২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১১:৩৮:২৭ পূর্বাহ্ন


ঈদ ফ্যাশন বেল-পেপলোন-প্যাটেল ও ব্রেসলেট ড্রেস
বাংলাদেশি বিপণিবিতানে চলছে বিশেষ সেল
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৪-২০২২
বাংলাদেশি বিপণিবিতানে চলছে বিশেষ সেল পীরান ফ্যাশনে ঈদের পোশাক


চাঁদ দেখাসাপেক্ষ আগামী ১ অথবা ২ মে নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। ঈদুল ফিতর মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মসজিদগুলোতে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আর বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস এবং ওজনপার্কের বাংলাদেশি বিপণিবিতানগুলো ঈদ পোশাকে সাজানো হচ্ছে। গত এক বছর বিপণিবিতানের মালিকরা কোনো ব্যবসা করতে পারেননি। বলা যায়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসার মধ্যে ছিল পোশাক ব্যবসা। ঈদুল ফিতর থেকে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। যে কারণে এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে তারা লেটেস্ট ফ্যাশনের পোশাকে দোকান সাজিয়েছেন।

বাংলাদেশি মালিকাধীন বিপণিবিতানগুলোর মালিকদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, বোম্বে, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে তারা লেটেস্ট ফ্যাশনের পোশাক এনেছেন। এর মধ্যে নামকরা এবং নামীদামি ডিজাইনাররা রয়েছেন। করোনা ছাড়াও পোশাক ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যায় রয়েছেন। কারণ এখন অনেকেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে এবং বাসার মধ্য থেকে ব্যবসা করছেন। পোশাক মালিকরা বলেন, আমাদের অনেক খরচ কিন্তু তাদের তেমন খরচ নেই। তারপরও মানুষ বিপণিবিতানগুলোতে আসেন। কারণ বিপণিবিতানগুলোতেই লেটেস্ট ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যায় এবং তাদের জবাবদিহিতা রয়েছে। তারাই প্রকৃত ডিজাইনারদের পোশাক অর্থ দিয়ে নিয়ে আসেন। অনেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত ঈদ জমে ওঠেনি। তবে ক্রেতারা বাজারে আসতে শুরু করেছেন। তারা বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য নেই বললেই চলে।

জ্যাকসন হাইটসের পীরান ফ্যাশনের মালিক মোহাম্মদ আলম নমি জানিয়েছেন, এবারের ঈদ ফ্যাশন হচ্ছে, সারারা এবং গারারার বেল ড্রেস, পেপলোন ড্রেস, প্যাটেল ফ্যাশন (টিউলিপ), ব্রেসলেট ড্রেস, প্লাজা শ্যুট, লংকামিজ, লেহেঙ্গা চাল এবং শাড়ির মধ্যে রয়েছে কাঞ্জি বোরান, সাদোয়াঙ্গ, রাজপুত শাড়ি, শিপন শাড়ি, চাঁদনি সিল্ক শাড়ি, চেকার সিল্ক শাড়ি, নট শাড়ি। এ ছাড়াও রয়েছে হাল ফ্যাশনের পায়জামা-পাঞ্জাবি, ছোটদের পায়জামা-পাঞ্জাবি এবং নানারকমের গহনা। দেশ-এরর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লেটেস্ট ফ্যাশনের পোশাক একমাত্র আমাদের পীরান ফ্যাশনেই রয়েছে। গত সপ্তাহে এই পোশাকগুলো এসেছে। নতুন ফ্যাশনের পোশাক দিয়েই দোকান সাজানো হয়েছে। মূল্য কেমন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন ফ্যাশনের পোশাকের মধ্যে ৩শ ডলার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৭শ ডলারের পোশাক রয়েছে। তিনি আরো জানান, ঈদ উপলক্ষে আইটেম অনুযায়ী বিশেষ সেল দেয়া হয়েছে।

