আশ্বস্ত করতে পারেনি। উপনির্বাচন দিয়েও যদি সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস অর্জন সম্ভব না হয়, তাহলে গোটা নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে কীভাবে মানবে মানুষ। 

আওয়ামী লীগ অবশ্য সংবিধানের দোহাই দিয়ে চলছে। মুখে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি এবং নির্বাচন যথাসময়ে করবে তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেই এ সিদ্ধান্তে অটল। বিদেশিরা যে যা পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলোতেও তাদের মন নেই বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে সমাঝোতার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যদিও রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। সাধারণ মানুষ এই একটা কথার ওপর আস্থা রেখে চেয়ে রয়েছেন। রাজনীতিবিদদের যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয়-সেটা এখন সবার কাম্য।  

এদিকে বিএনপি যে কতটা তেতে রয়েছে তার একটা উদাহরণ নিম্নে দেয়া গেল। ঢাকায় পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল কঠোর সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীনদের। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘ঢাকার লোক আপনারা, আপনারা ভালো জানেন, ঘোড়াও যে হাসে জানেন তো। কখন হাসে জানেন? যখন ওই ধরনের কথা শুনতে পায়, যে বিদেশি আসছে সেখানে বলতেছেন প্রধানমন্ত্রী যে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকারের অধীনে খুব ভালো নির্বাচন হবে, সবাই অবাধে ভোট দিতে পারবে। ঘোড়াও হাসতে শুরু করেছে এই কথা শুনে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় আজকে বলতে চাই, সেই নির্বাচনে বিএনপি, বাংলাদেশের মানুষ যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিনই সেই নির্বাচন মেনে নেবে না যে নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে যাবে না, যে নির্বাচনে সে তার ভোট প্রদান করতে পারবে না। আমাদের প্রধান (প্রয়াত শফিউল আলম প্রধান) সাহেবের কথায় বলতে হয় কুত্তা মার্কা নির্বাচনে বিএনপি আর যাবে না, দেশে মানুষ যাবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সোজা কথা। অনেক ক্ষতি করেছেন আমাদের। এদেশের যে স্বপ্ন ছিল, যে আকাক্সক্ষা ছিল সবকিছুকে ভেঙে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। মাত্র তারা তাদের পরিবার, তারা তাদের লোকজনকে ফুলে-ফেঁপে কলাগাছ করে তাদেরকে বিদেশে টাকা পাচার করে দিয়ে তারা আজকে এই বাংলাদেশকে শেষ করে ফেলেছে। খুব বলেন, উন্নয়ন উন্নয়ন। উন্নয়ন কোথায়? উন্নয়ন আপনাদের সঙ্গে। সাধারণ মানুষের কাছে উন্নয়ন নেই। সাধারণ মানুষের দিকে তাঁকিয়ে দেখুন কি অবস্থা সাধারণ মানুষের?’

মির্জা ফখরুল সেখানে আরো বলেন, ‘আজকে আমাদের একটাই কথা। দুই কথা, তিন কথা, চার কথা বলে সময় নষ্ট করার দরকার নেই। এই মুহূর্তে চাই পদত্যাগ, এই মুহূর্তে চাই পদত্যাগ। পদত্যাগ করুন, দেশের মানুষকে বাঁচতে দিন। অন্যথায় দেশের মানুষই তার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মূলত একটা সন্ত্রাসী দল, আওয়ামী লীগ কোনোদিন জনগণের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে আসেনি, আওয়ামী লীগ সব সময়ই জনগণকে ভয় দেখিয়ে, ত্রাস সৃষ্টি করে একটা ত্রাসের রাজত্ব করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আজকে আবারো সেভাবে ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। একবার গেছে ২০১৪ সালে, আরেকবার গেছে ২০১৮ সালে এখন ২০২৩ সালে আবার নির্বাচনে তো আবার বলছে।’

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে রাষ্ট্রযন্ত্রের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও তাদের প্রতিহত করবে। এদিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত ‘শান্তি সমাবেশ’-এ কথা বলেন তিনি। 

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর পদযাত্রার পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আপনাদের (বিএনপি) এই আন্দোলন খেলা বাংলাদেশের মানুষ বহুদিন ধরে দেখছে। মানুষ এখন ক্লান্ত হয়ে গেছে। এই আন্দোলন খেলে এই সরকারের কিছু করার ক্ষমতা আপনাদের নেই। আপনারা কিছু করতে পারবেন না।’

বিএনপির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়ে এই নেতা বলেন, ‘তথাকথিত আন্দোলনের নামে যদি এরা (বিএনপি) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে। তারা কঠোরভাবেই তা দমন করবে। এর পাশাপাশি প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সব সময় প্রস্তুত থাকবে। যে কোনো বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করার জন্য রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের পাশে থেকে সহায়তা করবে আওয়ামী লীগ।’ 

উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফার সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে বিএনপিসহসমমনা দলগুলো গত ডিসেম্বর থেকে যুগপৎভাবে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন শুরু করে। গত দেড় মাসে তারা দেশব্যাপী গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ-সমাবেশ ও বিভাগীয় সমাবেশ, ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রার কর্মসূচি করেছে। ফলে এ কর্মসূচি তাদের এখনো শান্তিপূর্ণ হলেও এটা যদি এ ধারাতে না থাকে, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কঠোর হয়ে যায়-তখন পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে যাবে বৈকি!

শেয়ার করুন