আওয়ামী লীগ সরকারের দূর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা দাবী বাস্তবায়নের দাবীতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার ঢাকা জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে পুলিশের উপস্থিতিতে সরকারদলীয় লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। ওই হামলায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীকে মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। এ ছাড়াও আরো ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে।
এছাড়া বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব আবদুল্লাহ আল নোমান এর গাড়ীবহরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে ব্যাপক গাড়ী ভাংচুরসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। আওয়ামী লীগের এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এই সহিংস আক্রমণগুলি সুপরিকল্পিত, নুতনভাবে দেশব্যাপী অরাজকতা সৃষ্টির বহিঃপ্রকাশ। নির্বাচন, প্রশাসন, আইন-আদালতসহ সবকিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্যই এখন বিএনপি’র যেকোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও এই সমস্ত আক্রমণ চালানো হচ্ছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “অবৈধ সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যেতে শুরু করায় এখন মরণকামড় দিতে শুরু করেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডারদেরকে অস্ত্রসজ্জিত করে দেশব্যাপী পাড়ায়-মহল্লায় নামিয়ে দেয়া হয়েছে। বিএনপি’র কর্মসূচিতে আক্রমণে তাদের প্ররোচনা দিচ্ছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ। আর আওয়ামী হামলার শিকার হচ্ছে বিএনপি’র জাতীয় নেতৃবৃন্দ। উগ্রতা ও নির্মমতা দিয়ে তারা রক্ত ঝরাচ্ছে বিরোধী দল ও মতের ব্যক্তিদের। আর তারই মর্মান্তিক শিকার হলেন ঢাকা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।” তিনি আরো বলেন, “মৌলিক অধিকার হরণসহ ন্যুনতম চাহিদাগুলো থেকে বঞ্চিত করে জনগণকে প্রান্তিক পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছে বর্তমান সরকার। সর্বত্র তাদের ব্যর্থতার জন্য যে ধিক্কার উঠেছে সেটিকে দিকভ্রান্ত করতেই বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে রক্তাক্ত করা হচ্ছে।’’
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন,“কর্তৃত্ববাদী ও নিপীড়ক আওয়ামী সরকারের শাসনামলে দেশের মানুষকে তারা ক্রীতদাস বানাতে চাচ্ছে। এখন মানুষের জীবন-জীবিকার কোন নিরাপত্তা নেই। বেকারত্ব, কর্মসংস্থানের অভাবে যখন লাখ লাখ মানুষ দিশেহারা, আশা-আকাঙ্খা ও বেঁচে থাকার স্বপ্ন যখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছে তখন দেশের মানুষকে ভয় ও শঙ্কার মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে দেশ শাসন করতে চাই বর্তমান অবৈধ সরকার। কিন্তু যুগে যুগে কোন স্বৈরশাসকরাই নিজেদের অবৈধ শাসনকে টিকিয়ে রাখতে পারেনি। গণতান্ত্রিক শক্তির উত্থানে স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে দেশে-দেশে। বাংলাদেশেও স্বৈরাচারী শাসকের পতন অত্যাসন্ন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি অবিলম্বে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের গাড়ীবহরে হামলাসহ ঢাকা জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে আয়োজিত আজকের সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কাপুরুষোচিত ও নগ্ন হামলার ঘটনায় হামলাকারী দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহবান জানাচ্ছি। গুরুতর আহত নিপুন রায় চৌধুরীসহ আহত নেতাকর্মীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।”
