২৮ মার্চ ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৭:৪০:৪৭ অপরাহ্ন


আবারও ‘স্যাংশন’ আলোচনায় তোলপাড়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৫-২০২৩
আবারও ‘স্যাংশন’ আলোচনায় তোলপাড়


আবারও কী আসছে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা? এমন এক অজানা আতঙ্ক এখন বাংলাদেশে। দীর্ঘদিন থেকেই ভেসে বেড়াচ্ছিল এমন খবর। বিশেষ করে গত ১০ ডিসেম্বরের আগে বেশ সরগরম ছিল এ আলোচনা। পরে আর হয়নি। তবে ওইগুলো ছিল নিছক গুজব! আবারও পুরোনো খবর নতুন করে। এটা আগের চেয়ে আরো দৃঢ়তার আভাস ছড়িয়ে গেছে। মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি তিন দেশ-জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে এ ব্যাপারে এক অনুষ্ঠানে কথা তুলতেই আবার সরব। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৩ মে শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ৬০তম কনভেনশনে বলেন, আমি আরেকটি সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি। স্যাংশন দেওয়ার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যাদের দিয়ে (র‌্যাব) সন্ত্রাস দমন করি তাদের ওপর দেওয়া হচ্ছে স্যাংশন! আমি বলে দিয়েছি, যে দেশ স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে তাদের কাছ থেকে আমি কিছুই কিনবো না। আমি আর কী করবো! বাবা-মা-ভাইবোন সবাইকে মেরে ফেলেছে। আমার তো হারানোর কিছু নেই। আমার দেশটিকে আমি এগিয়ে নিতে চাই।

এরপর ১৫ মে প্রধানমন্ত্রী তার ওই তিন দেশ সফর শেষে দেশে ফেরা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাদেশকে যারা স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিচ্ছে তাদের সঙ্গে কেনাকাটা বন্ধ করবেন বলে বক্তব্য এসেছে। সে ক্ষেত্রে কি ভীত হওয়ার কোনো কারণ আছে?’

এর জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, ‘আমাদেরকে কী কারণে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিল?’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্ব জঙ্গিবাদে জর্জরিত, সবাই আতঙ্কগ্রস্ত। সে সময় আমাদের দেশে একটিমাত্র ঘটনা ঘটেছে হোলি আর্টিজানে। অনেকে বলছিল, এটা বাংলাদেশ একা সামাল দিতে পারবে না। কিন্তু আমাদের তো ২৪ ঘণ্টাও লাগেনি। তার মধ্যেই আমরা মানুষ জীবিতও উদ্ধার করলাম, যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের ওপরও আমরা আঘাত হানতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশে আর এ রকম বড় ঘটনা ঘটতে পারেনি। কারণ, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি ও এতোভাবে কাজ করেছে যে আর কোনো ঘটনা ঘটাতে পারেনি। যাদেরকে দিয়ে সন্ত্রাস দূর করলাম। এরপর স্যাংশনটা কিসের জন্য? সে জন্যই তো আমার প্রশ্ন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়কে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি, আমরা যে বিদেশ থেকে জিনিস ক্রয় করি, সেখানে একটি ক্লজ (ধারা) থাকবে। যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে তাদের কাছ থেকে কোনো কিছু কেনাকাটা করব না। এতে সংকটের, ভয়ের কী আছে?’ এ সময় তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন আর কারো ওপর নির্ভরশীল না-‘আমরা উৎপাদন করে সে সমস্যার সমাধান করতে পারি। সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। দেশের সাধারণ মানুষ জেনে গেছে, তাদের যেখানে যত অনাবাদি জমি, তারা চাষ করছে।’

এত দুশ্চিন্তার কী আছে এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কথা নাই বার্তা নাই, ওমনি স্যাংশনের ভয় দেখাবে। আর আমরা ভয়ে চুপ হয়ে বসে থাকবো, কেন? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। যারা আমাদেরকে সপ্তম নৌবহরের ভয় দেখিয়েছিল, সেটাও পার করে বিজয় অর্জন করেছি। এ কথা ভুললে চলবে না। এই আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে চলতে হবে। একবেলা খেয়ে থাকবো, তাতে অসুবিধা নাই।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ওই সংবাদ সম্মেলনের পর থেকেই সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, আবারও কী তাহলে মার্কিন স্যাংশন আসছে। নতুবা প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ করে এমন কথার অবতারণা ঘটালেন। প্রধানমন্ত্রী যা বলেন, ভেবেচিন্তে। ঠুনকো কোনো বিষয়ে এতোগুলো কথা তো বলার মানুষ তিনি নন। তাহলে ভেতরের ঘটনা কী? অবশ্য স্যাংশনটা এমনই একটা বিষয় এটা যে দেশ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) দেয়, এটা তারা ছাড়া সাধারণত অন্য কারোর পক্ষেই জানা সম্ভবপর নয়। তবে পূর্বাপর বিভিন্ন ঘটনায় এমন একটা সম্ভাব্য বিষয়ের আঁচ করা যায় মাত্র। এরপরও ভেতরের একটা বিষয় তো থাকেই। 

বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিক সম্প্রতি এক রিপোর্টে স্যাংশন নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে আবারও মার্কিন স্যাংশন আসতে পারে। তবে সেজন্য রয়েছে প্রস্তুতিও। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অমন স্যাংশন এলে তার বিপরীতে কীভাবে সামাল দেবে সে প্রস্তুতিটা নিয়ে রেখেছে। তবে প্রস্তুতির বিষয়টা ভিন্ন নতুন স্যাংশন আসাটাই বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। লজ্জাকর ও বড় ক্ষতির কারণ। এর আগে যে সংগঠন (র‌্যাব) ও তার সাত কর্মকর্তার ওপর স্যাংশন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেটা উঠাতে বাংলাদেশ বহু দেনদরবার করে আসছে। বহুবার মার্কিন নেতৃত্বের বিভিন্ন জনের কাছে আবেদন করেছেন, নিবেদন করেছেন যাতে ওই নিষেধাজ্ঞা তারা তুলে নেন। কিন্তু সেটা হয়নি। বরং স্যাংশন আরোপকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিমত স্যাংশন যে উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছিল সেটাতে কাজ হয়েছে। ফলে তাদের দেয়া স্যাংশন যথার্থ এবং তারা যখন মনে করবেন যে পরিস্থিতি তাদের প্রত্যাশা মোতাবেক। কেবল তখনই তারা স্যাংশান তুলে নেবেন। তার আগে নয়।  

এদিকে দেশে বিরাজমান স্যাংশন আতঙ্ক প্রসঙ্গে কথা বলছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দও। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো কারণ নেই। তিনি গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিডিয়া ব্রিফিংকালে বলেন, ‘নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। কারণ এটি অন্য একটি দেশের ওপর নির্ভর করে। যদি কোনো নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, তবে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করি শুভ বুদ্ধির জয়।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি দৈনিক পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত (স্যাংশন সংক্রান্ত) একটি প্রতিবেদনের একটি অংশকে ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ আখ্যায়িত করে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলে, এটি একটি ‘উত্তেজনামূলক উদ্দেশ্য’ নিয়ে করা হয়েছে। মিডিয়া রিপোর্টটিকে অদ্ভুত হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি খুবই অদ্ভুত ও আশ্চর্যজনক ছিল। এতে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি।’ দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আসছে, সরকার প্রস্তুত রয়েছে’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের মানহানি হয়েছে।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বক্তব্যেরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ‘নিষেধাজ্ঞা’ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে অন্যদের জন্য সতর্কবার্তা বলে মনে করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রাজনীতিবিদেরা অনেক কিছু বলেন, যাতে অন্যদের জন্য সতর্কবাণী থাকে। সেটি আক্ষরিক অর্থে কীভাবে (ব্যাখ্যা) করবেন, সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে একটা সময় অনেক বিষয় থাকে (বাট দেওয়ার আর মেনি ইস্যুজ অ্যাট টাইম), যেটি আপনাকে সতর্ক করে।’

নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশ থেকে কিছু না কেনার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী কোন প্রসঙ্গে বলেছেন, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ফেলে দেওয়ার দেশ না। আমরা এখন আর আগের মতো দরিদ্রক্লিষ্ট দেশ না, দানের ওপর থাকি না। জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব আছে। নিজেদের অবস্থান নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল পরিবেশেও আমরা বিজয়ীর জাতি। কেউ আমাদের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালেই আমরা ভড়কে যাব, এমন কিন্তু নয়। এটিই ইঙ্গিত যে বাংলাদেশ একটি বিজয়ীর জাতি।’ আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের বহু সমস্যা আছে। আমরা অতিদরিদ্র ছিলাম, সেখান থেকে উঠে এসেছি, ‘বটমলেস বাস্কেট’ ছিলাম, সেখান থেকে উঠে এসেছি। আমাদের অদম্য স্পৃহা আছে। সেটিরই প্রতিফলন হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।’   