জ্যাকসন হাইটসের স্মৃতি ফ্যাশনে মাহবুবুর রহমান টুকু বলেন, ঈদ বাজার এখনো পুরোপুরি জমেনি। তবে ঈদ ফ্যাশনের মধ্যে রয়েছে সারারা এবং গারারার বেল ড্রেস, পেপলোন ড্রেস, প্যাটেল ফ্যাশন (টিউলিপ), ব্রেসলেট ড্রেস, প্লাজা শ্যুট, লংকামিজ, লেহেঙ্গা চাল এবং শাড়ির মধ্যে রয়েছে কাঞ্জি বোরান, সাদোয়াঙ্গ, রাজপুত শাড়ি, শিপন শাড়ি, চাঁদনী সিল্ক শাড়ি, চেকার সিল্ক শাড়ি, নট শাড়ি।

জ্যামাইকার ১৬৯-২০ হিলসাইডের দ্বিতীয়তলায় মানহা’স কোজেটি চলছে ঈদের বিশেষ সেল। ডিজাইনার আরিফা হক বৈশাখী জানান, তিনি বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামি ডিজাইনারের পোশাকের পাশাপাশি গ্রাহকের চাহিদামতো নিজস্ব ডিজানইনের পোশাক তৈরি করে বিক্রি করে থাকেন। তিনি বলেন, তার স্টোরে গেলে কোনো গ্রাহকই ফিরে যাবেন না। কারণ তিনি সকলের ডিমান্ড পূরণে সক্ষম, যা অন্য কোনো দোকানে নেই। তিনি আরো বলেন, ঈদ উপলক্ষে চলছে সকল পোশাকে ১০ শতাংশ ডিসকান্ট। এ ছাড়াও ২০০ ডলারের ওপরে বাজার করলে হিজাব ফ্রি। ইতিমধ্যেই মানহা’স কোজেটে ক্রেতাদের বিপুল ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

আরো কয়েকজন বিপণিবিতান মালিক জানিয়েছেন, তাদের স্টোরেও নতুন ফ্যাশনের পোশাক রয়েছে। কোনো স্টোরে ২০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ সেল চলছে। তবে সেল-নির্ভর করছে আইটেমের ওপর। তবে এবার আগুন লেগেছে স্বর্ণের দোকানগুলোতে। জ্যাকসন হাইটসের স্বর্ণের দোকানগুলোতে ব্যাপক ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। স্বর্ণের দোকানের বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি কর্মচারী জানান, স্বর্ণের দোকানে এমন ভিড় তারা গত কয়েক বছরে দেখেননি। তারা বলেন, মানুষের হাতে অর্থ আছে এবং সেই অর্থ দিয়ে তারা স্বর্ণ ক্রয় করছেন। আবার কেউ কেউ স্বর্ণের বার ক্রয় করে রেখে দিচ্ছেন। তারা আরো বলেন, স্বর্ণের দোকানগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় রয়েছে। এই ক্রেতাদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি বলে তারা জানান।

জ্যাকসন হাইটসের আইএসপিতে চলছে ঈদের বিশেষ সেল। ঈদ উপলক্ষে আইএসপিতে দেয়া হয়েছে ৪০ শতাংশ সেল। যার মধ্যে রয়েছে সকল শিল্ক শাড়ি, সকল কাশ্মিরী সেলোয়ার এবং জ্যাকেট, সেলোয়ার কামিজ, পরুষ এবং শিশুদের পায়জামা এবং পাঞ্জাবি। সেই সাথে রয়েছে জুয়েলারি সেট।

অনলাইন পরিধানের রুহুল আমিন সরকার জানান তাদের অনলাইনে ঈদের প্রচুর পোশাক রয়েছে। যে কেউ অনলাইনে গিয়ে তাদের পছন্দের ঈদ পোশাক ক্রয় করতে পারেন।

এ ছাড়াও বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন এবং অন্যান্য স্থানের বিপণিবিতানগুলোতেও ঈদের সেল চলছে।

শেয়ার করুন