১৬ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৩:৪৫:২৮ অপরাহ্ন


নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটির বর্ণাঢ্য ও জমজমাট অভিষেক
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০২-২০২৩
নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটির বর্ণাঢ্য ও জমজমাট অভিষেক নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন আব্দুল হাসিব মামুন


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটি ইনকের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক বর্ণাঢ্য এবং জমজমাট আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও সিলেট অঞ্চলের সব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সর্বস্তরের গোলাপগঞ্জবাসী উপস্থিত ছিলেন। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জয়া হলে পুরো অডিটোরিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। কোথাও কোনো চেয়ার খালি ছিল না। নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জবাসী প্রমাণ করেছে তাদের অনুষ্ঠান মানেই সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি। তা ছাড়া অভিষেক অনুষ্ঠানটিও ছিল চমৎকার। ছিল বর্ণিল সব আয়োজন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি ছিল উপভোগ্য। কয়েক পর্বে বিভক্ত ছিল এই অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বে ছিল নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক, দ্বিতীয় পর্বে ছিল আলোচনা এবং শেষ পর্বে ছিল প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় হৃদয়জয়ী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সংগঠনের কার্যকরি সদস্য শেখ আতিকুল ইসলামের পরিচালনায় প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের বিদায়ী সভাপতি হেলিম উদ্দিন আহমেদ এবং নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ পারভেজের পরিচালনায় দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি এবাদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ভাইস কনসাল আসিফ আহমেদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, সংগঠনের উপদেষ্টা ওয়াহিদুর রহমান মুক্তা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল হাসিব মামুন, উপদেষ্টা শেখ আক্তারুল ইসলাম, এমাদ চৌধুরী, বেলাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রহিম বাদশা, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, রেজাউল করিম, পেনসিলভানিয়া গোলাপগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি সালাউদ্দিন খান, নিউজার্সি গোলাপগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি মাসুদ রহমান, ফয়েজুর রহমান ফটিক, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আজিমুর রহমান বোরহান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিত ওমেল, সংগঠনের সহসভাপতি ফয়েজ চৌধুরী, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, শমসের আলী, সাইফুর খান হারুণ, সিলেট সদরের সভাপতি আব্দুল মালেক খান লায়েক, অন্যপক্ষের সাধারণ সম্পাদক দরুদ মিয়া রুনেল, শ্রীমঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মামুনুর রশিদ শিপু, এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিন, মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তজম্মল আলী, কুলাউড়া অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদ, বিয়ানীবাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, বালাগঞ্জ ওসমানী নগরের সাধারণ সম্পাদক কাওসার আহমদ প্রমুখ।

নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল হাসিব মামুন। তিনি বলেন, আমরা তিন জন নির্বাচন কমিশনে ছিলাম। আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় একটি প্যানেলের মনোনয়ন পেয়েছি এবং তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেছি। অভিষিক্ত কর্মকর্তারা হলেন-সভাপতি এবাদ চৌধুরী, সহসভাপতি মুক্তারুল ইসলাম, আব্দুল মুমিত চৌধুরী ওমেল, ফয়েজ আহমেদ চৌধুরী, দুদু মিয়া, সাবিরা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ পারভেজ, সহসাধারণ সম্পাদক ফয়সল আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, সাইফুল সেবুল, কোষাধ্যক্ষ মিসবাহ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনাম উদ্দিন, এমরান খন্দকার, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রেদওয়ান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক হেনাজ উদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক আকরাম চৌধুরী, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, মহিলা সম্পাদিকা দিনা চৌধুরী, সদস্য হেলিম উদ্দিন আহমেদ, শেখ আতিকুল ইসলাম, সৈয়দ সেলিম আহমেদ, মোহাম্মদ চৌধুরী সবু, রাফাত চৌধুরী, আরেফ আহমেদ চৌধুরী, নাহিদ চৌধুরী, শেখ আফিফুল ইসলাম, রেশাদ চৌধুরী, আজিজুল হক চৌধুরী, আব্দুল মুক্তাদির, মোহাম্মদ তারেখ আহমদ ও আব্দুল সত্তার দুলু।

নবনির্বাচিত সভাপতি এবাদ চৌধুরী গোলাপগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ জানান তাদের দায়িত্ব দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, আপনারা বিশ্বাসে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন আমরা সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবো এবং আপনাদের সহযোগিতায় এই সংগঠনকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় সহযোগিতা করবো। তিনি তাকে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা কামরা করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি অনুষ্ঠানকে সফল এবং সার্থক করার জন্য সবার প্রাতঃকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিদায়ী সভাপতি হেলিম উদ্দিন আহমেদ নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আমাদের প্রয়াত সভাপতি শেরওয়ান চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি এই সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতেও নতুন কমিটিকে সহযোগিতা করবো। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি বজায় রাখবো। আমাদের মধ্যে কোনো হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না।

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের কর্মকা- শুধু নিউইয়র্কে সীমাবদ্ধ থাবে না। আমরা এই সংগঠনকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চাই। সেই সঙ্গে নিজ নিজ এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমাদের কাজই হবে গোলাপগঞ্জের মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়ানো।

বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিত চৌধুরী ওমেল তার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, আমরা নিউইয়র্কে বনভোজন, পিকনিক করেছি। সেই সঙ্গে করোনার সময় গোলাপগঞ্জের মানুষের জন্য অক্সিজেন, গ্লাভস এবং মাস্ক পাঠিয়েছি। আবার বন্যার সময় প্রতিটি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বন্যাদুর্গতদের নগদ অর্থ দিয়েছি। যার সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান।

নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি ডা. মিতা চৌধুরী বলেন, আমরা করোনার সময় আমার বাবাকে হারিয়েছি। কিন্তু তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখেছি। তিনি বলেছিলেন, নিজ এলাকায় কিছু করার জন্য। আমরা ছয় বোন বাংলাদেশে নিজ এলাকায় কিছু করতে চাই। আমরা আপনাদের সহযোগিতা পেলে একটি হাসপাতাল করতে চাই।

রামিসা পারভেজ বলেন, আমার বয়স যখন নয় বছর তখন আমি আমার দাদা সিরাজ উদ্দিনকে হারিয়েছি। তিনি বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন। তার কাছ থেকেই মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছি। আমরা যারা নতুন প্রজন্ম তাদের উচিত নিজেদের শিকড়কে ভুলে না যাওয়া এবং আমার পূর্ব পূরুষরা যেখান থেকে এসেছেন সেটাই আমাদের বড় একটি পরিচয়। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলওয়াত করেন নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি আবিদ কালাম। এ ছাড়াও পরিবশন করা হয় বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী তনিমা হাদি, শাহ মাহবুব, আমানত হোসেন আমার এবং আব্দুল হামিদ ইকবাল। তাদের জনপ্রিয় পরিবেশনা অনুষ্ঠানে এক ভিন্ন পরিবেশ তৈরি করে এবং এক সময় অনুষ্ঠানে বিদায়ের সুর বেজে ওঠে।

শেয়ার করুন