২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০২:২৭:০২ অপরাহ্ন


১০৩তম জন্মবার্ষিকীতে নেতৃবৃন্দ
নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করতে হবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৩-২০২৩
নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করতে হবে ওয়াশিংটন বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস পালন


দেশের ন্যায় প্রবাসেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়েছে। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন, ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কন্স্যুলেটে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করেছে। এই সব অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে জাতির জনককে উপস্থাপন করতে হবে। তারা আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। যে কারণে তাকে সহযোগিতা করতে হবে।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস

যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গত ১৭ মার্চ ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে দূতাবাস বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। যার মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনাসভা, শিশুদের জন্য রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন।

সকালে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রদূত মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম, কাউন্সেলর (পাবলিক ডিপ্লোমেসি) আরিফা রহমান রুমা এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা উইং) মো. আব্দুল হাই মিল্টন এই বাণী পাঠ করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বাঙালি জাতির বহুল প্রত্যাশিত স্বাধীনতা অর্জনে মহান ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তার দীর্ঘ সংগ্রামের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন ১৯৭১ সালে নয় মাসব্যাপী সশস্ত্র যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে আত্মপ্রকাশ করে।

জাতীয় শিশু দিবসে রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে জাতীয় শিশু নীতি-২০১১ প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি অভিভাবকদের প্রতি দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, কৃষ্টি এবং স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর মহান আত্মত্যাগ সম্পর্কে তাদের সন্তানদের জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। রাষ্ট্রদূত ইমরান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

মিনিস্টার (প্রেস) এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেনও আলোচনায় অংশ নেন এবং স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে তার অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে সকালের অনুষ্ঠান শেষ হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে কেক কাটেন। এর পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গ্রেটার ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি শিশু-কিশোররা দেশাত্মবোধক গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। পরে রাষ্ট্রদূত ইমরান রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী জাকিয়া হাসনাত পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস এবং সড়ক পরিবহন এবং জনপথ বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী উপস্থিত ছিলেন।

তিন পর্বের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-১) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-৩) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান।

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ পালনের দ্বিতীয় পর্বের অংশ হিসেবে গত ১৮ মার্চ ২০২৩ এক উৎসবমূখর পরিবেশে, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে দিনব্যাপী শিশু-কিশোর আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে এই শিশু-কিশোর আনন্দমেলা শুরু হয়। পরবর্তীতে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় ও জাতির পিতার ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেক কাটা হয়। 

শিশু-কিশোর আনন্দমেলায় আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরেরা বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের গ্রামীন দৃশ্য ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিষয়ে শিশু-কিশোরদের জন্য বয়সভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এসব প্রতিযোগিতায় অর্ধশতাধিকেরও বেশি শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। 

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বক্তব্য প্রদান করেন এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপনে বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেন। রাষ্ট্রদূত মুহিত, তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম এবং নিপীড়িত-বঞ্চিত শোষিত মানুষের অধিকার আদায় এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও নেতৃত্বের বিষয়সমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, ‘শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। একদিন শিশুরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে’। সে ভালোবাসা থেকেই জাতিসংঘে শিশু সনদ গৃহীত হওয়ার প্রায় ১৫ বছর আগে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে জাতীয় শিশু আইন প্রণয়ন করেন এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করেন। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর  অপরিসীম স্নেহ ও ভালোবাসাকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৯৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হচ্ছে। 

রাষ্ট্রদূত মুহিত এ বছরের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’-এর ওপর আলোকপাত করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে পরবর্তীতে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদশের শিশুদের উন্নয়ন ও সমান অধিকার রক্ষায় যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং বর্তমান প্রজন্মকে স্মার্ট, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলছেন। এ সময় তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগ ও সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা একটি চলমান দর্শন এবং এই সোনার বাংলা দর্শনের ধারাবাহিকতার একটি অংশ হলো আজকের স্মার্ট বাংলাদেশ উদ্যোগ। বক্তব্যের শেষে রাষ্ট্রদূত মুহিত নতুন প্রজন্মকে, প্রবাসে থেকেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে জানা ও ধারণ করার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের গড়ে তোলায়  অবদান রাখার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত মুহিতের বক্তব্যের পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন। 

উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় আচার সম্পন্নের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। 

দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বসবাসরত শিশু-কিশোরগণ ও তাদের অভিভাবকগণ, স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবর্গ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বগণ এবং স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের সন্তান ও পরিবারের সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন এবং সার্বিক আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট

‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কনস্যুলেট নিউইয়র্কে গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্্যাপন করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ  বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। 

অনুষ্ঠানের সূচনালগ্নে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭১ ও ১৯৭৫-এর সব শহিদের আত্মার মাগফিরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

প্রধান অতিথি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসহসব আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ নেতৃত্ব ও অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির রূপরেখা বর্ণনা করেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন  অত্যাধুনিক সেবার কথা উল্লেখ করে তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে সবাইকে তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

স্বাগত বক্তব্যে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম দিবসটির  বিশেষ তাৎপর্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখপূর্বক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতির গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতার ওপর আলোকপাত করেন।  বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রাম সারা বিশ্বের মুক্তিকামী  ও শান্তিকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে বলে তিনি যোগ করেন। তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে জাতির পিতার আদর্শ ও দর্শন  ছড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস ও সংস্কৃতির  প্রসারে অবদান রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।   

দিবসটি উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে একটি  চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কণ্ঠযোদ্ধা শহিদ হাসানসহ শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। কেক কাটার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটনের একটি রেস্টুরেন্টে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের অলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সামাদ আজাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

গত ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ১২:০১ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সামাদ আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল হাসিব মামুন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দুলাল মিয়া এনাম, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক মো. সোলায়মান আলী, সদস্য সাহানারা রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী, সহসভাপতি মাসুদ সিরাজী, মো. আলমগীর, যুগ্ম-সম্পাদক নুরুল আমিন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, শিবলি সাদিক, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিনা আজাদ, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাখাওয়াত বিশ্বস, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক গাজী অহিদুজ্জামান লিটন, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ নেতা সেবুল মিয়া, রিন্টু লাল দাস, রাহিমুজ্জামান সুমন, গনেশ কৃর্তনীয়া, ইমরুল কায়েস, রুবেল হোসেন, শিবলু হোসেন, একরামুল হক সাবু, সামছুল হক, নিরলব নিতাই, শহিদ চৌধুরী, নুরুল নব্বী, রাসেল আহমদ, সাইফুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, সাবেক প্রচার সম্পাদক সাইফুল আলম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হেলাল মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জেড এ জয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর, এইচ মিয়াসহ অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন