২৮ মার্চ ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১১:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন


নিউইয়র্কে সাস্ট অ্যালামনাই’র পুনর্মিলনী ও সাধারণ সভা
এস এম হক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৫-২০২৩
নিউইয়র্কে সাস্ট অ্যালামনাই’র পুনর্মিলনী ও সাধারণ সভা পুনর্মিলনীতে বক্তব্য রাখছেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ এইচ এম বেলায়েত হোসেন


নিউইয়র্কে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘সাস্ট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব ইউএসএ ইনক’এর উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী ও সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রোববার ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। এস্টোরিয়ায় অবস্থিত জালালাবাদ ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নিউইর্য়ক ও নিউজার্সি স্টেটের বিভিন্ন পেশায় কর্মরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত প্রায় অর্ধশতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী অংশ নেন। দুপুর থেকেই থেকে নিউইর্য়কের বিভিন্ন বরো থেকে অংশগ্রহণকারীরা জালালাবাদ ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সময়ের স্মৃতিচারণসহ সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়র ও অতিথি শিক্ষকবৃন্দদের আলাপচারিতায়  মুখর  হয়ে উঠে পুরো অনুষ্ঠান। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশন করা হয় বিকালের নাস্তা। এরপর শুরু হয় মূল পর্ব। এ পর্বে ছিল পরিচিতি পর্ব, সাধারণ সভা। সাধারণ সভায় উপস্থিত প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি সিলেকশন বোর্ড গঠিত হয়। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এই সিলেকশন বোর্ড একটি ২১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী ও ৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠনে কাজ করবে ।       

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর এ এইচ এম বেলায়েত হোসেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জ্য রেখে একাডেমিক সিলেবাস তৈরি করা হয় এবং বিশ্বমানের বিভিন্ন লেখকদের বইগুলো পাঠ্যবই হিসেবে সিলেবাসে অর্ন্তভূক্ত করা হয়। এর পাশাপশি দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষকদের দ্বারা একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত শিক্ষাকে পেশাগত জীবনে শতভাগ কাজে লাগাতে সক্ষম। যার প্রতিফলন শিক্ষার্থীরা দেশের গন্ডি পেরিয়ে উন্নত বিশ্বে গড়ে তুলছেন তাদের কাংখিত ক্যারিয়ার’। 

এছাড়া আরও বক্তব্যে রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় তথা অর্থনীতি বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফরিদ আলম। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সাস্টিয়ানদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল। সাস্ট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব ইউএসএ একটি রোল মডেল হিসেবে দেখতে চাই। কারণ সাস্ট আমাদের ভালোবাসা, আবেগ ও অনুভূতি জুড়ে।  

এদিকে বর্তমানে এনওয়াইপিডির ক্রিমিনাল জাস্টিস ব্যুরোতে কর্মরত ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও পলিমার সায়েন্সের ২য় ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী লেফটেন্যান্ট সাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রোলিয়ার মত উন্নত দেশে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় সুযোগ লাভের পাশাপাশি নিউইর্য়ক পুলিশ বিভাগ, আইবিএম, গুগল, আমাজনের মত বিশ্বের নামকরা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি লাভের ক্ষেত্রে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা অন্যান্যদের তুলনায় বেশ এগিয়ে রয়েছে।

একই ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুদ আলম বলেন, সাস্টিয়ানদের মিলনমেলায় আসতে পেরে আমি খুব আনন্দিত। আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের মিলনমেলা অব্যাহত থাকবে।

এছাড়া বিশেষ অতিথিবৃন্দগণ আমেরিকায় অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রতি শাবিপ্রবিতে অধ্যয়নরত মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনুদানে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তারা বক্তব্যে ক্যাম্পাসের স্মৃতিচারণের সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে যান।

অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বেলায়েত চৌধুরী, মো. ফখরুল ইসলাম, সায়েদ জাবেদুর মুনির, আহমেদুর রহমান রণি, অসীম কুমার সরকার, আলমগীর হোসেন, মাহবুব আহমেদ মাসুম, আজহার আহমেদ, মো: মইনুল হোসেন বাবু, কাজী লিমন, মিসকাত জাহান, ফারহানা ইসলাম, দীপঙ্কর দাস দীপন, শাকির হোসেন, তাসফীক রহমান, মৌসুমী কাপালী, মো. জাবেদুল হক, মো. শফিকুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, রাজেশ মাহা, ওবাইদুর রহমান, রিয়াদুল ইসলাম, শোয়েব চৌধুরী, আতাউল গডু আসাদ, মো. সাদিকুর রহমান সুফিয়ান, টিপু, আহমেদ ফাহাদ ও প্রদীপ্তা রায় প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানের নতুন মুখ সাবেক শিক্ষার্থী শোয়েব আহমেদ চৌধুরী ও মো. লিটন সরকার অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে বলেন, সুদূর আমেরিকাতে এসে একসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের সিনিয়র-জুনিয়র ভাই, ব্যাচমেটদের সান্নিধ্য পাবো তা ছিল অনেকটা স্বপ্নের মত। এখন সবার সামনে ক্যাম্পাসের স্মৃতিচাবণ করতে পেরে নিজেকে খুব আনন্দিত মনে হচ্ছে। 

 অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রসায়ন বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী বেলায়েত চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র এবং জুনিয়র, ব্যাচমেটসহ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমাদের সাস্টিয়ান বন্ধনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাবে যা পরবর্তীতে সবাব কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে বলে আমি এই আশা ব্যক্ত করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ফরিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বেলায়েত চৌধুরী। সভা শেষে আহ্বায়ক ফরিদ আলম অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে এই ধরনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনে সাস্টিয়ানদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।

শেয়ার করুন