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর 

প্রধানমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বক্তব্য প্রদানের পর গত ১৫ মে সোমবার সাংবাদিকের প্রশ্নে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এ প্রশ্নটা আমারও যে উনি কেন হঠাৎ করে এতোদিন পরে ওই স্যাংশনের ওপরে বিষোদগার করলেন। তিনিই ভালো জানেন।’ একই সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগেও কিন্তু এই স্যাংশনের কারণে রাশিয়ার জাহাজ বাংলাদেশ ফেরত দিয়েছে, নেয়নি। বাংলাদেশ কী কেনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে, এটা আমরা মোটামুটি সব জানি, তার পরিমাণ বলুন বা তার ভলিউম বলুন এটাও আমরা সব জানি। সুতরাং এটা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কেন বলেছেন, সেটা আমরা সহজেই বুঝতে পারি। তিনি বোধ হয় সম্ভবত ইরিটেডেড (বিরক্ত) হয়ে আছেন। কেন ইরিটেডেড হয়ে আছেন, সেটা আমরা ঠিক জানি না।’

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতদের পুলিশ প্রটোকল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে। এর কারণ কী হতে পারে। জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এর কারণটা উনিই (প্রধানমন্ত্রী) বলতে পারবেন, উনি এতো রেগেছেন কেন। উত্তরটা তিনিই ভালো দিতে পারবেন। তবে এটা খুব পরিষ্কার, তিনি অত্যন্ত ইরিটেডেড (বিরক্ত), রাগান্বিত হয়েছেন এবং বোধহয় সিকিউরডও ফিল করছেন না আমার কাছে মনে হয়।’ 

কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক 

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আরো নিষেধাজ্ঞা’ আসবে-এমন আশঙ্কা করছেন না আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। গত ২১ মে রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন, মিশরের সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্টকে জেলে ভরে মেরে ফেললেও দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা ঠিকঠাকভাবেই অব্যাহত রয়েছে। মিশরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি দেশটির সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়েছিলেন নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। প্রথম দিকে মিশরীয় সেনাবাহিনীর এমন তৎপরতার সমালোচনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পরবর্তীকালে শর্তসাপেক্ষে দেশটিতে সামরিক ও বেসামরিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব। বাংলাদেশের উপর যুক্তরাষ্ট্র ‘আরো নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে’-কটি জাতীয় দৈনিকের এমন খবরের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘স্যাংশনের বিষয়ে কোনো পত্রিকা হয়তো কিছু লিখতে পারে। আমার ধারণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেগুলো বলেছেন সঠিকই বলেছেন। স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কোনোদিনই কামনা করি না বা সহজভাবে নিতে পারি না।’ 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এগুলো দিয়ে কোনো লাভ হয় না, সেটি ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। ২১ মে রোববার সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে অনেকেই স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিয়ে রেখেছে; ইরানের সরকার তো পড়ে যায়নি, বহাল তবিয়তে আছে। বহু বছরের স্যাংশনেও কিউবাকে টলানো যায়নি, সরকারও পরিবর্তন হয়নি। মায়ানমারের বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে বহু স্যাংশন দেওয়া হয়েছে, সেখানকার সরকার তো পরিবর্তন হয়নি।’ হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে বহু স্যাংশন। সেগুলো অমান্য করেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং অনেকেই তাদের কাছ থেকে পণ্য আমদানি করছে। অর্থাৎ এগুলো দিয়ে আসলে লাভ হয় না।’

একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে সাংবাদিকরা দেশের ওপর ‘স্যাংশনের’ সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে পত্রিকা লিখেছে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন, আমার এ বিষয়ে কোনো কিছু জানা নেই। আরেকটি কথা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।’

হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘গত ৫১ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করে আসছে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকেও প্রশিক্ষণসহ নানা সহায়তা দিয়ে আসছে এবং সেই সহায়তা অব্যাহত আছে। আমরা মনে করি, আমাদের যারা উন্নয়ন সহযোগী, তাদের সহযোগিতায় দেশ আজ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের এক অত্যন্ত ‘প্রোফাউন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনার।’

শেয়ার করুন