মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা (মুনা) নিউইয়র্ক থেকে প্রচারিত এবং প্রকাশিত বাংলাদেশি বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। গত ৩ এপ্রিল মুনা সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত এই ইফতার মাহফিলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মুনার নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করেন মুনার কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুনার ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ।
ইফতার মাহফিল পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মুনার ন্যাশনাল সোশ্যাল বিভাগের পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরিফ। তিনি সাংবাদিকদের স্বাগত জানান এবং কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা নায়েব আলী।
সাংবাদিকদের মধ্যে মতবিনিময়ে অংশ নেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, এখন সময় সম্পাদক কাজী সামসুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, সাপ্তাহিক মুক্তচিন্তার সম্পাদক ফরিদ আলম, নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাগর, চ্যানেল টিটির পরিচালক শিবলী চৌধুরী কায়েস ও এমসি টিভির নিউজ এডিটর সৌরভ ইমাম। এছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল হক, দেশ পত্রিকার সম্পাদক মিজানুর রহমান, আইঅন টিভির রিমন ইসলাম, সাপ্তাহিক যুগান্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, ইনডিপেনডেন্ট টিভির যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোলায়মান, টাইম টিভির ইলিয়াস খসরু, এটিএন বাংলার কানু দত্ত, প্রথম আলোর চিফ রিপোর্টার মঞ্জুরুল হক, ইবিটির সাবেক নিউজ এডিটর মাহাথীর ফারুকী, টাইম টিভির নিউজ এডিটর ইকবাল, সাংবাদিক আলমগীর সরকার, টাইম টিভির বিশেষ প্রতিনিধি এমদাদ চৌধুরী দিপু, বাংলানিউজইউএসএডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আদনান, সাংবাদিক রিয়াজুল ইসলাম।
সাংবাদিকগণ যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী মুনার সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, মুনার কার্যক্রম আমাদের সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উজ্জীবিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা মুনার চলমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ইফতার মাহফিলে মূল বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ। সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তাদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মুনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। হারুন অর রশীদ বলেন, মুনা নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক নিবন্ধিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। মুনা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতি বিবর্জিত একটি সংগঠন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০টি স্টেটে মুনার শাখা ও সদস্য রয়েছে। বাংলাদেশি আমেরিকান নতুন প্রজন্মের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত কীভাবে রাখা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে মুনা। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মুনা ২৪টি ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্টেটে। মুনার পাঁচটি বিভাগের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। মুনার প্রধান উদ্দেশ্য হলো ইসলামি দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এজন্য আরবির পাশাপাশি, বাংলা, ইংরেজি, স্প্যানিশ ও চায়নিজ ভাষায় অনুবাদকৃত কোরআন পৌঁছে দেয়া হচ্ছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। সাম্প্রতিককালে লক্ষাধিক কোরআন বিতরণ করেছে মুনা। এছাড়া কোরআন শিক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানান মুনার প্রেসিডেন্ট। সামাজিক সেবায়ও মুনা অনন্য ভূমিকা পালন করছে বলে জানান তিনি। করোনা মহামারির সময় মুনা খাদ্য বিতরণ শুরু করে কমিউনিটিতে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির ১৭টি স্থানে মুনা প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করছে। মুনা প্রতিষ্ঠিত কোরআন একাডেমি ফর ইয়াং স্কলারস একটি বড় ধরনের কার্যক্রম। হারুন অর রশীদ ১৮ থেকে ২০ আগস্ট পেনসিলভানিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য মুনার কনভেনশনে অংশ নিতে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানান।
ইফতার মাহফিলে ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসেনসহ সংগঠনটির কয়েক জন কর্মকর্তা বক্তব্য রাখেন। মুনার ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আরমান চৌধুরী সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, মুনার ন্যাশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর, আহমদ আবু ওবায়দা, মুনা কেন্দ্রীয় মজলিশ শুরা মেম্বার এম এম মাওলা সুজন, সভাপতি, মুনা নিউইয়র্ক সাউথ জোন সভাপতি, সাফায়েত হোসেন সাফা, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ উল্লাহ, নিউইয়র্ক নর্থ জোন সভাপতি রাশেদুজ্জামান, মুনা নিউইয়র্ক জোনের সাবেক মিডিয়া পরিচালক নঈম উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সাংবাদিক মমিনুল ইসলাম মজুমদার ও নিউইয়র্ক সাউথ জোনের মিডিয়া পরিচালক আমিনুর রসুল জামসেদ।