১৮ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১১:৫০:৪০ পূর্বাহ্ন


দেশকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন
আন্দোলনে বাধাদানকারী নতুন ভিসানীতির কবলে পড়বে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৬-২০২৩
আন্দোলনে বাধাদানকারী নতুন ভিসানীতির কবলে পড়বে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমরা সবই করবো। এ সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন হবেই। গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। বরং এই গণতন্ত্র এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলনে যারা বাধা দেবে তারাই নতুন ভিসানীতির কবলে পড়বে।

আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকায় সাম্প্রতিক বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। এবারে তার প্রতিক্রিয়া নিয়েছেন দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

দেশ : আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বিএনপির জন্য বড় চাপ তৈরি করেছে। এই ভিসানীতির কারণে এখন আর ’নির্বাচন প্রতিহত করব’ বলার সুযোগ নেই। কেননা ভিসানীতিতে তারা বলেছে, এটি সরকারি দল, বিরোধীদল সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেউ যদি নির্বাচনে বাধা দেয় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়, তাহলে তাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে। এ ব্যাপারটি কীভাবে দেখেন?

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : এগুলি আওয়ামী লীগের চাপাবাজি। তারা ১৪ বছর ধরে যে চৌযবৃত্তি করে ক্ষমতায় আছে, এসব কর্মকাণ্ড এখন তাদের বক্তব্যেই প্রকাশ পাচ্ছে। 

দেশ : এই ভিসানীতির কারণে আপনারা বড় ধরনের আন্দোলন করতে পারবেন না। মানে সরকার পতনে বড়ো ধরনের প্রতিহত করার মতো আন্দোলন করতে পারবেন না বলা হচ্ছে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : আমরা সবই করবো। এসরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন হবেই। গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির কোনো ধরনের সর্ম্পক নেই। বরং এই গণতন্ত্র এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলনে যারা বাধা দেবে তারাই নতুন ভিসানীতির কবলে পড়বে। এগুলি নতুন ভিসানীতিতেতো লেখাই আছে। 

দেশ : আচ্ছা এই ভিসানীতি দেয়ার পর বাইরের কোন পক্ষ চাপ দিচ্ছে বিএনপিকে? যেন দলটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশ নেয়। আমেরিকা কি চাপ দিচ্ছে আপনাদেরকে আওয়ামী লীগের অধীনেই যেন আপনারা নির্বাচন অংশ নিন? 

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : অবশ্যই না। দেখেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানতো যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। এদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বিশ্বাস থাকলে তো তাদেরকেই (আওয়ামী লীগ সরকার) এটা (সুষ্ঠু নির্বাচন) আয়োজন করার ব্যাপারে আহ্বান জানাতো? তাই প্রশ্নই ওঠে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্ব জানে এই সরকারের অধীনে অতীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। সেজন্যই বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছে। আর আমরা তো দেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। 

দেশ : না মানে এখন আমেরিকার কোনো চাপ আছে কি না নির্বাচন অংশ নেওয়ার ব্যাপারে? কারণ আমেরিকা এখন বলতে পারে নতুন ভিসানীতির কারণে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে বাধ্য। তাই বিএনপি এদেরই অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। এমন চাপ বা অনুরোধ আছে কি না?

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : আমাদের ওপর চাপেরই বা কি আছে? 

দেশ : না আপনারা যেন নির্বাচনেই অংশ নেন?

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : আরে না..আমাদের ওপর জনগণেরই চাপ আছে গণতন্ত্র উদ্ধারের সংগ্রামে যেন আমরা আরো আন্দোলন-সংগ্রামকে আরো জোরদার করি। দেশে বিদেশের সংগ্রামী জনগণের চাপ আছে আমাদের ওপর।  

দেশ : না, মানে এই সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিন-এমন চাপ আছে?

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : প্রশ্নই আসে না। সারা বিশ্বই বলছে এই সরকারের অধীনে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তাই তারাই কীভাবে বলবে যে, আমরা তাদেরই অধীনে নির্বাচন অংশ নিই? এর অধীনে নির্বাচন যাওয়ার ব্যাপারে তাদের কোনো চাপ থাকবে?

দেশ : আপনি কি মনে করেন এই নতুন ভিসানীতি আওয়ামী লীগের ওপর প্রভাব ফেলেছে? তারা তো বলছেই মার্কিন নতুন ভিসানীতি নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। 

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : অবশ্যই প্রভাব পড়েছে। তারা ভয় পেয়েছে। নতুন ভিসানীতিতে সাবেক বর্তমান বিচারপতি, প্রশাসনের কর্মকর্তা, যাদের দিয়ে তারা কুকীর্তি করিয়েছে তারা তো ভয় পাবেই। যারা দেশে অন্যায় করেছে, দেশের টাকা বিদেশে সুখে থাকার জন্য পাচার করেছে, তারা তো এখন আতঙ্কেই থাকবে। কারণ এখন তো চুরির টাকা আর পাচারও করতে পারবে না। 

দেশ : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন : আপনাকেও ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে দেশ পত্রিকার পাঠকদের।

শেয়ার করুন